কাতার এয়ারওয়েজের সিইও আকবর আল-বাকের। —ফাইল চিত্র।
দেশের ‘শত্রু’র কাছে জেট এয়ারওয়েজের অংশীদারিত্ব রয়েছে। তাই ওই বিমান সংস্থায় বিনিয়োগ করবে না কাতার এয়ারওয়েজ। মঙ্গলবার এ কথা জানালেন কাতার এয়ারওয়েজের সিইও আকবর আল-বাকের।
ঋণের ভারে ধুঁকতে থাকা জেট এয়ারওয়েজের ২৪ শতাংশ মালিকানা রয়েছে আবু ধাবির বিমান সংস্থা এতিহাদ এয়ারওয়েজের হাতে। তবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির রাজধানী আবু ধাবির সঙ্গে একেবারেই সুসম্পর্ক নেই কাতারের। বরং ২০১৭-তে বিমান, জল ও স্থলপথে কাতারের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে আমিরশাহি। আমিরশাহির সঙ্গে মিলে একই পথ ধরেছিল সৌদি আরব, মিশর এবং বাহরাইন সরকার। কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসে মদতের গুরুতর অভিযোগ এনেছিল ওই চার দেশ। যদিও সে দাবি বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে কাতার। সে বছরের জুন থেকে নিজেদের দেশে কাতার এয়ারওয়েজের সমস্ত উড়ানও নিষিদ্ধ করেছিল ওই চারটি দেশ। ফলে বিশ্বের ১৮টি জায়গায় উড়ান বন্ধ হয়ে যায় কাতার এয়ারওয়েজের। এতে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে ওই বিমান সংস্থাটি। গত বছরের ৩১ মার্চে শেষ হওয়া আর্থিক ত্রৈমাসিকে তাঁদের ক্ষতির পরিমাণ ছিল ভারতীয় মুদ্রায় ৪৭৭ কোটি ৩৪ লক্ষেরও বেশি টাকা। ওই ক্ষতি সামলাতে অভ্যন্তরীণ বাজার ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে বিনিয়োগ শুরু করে তারা। ২০১৭-তে হংকংয়ের বিমান সংস্থা ক্যাথে প্যাসিফিক-এর ১০ শতাংশ এবং চলতি মাসে চায়ানা সাদার্ন এয়ারলাইন্স কোম্পানিতে ৫ শতাংশ স্বত্ত্ব কিনে নেয় কাতার এয়ারওয়েজ।
দীর্ঘ দিন ধরে ভারতের বাজারেও পা রাখতে আগ্রহী কাতার। এ দেশে সম্পূর্ণ মালিকানাধীন বিমান সংস্থা শুরু করার ইচ্ছে রয়েছে কাতার এয়ারওয়েজের। তবে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমান নিয়মে এই মুহূর্তেই তা করা সম্ভব নয়।
(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
এ দিন মুম্বইয়ে বিমানচালনা নিয়ে আয়োজিত একটি সম্মেলনের ফাঁকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন কাতার এয়ারওয়েজের সিইও। তিনি বলেন, “এতিহাদের ২৪ শতাংশ মালিকানা না থাকলে নিশ্চয়ই জেট এয়ারওয়েজের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতাম। তবে আমাদের শত্রুপক্ষের মালিকানা রয়েছে এমন একটা বিমান সংস্থায় কী ভাবে বিনিয়োগ করব?”
দীর্ঘ দিন ধরে ভারতের বাজারেও পা রাখতে আগ্রহী কাতার। ছবি: রয়টার্স।
কাতার এবং আমিরশাহির এই টানাপড়েনে জেটের কপাল পুড়লেও ফায়দা হতে পারে তার প্রতিপক্ষ ইন্ডিগো-র। ইন্ডিগো-তে বিনিয়োগে আগেই আগ্রহ দেখিয়েছে কাতার এয়ারওয়েজ। অন্য দিকে, এতিহাদ কর্তৃপক্ষের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির দাবি, জেট এয়ারওয়েজের ঋণের বোঝা হাল্কা করতে সাহায্যের হাত বাড়াতে চায় ওই বিমান সংস্থা। ঋণের ভারে জর্জরিত জেটে নিজেদের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে এতিহাদের। তবে অন্য বিমান সংস্থায় বিনিয়োগে উৎসাহী হলেও জেট এয়ারওয়েজ নিয়ে একেবারে আগ্রহী নয় কাতার। জেটে বিনিয়োগের সম্ভাবনা পুরোপুরি খারিজ করে আকবর আল-বাকের বলেন, “আমার দেশের শত্রুর কাছে যে বিমান সংস্থার একটা বড় অংশের মালিকানা রয়েছে, সেখানে একেবারেই বিনিয়োগ করব না।”
(মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধি - অর্থনীতিরসব খবর বাংলায়পেয়ে যান আমাদেরব্যবসাবিভাগে।)