কর-সন্ত্রাসের অভিযোগ সরাসরি জানতে ‘আমাকে বলো’ অস্ত্র নির্মলারও

নিখোঁজ (পরে মৃত্যু) হয়ে যাওয়ার ঠিক আগে লেখা চিঠিতে আয়কর দফতরের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন কাফে কফি ডে-র কর্ণধার ভি জি সিদ্ধার্থ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০২:০৩
Share:

সিআইআইয়ের জাতীয় কাউন্সিলের বৈঠকে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সঙ্গে বণিকসভাটির প্রেসিডেন্ট উদয় কোটাক (ডান দিকে) এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট টি ভি নরেন্দ্রন। পিটিআই

কাটমানি থেকে শুরু করে যে কোনও অভিযোগ রাজ্যের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সরাসরি শুনতে ‘কান পেতেছেন’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডাক দিয়েছেন ‘দিদিকে বলো’। এ বার শিল্পকে আশ্বস্ত করতে কর-হেনস্থার কথা নিজে সরাসরি শিল্পপতিদের কাছে শুনতে চাইলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও। বললেন, ‘‘হেনস্থার মুখে পড়লেই আমাকে বলুন।’’ আশ্বাস দিলেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার।

Advertisement

নিখোঁজ (পরে মৃত্যু) হয়ে যাওয়ার ঠিক আগে লেখা চিঠিতে আয়কর দফতরের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন কাফে কফি ডে-র কর্ণধার ভি জি সিদ্ধার্থ। কেন্দ্রের দিকে একই তির কিরণ মজুমদার শ’, মোহনদাস পাইয়ের মতো শিল্পপতিদেরও। সারা দেশে আয়কর দফতরের ‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগের মুখেই শুক্রবার নিজে তা শোনার কথা বলেছেন নির্মলা। ভাবনা রয়েছে এ নিয়ে পোর্টাল খোলার। আজ দিল্লিতে বণিকসভা সিআইআইয়ের সঙ্গে বৈঠকে এই আশ্বাসের পরে দেশের প্রধান, এমনকি দ্বিতীয় সারির শহরে গিয়েও শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন অর্থমন্ত্রী। থাকবেন আয়কর দফতর ও ইডি-র অফিসাররা।

অর্থমন্ত্রীর এই আশ্বাসে চিঁড়ে কতটা ভিজবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। ঘরোয়া আলোচনায় শিল্পপতিরা বলছেন, রাজস্ব আদায়ের পাহাড়প্রমাণ লক্ষ্য থাকলে হেনস্থা আটকাবে কী ভাবে? অর্থমন্ত্রীকে নালিশের সুযোগের বদলে বরং ব্যবস্থা শোধরানোয় জোর চান তাঁরা। তবে তারই মধ্যে সামান্য স্বস্তি কেন্দ্র অন্তত হেনস্থার অভিযোগ শুনতে রাজি হওয়ায়।

Advertisement

শিল্পের খটকা

বাজেটে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্য বাঁধা হয়েছে, তা পূরণ করতে নাভিশ্বাস দশা অফিসারদের। তা হলে হেনস্থা কমবে কী ভাবে? সব নালিশ অর্থমন্ত্রীকেই করতে হবে কেন? ব্যবস্থা তো এমন হওয়া উচিত, যাতে অফিসাররা হেনস্থা করার সুযোগই না পান। মোদী সরকার কথা দিলেও সব সংস্থার কর্পোরেট কর এখনও ২৫% হল কই? অতি ধনীদের আয়করের উপরে বাজেটে চাপানো বাড়তি সারচার্জ লগ্নির পথে বাধা নয় কি?

অভিযোগ উঠেছে সব সংস্থার জন্য কর্পোরেট কর ২৫% না হওয়া ও অতি-ধনীদের আয়করে বাড়তি সারচার্জ বসা নিয়ে। যার ধাক্কা লেগেছে বাজারে লগ্নিকারী বিদেশি সংস্থাগুলির একাংশের উপরেও। নির্মলার আশ্বাস, কর আদায় বাড়লেই তার হার কমবে।

ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে প্রতিদিনই বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন নির্মলা। সরকারি সূত্রে খবর, ৭-১০ দিনের মধ্যে তার জন্য দাওয়াই ঘোষণা হতে পারে। ইঙ্গিত, কাজের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে পরিকাঠামোয় ব্যয় বাড়তে পারে। সুবিধা ঘোষণা হতে পারে কম দামের আবাসনের জন্য। গাড়ি শিল্পকে চাঙ্গা করতে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি বাস ইত্যাদির বড় বরাত দিতে চলেছে। ছোট-মাঝারি শিল্পকে চাঙ্গা করতে ভাবা হচ্ছে ওই সংস্থাগুলির সরকারের কাছে বকেয়া ৪৮ হাজার কোটি টাকা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার কথা। সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্ট উদয় কোটাকের আর্জি, বৃদ্ধির চাকায় গতি ফেরাতে সাহসী পদক্ষেপ করা হোক।

কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার নিয়ম না মানলে, জেলে পাঠানোর নিয়মেরও পর্যালোচনা হবে বলে আজ ফের আশ্বাস দিয়েছেন নির্মলা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন