কার্ড সুরক্ষায় চাই আগাম সতর্কতা

যতটা না-ঘরোয়া, তার থেকে বাজারকে অনেক বেশি সংশয়ে রেখেছে বহির্বিশ্বের কিছু খবর। পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে সংঘর্ষ ছাড়া দেশের মধ্যে এখন এমন কোনও খবর নেই, যা বাজারকে আতঙ্কে রাখতে পারে। বরং উল্টোটাই ঠিক।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৩৯
Share:

যতটা না-ঘরোয়া, তার থেকে বাজারকে অনেক বেশি সংশয়ে রেখেছে বহির্বিশ্বের কিছু খবর। পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তে সংঘর্ষ ছাড়া দেশের মধ্যে এখন এমন কোনও খবর নেই, যা বাজারকে আতঙ্কে রাখতে পারে। বরং উল্টোটাই ঠিক। দেশের ভিতরের খবরগুলি এখন মোটের উপরে বাজারের অনুকূলে। ভাল বৃষ্টি, ভাল ফসল, পণ্যমূল্যের পতন, সুদ হ্রাস, বিভিন্ন সংস্থার আশা জাগানো আর্থিক ফলাফল— সব খবরই এখন সূচককে ঠেলে আরও উপরে তুলতে বাজারকে ইন্ধন জোগাচ্ছে।

Advertisement

তবে এই পরিস্থিতি সত্ত্বেও বাদ সাধছে পশ্চিমী দুনিয়ার কিছু খবর, যা সূচককে মাঝে মাঝেই টেনে নামাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল কোন দিকে যাবে, তা যেমন ভারতীয় তথা বিশ্ব বাজারকে সংশয়ে রেখেছে, অন্য দিকে তেমন ব্রেক্সিটের সম্ভাব্য প্রভাব আতঙ্কে রেখেছে ভারতীয় বাজারকে। ডিসেম্বরে ফেড রেট আর এক দফা বাড়তে পারে, এই আশঙ্কাও মাঝে মধ্যে টেনে নামাচ্ছে সেনসেক্স ও নিফটি-কে। এই সব কারণে বারবার উঠেও সেই উত্থানকে ধরে রাখতে পারছে না এই দুই ভারতীয় সূচক।

তবে শেয়ার বাজার নয়— ভারতীয়দের ঘুম এখন কেড়ে নিয়েছে ডেবিট কার্ড সংক্রান্ত সাইবার ক্রাইম। আপনার অজান্তে আপনারই সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উধাও হয়ে যেতে পারে, এই রকম একটি খবর পেলে কে-ই বা নিশ্চিন্তে থাকতে পারে? ব্যাঙ্কগুলিও এই ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। সংক্রামিত কিছু কার্ড ব্লক করা হচ্ছে, নতুন কার্ড ইস্যু করা হচ্ছে ও বলা হচ্ছে পিন পাল্টাতে। এই ক’টি পদক্ষেপে কিন্তু এত বড় সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। গ্রাহকরা তাঁদের সুরক্ষার জন্য ব্যাঙ্কগুলির থেকে স্পষ্ট বার্তা আশা করছেন। যতক্ষণ না ব্যাঙ্কগুলি সুরক্ষা নিয়ে পূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তত দিন গ্রাহকদের কতকগুলি সতর্কতা মেনে চলা উচিত। এগুলি সঙ্গের সারণিতে জানানো হল। ইতিমধ্যে বিরাট সংখ্যক ডেবিট কার্ড ব্লক হওয়ার কারণে এবং বহু মানুষ কার্ড ব্যবহারে বিরত থাকায় কার্ডের মাধ্যমে এ বারের দেওয়ালির কেনাকাটা বেশ খানিকটা কমতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে চিন্তিত নেটে কেনাকাটার (ই-কমার্স) সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী মহল।

Advertisement

সপ্তাহ দু’য়েক হল বিভিন্ন সংস্থার ত্রৈমাসিক তথা ষাণ্মাসিক ফলাফল প্রকাশিত হতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার ফল প্রকাশ করেছে হেভিওয়েট রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ। বছরের দ্বিতীয় তিন মাসে কোম্পানির নিট লাভ ১৮.৫ শতাংশ বেড়ে পৌঁছেছে ৭৭০৪ কোটি টাকায়। এতটা মুনাফা সত্ত্বেও সংস্থার শেয়ারের বাজার দরে কোনও প্রতিফলন লক্ষ করা যায়নি। ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের পরে আকর্ষণীয় ফলাফল প্রকাশ করেছে বেসরকারি ইয়েস ব্যাঙ্কও। ২০১৬-’১৭ সালের দ্বিতীয় তিন মাসে ব্যাঙ্কের নিট মুনাফা ৩১ শতাংশ বেড়ে ছাড়িয়েছে ৮০০ কোটি টাকা। অন্যান্য ব্যাঙ্কের তুলনায় এই ব্যাঙ্কের অনুৎপাদক সম্পদের অনুপাতও বেশ কম। দেওয়ালির আগেই প্রকাশিত হবে আরও বেশ কিছু কোম্পানি ফলাফল। এই সব ফলাফল বাজারকে কিছুটা দিশা দেবে দেওয়ালির সন্ধ্যায় মুরত ট্রেডিং পর্বে। বাজারের উপর আর যা বড় প্রভাব ফেলবে, তা হল পণ্য-পরিষেবা কর বা জিএসটি-র হার। এই ব্যাপারে বাজারের তীক্ষ্ণ নজর আছে জিএসটি কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত কোন দিকে যায়, তার উপর।

প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা শেয়ার বাজারে লগ্নি করে বড় সাফল্য পাওয়া গিয়েছে গত এক বছরে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড অর্থাৎ ইটিএফ-এ লগ্নি করা হয়েছে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ৯১৪৮ কোটি টাকা। এই লগ্নির উপর আয় বা রিটার্ন মিলেছে ৯.৪৩ শতাংশ। এত ভাল রিটার্নে উৎসাহিত হয়ে পিএফ কর্তৃপক্ষ চলতি বছরে শেয়ার বাজারে ১৩,০০০ কোটি টাকা লগ্নি করবেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী বন্দারু দত্তাত্রেয়। অর্থাৎ আপনি চান বা না চান, আপনার পিএফ তহবিলের একাংশ শেয়ার বাজারে লগ্নি হচ্ছেই। এটি ভাল কি মন্দ, তা বোঝা যাবে একটু দীর্ঘ মেয়াদে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন