ভারতে পরিকাঠামো তৈরিতে বড়সড় বিদেশি পুঁজি কানাডার আর্থিক সংস্থার হাত ধরে।
কানাডার আর্থিক সংস্থা ব্রুকফিল্ড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এই প্রথম ভারতের পরিকাঠামো শিল্পে পা রেখে গ্যামন ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্টস-এর হাত থেকে রাস্তা তৈরি ও বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার ন’টি প্রকল্পের মালিকানা কিনে নিয়েছে। যেগুলির মোট মূল্য ৬৭৫০ কোটি টাকা। এই লেনদেনে গ্যামনের হাতে আসছে নগদে ৫৬৩ কোটি টাকা, যার জেরে তার ঋণের বোঝা এক ধাক্কায় কমবে ১৭১৮ কোটি। ফলে গ্যামন পরিকাঠামোয় বাড়তি অর্থ ঢেলে নতুন প্রকল্প শুরু কিংবা অসমাপ্ত প্রকল্প শেষ করার সুযোগ পাবে। গ্যামন গোষ্ঠীর সিএমডি অভিজিৎ রাজনের দাবি, ‘‘ভারতে পরিকাঠামো প্রকল্পে এটিই এক লপ্তে বৃহত্তম সম্পদ হস্তান্তর।’’
গত দু’বছর ধরেই এই পথে ঋণের ভার লাঘব করার চেষ্টা চালাচ্ছিল গ্যামন। কারণ, ধারের বোঝায় তাদের আর্থিক সঙ্কট তৈরি হচ্ছিল, যার ছাপ পড়ছিল ব্যালান্স শিটে। কিন্তু আইনি বাধায় বিদেশি সংস্থাগুলি এ ক্ষেত্রে আসতে পারছিল না। তেমন ভাবে এগিয়ে আসছিল না দেশি সংস্থাও। এ সপ্তাহেই কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার পরিকাঠামোয় বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নিকে প্রবেশাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সেই বাধা কেটেছে। তার জেরেই ব্রুকফিল্ডের এই লগ্নি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তার ওই সিদ্ধান্তে ‘বিল্ড-অপারেট-ট্রান্সফার’ পদ্ধতিতে রূপায়িত প্রকল্পের মালিকানা বিক্রির নিয়ম সরল করেছে। এ ধরনের প্রকল্প শেষ হওয়ার দু’বছরের মধ্যে সেটির ১০০% ইকুইটি বা মালিকানা আর্থিক সংস্থাকে বেচে প্রকল্প ছেড়ে বেরিয়ে আসার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। সংস্কারের লক্ষ্যে এই পদক্ষেপই ভারতের পরিকাঠামোয় বিদেশি সম্পদ সংস্থার লগ্নির দরজা খুলে দিচ্ছে।
ব্রুকফিল্ড এবং কোর ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইন্ডিয়া ফান্ড প্রাইভেট লিমিটেডের কনসোর্টিয়াম প্রকল্পগুলি কিনেছে। আন্তর্জাতিক সম্পদ পরিচালন সংস্থা ব্রুকফিল্ডের হাতে রয়েছে ২০,০০০ কোটি ডলারের সম্পদ। প্রাইভেট ইকুইটি সংস্থা কোর ইনফ্রা-র পরিচালনায় রয়েছে ভারতের কোটাক মহীন্দ্রা গোষ্ঠী।
এই লেনদেনে গ্যামনের উপদেষ্টা অ্যামবিট হোল্ডিংস বলেছে, ন’টি প্রকল্পের মধ্যে ছ’টি চালু রয়েছে, একটির সম্প্রসারণ চলছে, বাকি দু’টি নির্মীয়মাণ। প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে: সিকিম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, অন্ধ্র এক্সপ্রেসওয়ে, রাজামুন্ড্রি এক্সপ্রেসওয়ে, কোসি ব্রিজ ইনফ্রাস্ট্রাকচার, গোরক্ষপুর ইনফ্রাস্ট্রাকচার। এগুলিতে গ্যামনের ১০০% মালিকানা ছিল। মুম্বই-নাসিক এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প ও ভাইজাগ সি পোর্ট প্রকল্পের ৫০% শেয়ারও বেচে দিচ্ছে তারা।