ভাঁড়ার খালির হিড়িক সাবেক, নেট বাজারে

এত দিন নেটবাজারে ‘সেল’ বা ছাড়ের সুযোগ নিতে মূলত মোবাইল ফোন ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন সামগ্রীই ক্রেতা-বিক্রেতার নজরে থাকত। ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু হওয়ার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৭ ০৩:২৩
Share:

পণ্য-পরিষেবা করের (জিএসটি) জুজু মিলিয়ে দিল চির প্রতিদ্বন্দ্বী নেট-বাজার ও ইট-কাঠ-পাথরের বিপণির বাণিজ্যিক কৌশল।

Advertisement

জিএসটি-র নতুন কর কাঠামো চালু হয়ে গেলে পুরনো দরে কেনা জিনিসপত্রের উপর করে সুবিধা (আগের স্তর পর্যন্ত আগেই মেটানো করের টাকা ফেরত) পাওয়া কঠিন। ফলে গুদাম খালি করতে তৎপর হয়েছে অনলাইন ও প্রথাগত, দুই বাজারই। জমে থাকা পণ্য ভাঁড়ার থেকে ক্রেতাদের ঘরে তুলে দিতে অনলাইন ও অফলাইন বাজার সর্ত্রই মোটা ছাড় মিলছে। অনলাইন বাজারের ‘বিগ সেল’ ও শপিং মলের ‘মিডনাইট সেল’ একে অপরকে টেক্কা দিয়ে ক্রেতা টানতে মরিয়া। ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ ছাড় দিতে পিছপা নয় কোনও পক্ষই।

এত দিন নেটবাজারে ‘সেল’ বা ছাড়ের সুযোগ নিতে মূলত মোবাইল ফোন ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন সামগ্রীই ক্রেতা-বিক্রেতার নজরে থাকত। ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু হওয়ার কথা। তার আগে বদলে গিয়েছে সেই ছবিটা। তালিকায় ঢুকে পড়েছে পোশাক, ঘড়ি থেকে শুরু করে আসবাবপত্র। অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট থেকে শুরু করে শপ ক্লুজ – জিএসটি চালু হওয়ার আগে জমা স্টক শেষ করতে ছাড়ের কৌশল নিচ্ছে ছোট-বড়় সব সংস্থাই।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাড়তি সুবিধা, জিত রাজ্যের

প্রতি বছরই বড় মাপের ‘সেল’ দেয় অ্যামাজন ও ফ্লিপকার্ট। এ বারও অ্যামাজনের ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান সেল’ বা ফ্লিপকার্টের ‘বিগ টেন সেল’ গত মাসেই হয়েছে। তার উপরে চলতি মাসে ফের শুরু হয়েছে ছাড়ের বন্যা। মূলত পোশাক ও বিভিন্ন ‘লাইফস্টাইল’ পণ্যে দেওয়া হচ্ছে ছাড়। কারণ হিসেবে উঠে আসছে নতুন জিএসটি চালু করার জন্য কেন্দ্রের তরফে ১ জুলাইয়ের সময়সীমা মেনে এগোনো। একই পথে হেঁটে ‘মিডনাইট সেল’ দিয়েছে শহরের একটি শপিং মল। সেখানে দামি ব্র্যান্ডের জামাকাপড়, ঘড়ি, ব্যাগ ৫০ শতাংশ কম দামে কিনতে ভিড় জমিয়েছিলেন বিভিন্ন বয়সের ক্রেতা।

জিএসটি-সতর্কতা

• জমে থাকা পণ্যে করে সুবিধা মেলা কঠিন। ফলে ছাড়ে বিক্রির প্রবণতা নেট দুনিয়া, সাধারণ বিপণিতে

• তালিকায় ঢুকেছে প্রায় সব ধরনের পণ্য

• দাম বাড়ার আশঙ্কায় বাড়তি সাবধানি পোশাক, আসবাব শিল্প

জামাকাপড়ের ক্ষেত্রে পণ্য-পরিষেবা করের প্রভাব নজরে পড়ার মতো বলে দাবি অনলাইন ও অফলাইন, দুই বাজারেরই। ১,০০০ টাকার বেশি দামের পোশাকের উপর ১২ শতাংশ কর চাপবে। আর ১,০০০ টাকার কম দামি জামাকাপড়ে বসবে ৫ শতাংশ। বাড়তি দাম দেখে মুখ ফেরাতে পারেন ক্রেতারা। এই আশঙ্কায় প্রায় সব ব্র্যান্ডই মোটা ছাড় দেওয়ার পথে হাঁটছে।

আসবাবপত্রের ক্ষেত্রেও একই কৌশল নিয়েছে বিভিন্ন সংস্থা। প্লাইউডের উপর ৫ থেকে ৬ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয় এখন। জিএসটি কাঠামোয় তা ২৮ শতাংশ হবে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। তার জেরে এক লাফে কাঠের জিনিসের দাম বেড়ে যাবে বেশ খানিকটা। সেই সূত্রে কফি টেব্‌ল, দেওয়ালের শেলফ থেকে শুরু করে জুতো রাখার ক্যাবিনেট, আলমারির উপর মোটা অঙ্কের ছাড় দিচ্ছে হোম টাউন, পেপারফ্রাই, আর্বান ল্যাডারের মতো ব্র্যান্ড।

আসলে পণ্য-পরিষেবা কর জমানা শুরুর আগে ভাঁড়ার খালি করাকেই পাখির চোখ করছে বিভিন্ন সংস্থা ও বিপণি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement