বরাদ্দ সত্ত্বেও বিভিন্ন প্রকল্প খাতে সেই টাকা খরচ করতে পারেনি রেল। ফেরত গিয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। তাই চলতি বছরে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ার মতো কড়া ও বেনজির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রককে। স্বভাবতই মুখ ভার রেল মন্ত্রকের। একে তো দাবি মতো টাকা পাওয়া যায়নি। তার উপর কমেছে অর্থ সাহায্যের পরিমাণও। তাই কেন্দ্রীয় সাহায্য খাতে বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানো যায় কি না, তার জন্য অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির কাছে দরবার করার কথা ভাবছেন রেলকর্তারা।
বাজেট নথিতে রেলের মূলধনী খাতে এ বছরে ১,৪৮,৫২৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ হিসেবে দেখিয়েছেন জেটলি। কেন্দ্রীয় সাহায্য হিসেবে রেল এ বছর চেয়েছিল ৬৫ হাজার কোটি। জেটলি দিয়েছেন ৫৩,০৬০ হাজার কোটি টাকা, গত বারের চেয়েও দু’হাজার কোটি টাকা কম। প্রায় প্রতিটি মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় বরাদ্দ বাড়লেও রেলের ক্ষেত্রে উল্টো হওয়ায় মাথায় হাত রেলকর্তাদের। অভ্যন্তরীণ ও অন্যান্য খাতে আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, আদৌ তা ছোঁয়া যাবে কি না, তা নিয়ে এখন থেকেই সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করেছেন রেলকর্তারা।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের বক্তব্য, এ নিয়ে তাদের কিছু করার নেই। বাজেটে প্রতিটি মন্ত্রকই বাড়তি অর্থের দাবি জানিয়ে থাকে। কিন্তু সেই মন্ত্রক আগের বছরে কত টাকা খরচ করতে পেরেছে, তার ভিত্তিতেই মন্ত্রকের আর্থিক বরাদ্দ ঠিক হয়। গত বছর বাজেটে রেলের জন্য ৫৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু পীযূষ গয়ালের মন্ত্রক খরচ করতে পেরেছে মাত্র ৪০ হাজার কোটি টাকা। এটা তার আগের বছর থেকেও কম। ২০১৬-১৭ সালে ৪৫ হাজার ২৩১ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছিল রেল। অর্থ মন্ত্রক জানাচ্ছে, খরচ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই এ বছর বরাদ্দ কমানো হয়েছে রেলের।
বাজেট বরাদ্দ কমে যাওয়ায় খরচ সামলাতে বিশ্বব্যাঙ্ক বা এলআইসি-র মতো প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্প হারে ঋণ নেওয়ার পরিমাণও এক ধাক্কায় প্রায় ২০ হাজার ৩১৪ কোটি থেকে বাড়িয়ে ২৬ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা করা হয়েছে। আশা করা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি বা পিপিপি মডেলে বিনিয়োগের পরিমাণ এ বছর বাড়বে। তাই ওই খাতে মোট ২৭ হাজার কোটি টাকা জোগাড়ের উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে রেলকে। বর্তমানে অর্থনীতির যা টালমাটাল অবস্থা, তাতে আদৌ ওই পরিমাণ বিনিয়োগ টানা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রেলকর্তারা।