রাজ্যে ৪,৪০০ কোটি ঢালতে চান পূর্ণেন্দু

জার্মানি থেকে লগ্নি টানতে মঙ্গলবার ফ্রাঙ্কফুর্টে শিল্প সভার আয়োজন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ অধিকারী

ফ্রাঙ্কফুর্ট শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:১৬
Share:

সৌজন্য: পূর্ণেন্দুর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফ্রাঙ্কফুর্টে।

দু’বছর আগে যখন মিৎসুবিশি কেমিক্যালের কাছ থেকে হলদিয়ার কারখানা হাতে নিচ্ছেন, তখন তা বিআইএফআরে। টানা তিন অর্থবর্ষে শূন্যের নীচে নেমেছে নিট সম্পদ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে হলদিয়ায় পিউরিফায়েড টেরিপথ্যালিক অ্যাসিডের (পিটিএ) উৎপাদন দ্বিগুণ করার কথা ঘোষণা করলেন চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর কর্ণধার পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়। সম্ভাব্য লগ্নির অঙ্ক প্রায় ৪,৪০০ কোটি টাকা।

Advertisement

জার্মানি থেকে লগ্নি টানতে মঙ্গলবার ফ্রাঙ্কফুর্টে শিল্প সভার আয়োজন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তার মঞ্চ থেকেই পূর্ণেন্দুবাবুর ঘোষণা, এই মুহূর্তে হলদিয়ায় ওই কমপ্লেক্সে বছরে ১২.৫ লক্ষ টন পিটিএ উৎপাদন হয়। কিন্তু ফি বছর চাহিদা বাড়ছে ৮-১০%। তা পূরণের পাশাপাশি রফতানি বাড়ানোর লক্ষ্যেই উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত। তিনি জানান, জমিতে ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য। সরকারি সূত্রে খবর, ৯০ একর শীঘ্রই সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হবে।

হলদিয়ার কারখানায় তৈরি পিটিএ মূলত ব্যবহার হয় পলিয়েস্টার কাপড় ও প্লাস্টিক বোতল তৈরিতে। ২০০৮ সালের বিশ্ব জোড়া মন্দার পর থেকে তা সমস্যার মুখে পড়ে। তার উপরে প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি পিটিএ উৎপাদন শুরু করে চিন। সঙ্গে দোসর শ্রমিক অসন্তোষ ও রাজ্যে প্রবেশ করের সমস্যা। ২০১৩ সালে জোটে রুগ্‌ণ সংস্থার তকমা। তার পরেই চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর সংস্থা চ্যাটার্জি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি, নিউ ইয়র্ক-কে মালিকানা হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত।

Advertisement

লগ্নি সারণি

ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭

• হলদিয়ায় লগ্নি মিৎসুবিশির। সেখানে বিদেশি সংস্থার প্রথম কারখানা। • তৈরি হল এমসিসি পিটিএ ইন্ডিয়া কর্প।

এপ্রিল, ২০০০

• প্রথম কারখানা তৈরি। • লগ্নি ১,৪৭৫ কোটি টাকা।

মার্চ, ২০১০

• দ্বিতীয় কারখানা চালু। • লগ্নি ১,৯৬২ কোটি টাকা।

২৭ জুলাই, ২০১৬

• চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর কাছে ব্যবসা বিক্রির সিদ্ধান্ত।

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

• উৎপাদন দ্বিগুণ করে ২৫ লক্ষ টন করার কথা ঘোষণা। • সম্ভাব্য লগ্নি ৪,৪০০ কোটি টাকা।

ব্যবসা

• কাঁচামাল: প্যারাক্সিলিন। • তৈরি করে: পিউরিফায়েড টেরিপথ্যালিক অ্যাসিড (পিটিএ)। • তা ব্যবহার হয় পলিয়েস্টার কাপড় ও প্লাস্টিক বোতল তৈরিতে।

প্রশ্ন ছিল, মিৎসুবিশি যেখানে লাভের মুখ দেখেনি, সেখানে চ্যাটার্জি গোষ্ঠী কল্কে পাবে কি? শিল্পমহলের বক্তব্য ছিল, সংস্থা ঋণমুক্ত হওয়ায় সুদ গুনতে হবে না। ফলে উৎপাদন খরচ কমবে। হলদিয়া পেট্রোকেমের পরে মিৎসুবিশির কারখানাও হাতে আসায় আরও বেশি পণ্য আনতে পারবে চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। এ দিন পূর্ণেন্দুবাবুর ঘোষণা সেই পূর্বাভাস কিছুটা মেলার ইঙ্গিত দিল বলেই মত অনেকের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন