টাকা তোলা তথ্য মিত্রের চৌহদ্দিতেও

আমজনতার কাছে সরকারি-বেসরকারি হাজারো পরিষেবা পৌঁছে দিতে বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের আওতায় কমন সার্ভিসেস সেন্টার (সিএসসি) প্রকল্প খুলেছিল কেন্দ্র। কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় উদ্যোগপতিদের। যাতে স্বনির্ভর হয়ে কর্মসংস্থান বাড়াতে পারেন তাঁরা। সেই প্রকল্প যেখানে চলে, এ রাজ্যে তা তথ্য মিত্র কেন্দ্র নামে পরিচিত।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮ ০৫:১৫
Share:

লাভ কম। তাই প্রত্যন্ত এলাকায় পা রাখে না অনেক ব্যাঙ্ক। অনেকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দিতে সব জায়গায় বিজনেস করেসপন্ডেন্টও রাখেনি। এই অবস্থায় অন্তত ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার সুবিধাটুকু এ বার গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেবে রাজ্যের তথ্য মিত্র কেন্দ্রগুলি। আধার প্রযুক্তিতে সেই সব অঞ্চলে ন্যূনতম ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু করতে চায় কেন্দ্র। সেই পরিষেবায় ভর করেই তথ্য মিত্র কেন্দ্রগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন ব্যবসার গন্ধও।

Advertisement

আমজনতার কাছে সরকারি-বেসরকারি হাজারো পরিষেবা পৌঁছে দিতে বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের আওতায় কমন সার্ভিসেস সেন্টার (সিএসসি) প্রকল্প খুলেছিল কেন্দ্র। কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় উদ্যোগপতিদের। যাতে স্বনির্ভর হয়ে কর্মসংস্থান বাড়াতে পারেন তাঁরা। সেই প্রকল্প যেখানে চলে, এ রাজ্যে তা তথ্য মিত্র কেন্দ্র নামে পরিচিত। এর আওতায় অল্প পুঁজিতেই কয়েকশো সরকারি ও বেসরকারি পরিষেবা দিয়ে কমিশন বাবদ আয় করার সুযোগ পান স্থানীয়রা।

দরজায় পরিষেবা

Advertisement

• কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৩৪৭।

• বিভিন্ন ক্ষেত্রের সরকারি সার্টিফিকেট মেলে।

• বিমা বা বিল মেটানো যায়।

এ বার আধার প্রযুক্তির সাহায্যে (আধার এনেবেল্ড পেমেন্টস সার্ভিসেস) সেখানে গিয়ে যে কোনও ব্যাঙ্কের গ্রাহক তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারবেন। পরিষেবাটির পোশাকি নাম ‘ডিজি পে’।

ডিজি পে

• ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা যাবে।

• টাকা তুললে মিলবে রসিদ।

• জানা যাবে জমার পরিমাণ।

• অ্যাকাউন্টে যুক্ত থাকতে হবে আধার।

• তবে টাকা জমা করা যাবে না।

এই প্রকল্পে রাজ্যের অধিকর্তা অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মাস কয়েক ধরে কিছু কেন্দ্রে পাইলট প্রকল্প সফল। শীঘ্রই রাজ্যের সবক’টিতে তা চালু হবে। প্রতিটি পঞ্চায়েত দফতরে একটি কেন্দ্র থাকবে। তবে আপাতত অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করা যাবে না। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, সকলের দরজায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছতে জমার সুবিধাও দিতে হবে।

সুরক্ষা

• গ্রাহকের আধার তথ্য সুরক্ষিত থাকবে বলে দাবি।

সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, খরচের তুলনায় ব্যবসা যথেষ্ট নয়, এই যুক্তিতে অনেক ব্যাঙ্ক প্রত্যন্ত জায়গায় পা রাখে না। বিজনেস করেসপন্ডেন্টের মাধ্যমে কিছু পরিষেবা মেলে ঠিকই। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। কিছু ব্যাঙ্ক আবার কয়েকটি তথ্য মিত্র কেন্দ্রে বিজনেস করেসপন্ডেন্ট রাখলেও, তা সর্বত্র পৌঁছয়নি। সব ব্যাঙ্কের গ্রাহক সেই সুবিধা নিতে পারেন না। তাদের অভিযোগ, সব মিলিয়ে সুষ্ঠু ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা নেই বলেই মাথাচাড়া দেয় ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা বা চড়া সুদের মহাজনি কারবার। কেন্দ্রের দাবি, সেই ফাঁক ভরাতে এই উদ্যোগ।

উল্লেখ্য, সিএসসি কার্যকর হয় রাজ্যের মাধ্যমে। পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্র-রাজ্য মিলে গঠিত সংস্থা (সিএসসি ই-গভর্ন্যান্স সার্ভিসেস ইন্ডিয়া) সরাসরি তথ্য মিত্র কেন্দ্রের দায়িত্বে। অরূপবাবুর দাবি, এই পরিষেবা চালু হলে সেগুলির কমিশন বাবদ আয়ের পথ খুলবে। ফলে এই ব্যবসার হাত ধরে কাজের সুযোগও বাড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন