অনলাইন বাজারে নজর কাড়ছে আসবাবের ব্যবসা

মোবাইল, জামা-জুতো, বই, ল্যাপটপ ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন পণ্যের ভিড়ে এত দিন নেট বাজারে তেমন পাত্তাই পায়নি আসবাবপত্র। কারণ, সামনে থেকে জিনিসগুলির খুঁটিনাটি যাচাই করে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়াই ছিল দস্তুর।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৭
Share:

অনলাইন আসবাবের ব্যবসা

মোবাইল, জামা-জুতো, বই, ল্যাপটপ ও অন্যান্য বৈদ্যুতিন পণ্যের ভিড়ে এত দিন নেট বাজারে তেমন পাত্তাই পায়নি আসবাবপত্র। কারণ, সামনে থেকে জিনিসগুলির খুঁটিনাটি যাচাই করে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়াই ছিল দস্তুর। তবে দেরিতে হলেও ভাঙতে শুরু করেছে সেই রেওয়াজ। বহু পিছন থেকে দৌড় শুরু করে এ বার অনলাইন কেনাকাটার তালিকায় দ্রুত জায়গা করে নিচ্ছে ঘরোয়া আসবাব। ৩০০ শতাংশ হারে বাড়তে থাকা বাজারে চলতি বছরেই ১,৭০০ কোটি টাকার ব্যবসা সেরে ফেলেছে নেট বাজারের এই নতুন তারকা।

Advertisement

গত কয়েক বছর ধরেই রিটেল বা খুচরো বাজারের ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন নেটে কেনাকাটার বাজারে। যানজট-ভিড় ঠেলার পরিশ্রম এড়িয়ে ল্যাপটপ বা মোবাইলের পর্দায় পছন্দের পণ্য বেছে নিতে উৎসাহী অনেকেই। বিশেষত নতুন প্রজন্ম ‘হাই-টেক’ বাজারেই বেশি স্বচ্ছন্দ। বিশেষজ্ঞ সংস্থা ফরেস্টারের সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১২ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে ৪৫০% বিক্রি বাড়িয়েছে নেট বাজার।

আসবাবপত্রের ক্ষেত্রেও সেই একই ছবি। বাড়ি সাজাতে ছুতোর মিস্ত্রির পিছনে দৌড়ে সময় নষ্ট করতে নারাজ বর্তমান প্রজন্ম। ছুটির দিনে দোকানে দোকানে ঘুরে পছন্দের আসবাব খুঁজে বার করার কাজেও তাঁদের তীব্র অনীহা। আর এই ক্রেতাদের নিশানা করেই বাজার তৈরি করছে আর্বান ল্যাডার, পেপারফ্রাই, মেবেলকার্ট, মডস্পেসের মতো অনলাইন আসবাব সংস্থা।

Advertisement

নজর টানছে আরও একটি হিসেব। আসবাবপত্রের মোট ব্যবসা যেখানে প্রায় ১৫% হারে বাড়ছে, সেখানে অনলাইনে তা বাড়ছে ৩০০% হারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী চার বছরে মোট ই-কমার্স ব্যবসার ৯% দখল করবে এই সব পণ্য। গোদরেজ ইন্টেরিও, দামরো, ডুরিয়ান, জুয়ারির মতো ব্র্যান্ডের সঙ্গে পাল্লা দিতে দ্রুত বণ্টন কেন্দ্র বাড়াচ্ছে আর্বান ল্যাডার, পেপারফ্রাই, মেবেলকার্ট।

সংস্থাগুলির দাবি, নিত্যনতুন ডিজাইন ও দামে ছাড়, এই জোড়া হাতিয়ারেই বাজিমাত করতে মাঠে নেমেছে তারা। বিশেষ করে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে গুণগত মান ও নতুন ধরনের ডিজাইন তৈরি করা যে প্রধান দুই চ্যালেঞ্জ, তা একবাক্যে বলছে সবাই।

আর্বান ল্যাডারের প্রধান রাজীব শ্রীবৎসের দাবি, গত ছ’মাসে ছাড়ের পরিমাণ কমেছে। ক্রেতারা নেট বাজারে আসবাব কিনছেন মূলত অভিনব ডিজাইনের টানেই। একই সঙ্গে বাড়তি পরিষেবা হিসেবে গৃহসজ্জার খুঁটিনাটি বিষয় ক্রেতাদের পরামর্শ দিতে পিছপা হচ্ছে না সদ্য তৈরি (স্টার্ট-আপ) সংস্থাগুলি। পেপারফ্রাই-এর অন্যতম কর্ণধার আশিস শাহের দাবি, অধিকাংশ মধ্যবিত্ত ক্রেতার পক্ষেই ‘ইনটেরিয়র ডিজাইনার’ করানোর সামর্থ্য নেই। অথচ নতুন বাড়ি সাজাতে এটা খুব জরুরি। তাই নিখরচায় তাঁর সংস্থা এই পরিষেবা দেয় বলে জানিয়েছেন শাহ।

লাফিয়ে বাড়তে থাকা এই বাজারে ভাগ বসাতে চাইছে স্ন্যাপডিল, ফ্লিপকার্ট ও অ্যামাজনের মতো ই-কমার্স সংস্থাও। যার কারণ, ব্যবসার পরিমাণ ও লভ্যাংশ। তথ্য বলছে, আসবাবপত্রের মোট ব্যবসা ৩,২০০ কোটি ডলারের। ২০২০ সালে তা দাঁড়াবে ৭,১০০ কোটিতে। এখন মোট ব্যবসার মাত্র ১০% সংগঠিত। আর সেই দশ শতাংশের এক শতাংশই নেট বাজারের দখলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন