Bank Privatization

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের ইঙ্গিত দিলেন নির্মলা? তৈরি হবে তিনটি ব্যাঙ্ক গোষ্ঠী? কেন্দ্রের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন

দেশবাসীর আমানত বেসরকারি ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়ার আগে সংসদে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা দাবি করেছে ইউএফবিইউ। আর নির্মলাকে চিঠি পাঠিয়ে তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৭:২৪
Share:

নির্মলা সীতারামন। ছবি: পিটিআই।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন, ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রায়ত্তকরণ প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। সেগুলি বেসরকারি হাতে গেলে সমাজের সকলকে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দিয়ে উন্নয়নে শামিল করা যাবে না, এই ধারণাও ভুল। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী জানান, ভারতের বড় বিশ্ব মানের ব্যাঙ্ক প্রয়োজন। এ নিয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা চলছে। এর পরেই কার্যত দুয়ে দুয়ে চার হওয়ার দাবি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলি। দাবি করে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণের কথাই বলা হচ্ছে। সম্প্রতি ওই সব ব্যাঙ্কে বিদেশিদের অংশীদারি বৃদ্ধির পথ খোলা হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিল সূত্র। তাদের প্রশ্ন, কেন্দ্রের উদ্দেশ্যটা ঠিক কী? সাধারণ মানুষের স্বার্থকে শিঁকেয় তুলে ব্যাঙ্কগুলিকে দেশি-বিদেশি সংস্থার কাছে বিক্রি করে দেওয়া? নির্মলার কথার সূত্র ধরে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে সরব হয়েছে ব্যাঙ্ক কর্মী-অফিসারদেরবিভিন্ন সংগঠন।

ব্যাঙ্ক সংযুক্তির জল্পনাও বেড়েছে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক বার্তায় (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি)। সেখানে বলা হয়েছে, ‘‘১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে মিশিয়ে তিনটি বড় ব্যাঙ্ক গোষ্ঠী তৈরির পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্র। স্টেট ব্যাঙ্ক গোষ্ঠীতে এসবিআই ছাড়াও থাকবে ব্যাঙ্ক অব মহারাষ্ট্র, ইউকো ব্যাঙ্ক, পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্ক। দ্বিতীয়টিতে কানাড়া ব্যাঙ্ক, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক, ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া। তৃতীয় গোষ্ঠী গড়া হবে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব বরোদা, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ় ব্যাঙ্ককে নিয়ে।’’ ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন আইবকের রাজ্য সম্পাদক শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তিনটি ব্যাঙ্ক গোষ্ঠী তৈরির সম্ভাবনাও আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না।’’

ব্যাঙ্ক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ ইউএফবিইউ-র আহ্বায়ক সুদীপ দত্ত এবং শুভজ্যোতির বক্তব্য, ‘‘অর্থমন্ত্রী বড় ভুল করেছেন। সাধারণ মানুষ এবং ছোট শিল্পের ঋণ পাওয়ার রাস্তা সহজ করেছে ব্যাঙ্ক রাষ্ট্রায়ত্তকরণ। সমাজের সকলকে উন্নয়নে শামিল করার কাজ তারাই করে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে শাখা খোলে, সরকারি প্রকল্প চালায়। বেসরকারি ব্যাঙ্ক মূলত বিত্তবানদের ধার দেয়।’’ এআইএনবিওএফ-এর সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাসের মতে, জনধন অ্যাকাউন্টের ৯০% রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। পরিকাঠামো উন্নয়নে তারা গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেগুলিকেই আরও মজবুত করুক কেন্দ্র। এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগরও বলেন, ‘‘কৃষি-সহ অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা ক্ষেত্রগুলিকে ঋণ দেয় রাষ্ট্রায়ত্তগুলিই।’’

দেশবাসীর আমানত বেসরকারি ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়ার আগে সংসদে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা দাবি করেছে ইউএফবিইউ। আর নির্মলাকে চিঠি পাঠিয়ে তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও মঞ্চ। তার যুগ্ম আহ্বায়ক বিশ্বরঞ্জন রায় এবং সৌম্য দত্ত বলেন, ‘‘গ্রামে ব্যাঙ্কের ৯০% শাখাই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের। দেশের মোট ব্যাঙ্ক আমানতের ৬০% তাদের হাতে। যা কার্যত জাতীয় সম্পদ। কেন্দ্র এখন তাদের ‘বন্ধু’ ব্যবসায়ীদের হাতে সেই সম্পদ তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন