শুধু সম্পত্তি বন্ধক রেখে নয়। ছোট-মাঝারি শিল্পকে সহজে ঋণ দিতে নতুন মাপকাঠির প্রয়োজনীয়তার পক্ষে সওয়াল করলেন কেন্দ্রীয় আমলা। বাস্তব এই চাহিদার কথা মানছে ব্যাঙ্কিং শিল্পের একাংশও।
ছোট-মাঝারি শিল্পমহলের বড় অংশেরই অভিযোগ, ব্যাঙ্কের কাছে ঋণ চাইতে গিয়ে হয়রানির মুখে পড়তে হয় তাদের। যদিও ব্যাঙ্কিং শিল্পের পাল্টা প্রশ্ন, প্রকল্পটি মূল্যায়নের সময়ে ব্যবসায়িক ভাবে তা কতটা লাভজনক হবে, সে সম্পর্কে আঁচ না-পাওয়া গেলে কী ভাবেই বা ব্যাঙ্ক ঋণ দেবে সংস্থাকে?
ছোট-মাঝারি শিল্পে ঋণ সংক্রান্ত বিষয়ে শিল্পমহল ও ব্যাঙ্ককে নিয়ে সম্প্রতি ইন্ডিয়ান চেম্বারের সভায় এ প্রসঙ্গ তোলেন কেন্দ্রের ওই মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব ও ডেভেলপমেন্ট কমিশনার এস এন ত্রিপাঠী। ব্যাঙ্কগুলির যতটা ঋণ এই শিল্পকে দেওয়ার কথা, বাস্তবে তার কতটা দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে সভায় প্রশ্ন তোলেন তিনি।
‘স্টার্ট-আপ’ সংস্থার প্রসঙ্গ তুলে ত্রিপাঠীর বক্তব্য, এ ধরনের সংস্থায় অনেক ‘প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ড’-এর লগ্নিই সম্পত্তি বন্ধকের বিনিময়ে হয় না। বস্তুত, ঋণের মাপকাঠির ক্ষেত্রে ব্যবসায় নগদ জোগানের মতো নতুন ভাবনা প্রয়োজন বলেই ইঙ্গিত তাঁর। ত্রিপাঠীর মন্তব্য, সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণ দিয়েও ব্যাঙ্কের অনুৎপাদন সম্পদের সমস্যা মেটে না।
অন্য দিকে, কেন্দ্রের ‘ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ড ট্রাস্ট ফর মাইক্রো অ্যান্ড স্মল এন্টারপ্রাইজ’ প্রকল্পে বন্ধক ছাড়াই ঋণ পায় ছোট-মাঝারি সংস্থা। ত্রিপাঠীর দাবি, ‘‘এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে ১.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছি। এর মধ্যে ৪৫ হাজার কোটি শোধ হয়েছে। ফলে অনুৎপাদক সম্পদ অনেক কম।’’
ব্যবসার অঙ্কের ভিত্তিতে ঋণ দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে বলে জানান ইউবিআইয়ের জেনারেল ম্যানেজার (এমএসএমই) বিকাশ খুটওয়াদ-ও। তবে তাঁর মতে, সে ক্ষেত্রে মাপকাঠি হিসেবে সংস্থার ‘রেটিং’-এ ঋণ পাওয়ার বিষয়টিতে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘কোয়ালিটি কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ায় নথিভুক্ত সংস্থা আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে রেটিং করাতে পারবে। চাইলে উন্নতির জন্য পরামর্শও চাইতে পারবে। এ জন্য খরচ সংস্থা পিছু প্রায় ১ লক্ষ টাকা। ৯০% কেন্দ্র দেবে। বাকিটা সংস্থাকে দিতে হবে। আপাততএ জন্য ৪৯১ কোটি টাকার তহবিল তৈরি হয়েছে।’’