রঘুরাম রাজন
প্রশ্নটা একই, উত্তরটাও বদলায়নি।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন সম্প্রতি ফের জানিয়ে দিয়েছেন, ডাক পেলে তিনি দেশে ফিরতে রাজি আছেন, যেখানে কাজে লাগতে পারেন। গভর্নরের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার পরে বিদেশেই অর্থনীতি নিয়ে অধ্যাপনার কাজে বেশি ব্যস্ত থেকেছেন রাজন। কিন্তু ভারতের মাটিতে যখনই পা দিয়েছেন, প্রতিবারই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কোনও দায়িত্বে তাঁকে ফের দেখা যাবে কি না সে প্রশ্ন করেছে সংবাদমাধ্যম। আর তিনিও ওই একই উত্তর দিয়েছেন। তাঁর লেখা নতুন বই ‘দ্য থার্ড পিলার’-এর উদ্বোধনে রাজন এ দিন বলেন, ‘‘আমি যেখানে আছি, সেখানে খুব ভাল আছি। কিন্তু দেশের প্রয়োজনে আমাকে ব্যবহার করার যদি কোনও সুযোগ থাকে, আমি নিশ্চয় সেখানে থাকব।’’
সুযোগ থাকলেও, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (আইএমএফ) প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ রাজন কেন্দ্রের বিজেপি শাসিত সরকারের আমলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসেবে দ্বিতীয়বার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছিলেন। নোটবন্দি নিয়ে মোদী সরকারের সঙ্গে তাঁর মতবিরোধই এর প্রধান কারণ বলে ব্যাঙ্কিং শিল্প মহলের অনেকে মনে করেন। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোটশক্তি জিতলে তিনি অর্থমন্ত্রী হতে পারেন, ইদানিং বাজারে এমন একটা জল্পনা রয়েছে। তবে সে সব আলোচনা নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। রাজনৈতিক মহলের একটি অংশের এমনও দাবি, লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি, বিএসপি এবং টিডিপি জোট জিতলে অর্থমন্ত্রী হিসেবে রাজন তাদের প্রথম পছন্দের হবেন। মঙ্গলবারই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীও দাবি করেন, তিনি যে সব অর্থনীতিবিদের সঙ্গে ‘ন্যায়’ (ন্যূনতম আয় যোজনা) প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন, তাঁদের মধ্যে রাজনও আছেন। রাহুলের সেই দাবি বুধবার কার্যত মেনেই নিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর। এ দিনই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজন জানান, এ দেশের মানুষের সবার আগে চাকরির দরকার। সেই সুযোগই তৈরি করতে হবে বলে নিজের মত প্রকাশ করেন বর্তমানে শিকাগো বুথ স্কুলের অর্থনীতির এই অধ্যাপক। জানিয়েছেন, দেশের স্বার্থে নতুন কিছু সংস্কারের প্রয়োজন আছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর হিসেবে রাজনের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে। তার পর রাজন নিজেই আর ওই পদে থাকতে চাননি। তার কারণ জানাতে গিয়ে রাজন ওই সময় সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে তাঁর মতের মিল না-হওয়াকেই দায়ী করেছিলেন।