Sack production

বস্তা নিয়ে চিন্তায় রাজ্যগুলি, রবির জোগানেও সংশয়

খরিফে বস্তার টানাটানিতে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের ধান কেনার কাজ ধাক্কা খেতে শুরু করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

খরিফ মরসুমে রাজ্যগুলির চটের বস্তার চাহিদা ছিল ২৪ লক্ষ বেল (১ বেল মানে ৫০০টি বস্তা)। চটকলগুলির দাবি ছিল ১৪ লক্ষের বেশি দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু অভিযোগ, তারও কিছুটা বকেয়া রয়েছে। অথচ সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রকের ডাকা এক বৈঠকে রাজ্যগুলি জানাল, আসন্ন রবি মরসুমে খাদ্যশস্য ভরতে বস্তা লাগবে আরও বেশি, প্রায় ২৫ লক্ষ বেল। সূত্রের খবর, চটকলগুলির সংগঠন আইজেএমএ বৈঠকেই তড়িঘড়ি জানিয়েছে, খরিফের বকেয়া বস্তা তৈরির পরে রবির জন্য বড়জোর ১১ লক্ষ বেল দেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট মহলের আক্ষেপ, খরিফের মতো রবিতেও বড় ব্যবসা হাতছাড়া হতে চলেছে চটশিল্পের। নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষত খাদ্যপণ্য সরবরাহেও যার কিছুটা চোট লাগার আশঙ্কা।

Advertisement

খরিফে বস্তার টানাটানিতে ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের ধান কেনার কাজ ধাক্কা খেতে শুরু করেছে। সম্প্রতি আরও বেশি বস্তা চেয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছে রাজ্যের খাদ্য দফতর। যে সমস্ত চটকল বরাত মেটাতে পারছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জুট কমিশনারের অফিসকে আর্জি জানিয়েছে বেশ কিছু রাজ্য। চটকলগুলির অবশ্য দাবি, প্রথমে লকডাউনের ধাক্কা, তার পরে পরিযায়ী শ্রমিকের অভাবের পাশাপাশি কাঁচা পাটের ঘাটতি ও চড়া দাম— এই সব কারণেই বস্তা উৎপাদন মার খাচ্ছে।

যদিও বিভিন্ন সূত্রের খবর, চটকলগুলিকে তাদের চাহিদা মতো খরিফের বস্তা জোগাতে হবে বলে খাদ্য মন্ত্রকের ওই বৈঠকে ফের দাবি তুলেছে বিভিন্ন রাজ্য। জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তী জানান, বরাত পূরণে আরও সময় দেওয়ার কথাও আলোচনা হয়েছে সেখানে।

Advertisement

বৃত্তান্ত

• খাদ্যশস্য রাখতে ১০০%
ও চিনির জন্য ২০%
চটের বস্তা ব্যবহার বাধ্যতামূলক।
• বিভিন্ন রাজ্যের চাহিদা
বুঝে চটকলগুলিকে বস্তার বরাত দেয় কেন্দ্র।
• এ জন্য বছরে তাদের
খরচ হয় প্রায় ৭৫০০
কোটি টাকা।
• প্রায় সব চটকলেরই আয় এই সরকারি বরাত নির্ভর।

সমস্যা

• এ বার খরিফ শস্যের ফলন ভাল হওয়ায় মোট ২৪ লক্ষ বেল (১ বেল=৫০০ বস্তা) বস্তা চেয়েছে রাজ্যগুলি। কিন্তু চটকলগুলির একাংশের দাবি, কাঁচা পাটের জোগান কম, করোনাকালে কর্মী কম, ফলে চাহিদা মতো অত বেশি জোগানো সম্ভব নয়।
• এর জেরে খাদ্যশস্য ভরে সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছে বিভিন্ন রাজ্য।
• আয়ের সুযোগ হারাবে চটকলগুলি।
• রবি মরসুমেও বস্তার ঘাটতি বহাল থাকার আশঙ্কা।
• যে সমস্ত চটকল বরাত অনুযায়ী বস্তা দিতে পারছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জুট কমিশনারের অফিসকে আর্জি বেশ কিছু রাজ্যের। কেন্দ্রের হস্তক্ষেপও দাবি।

উল্লেখ্য, ডিসেম্বর থেকেই রবি মরসুমের জন্য বস্তা উৎপাদনের কাজ শুরু করে দিতে হয় চটকলগুলিকে। ১৫ মে-র মধ্যে তা সরবরাহ করার নিয়ম। কিন্তু এ বছর চাহিদা মতো খরিফ মরসুমের জন্য প্রয়োজনীয় বস্তাই এখনও জোগান দিয়ে উঠতে পারেনি অনেক চটকল। ফলে রবিতে ঘাটতি আরও ভয়ানক হতে পারে বলে আশঙ্কা দানা বেঁধেছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যের সংশ্লিষ্ট মহলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন