প্রতীকী ছবি।
দেশের আবাসন বাজারে ফের ধাক্কা! চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (পড়ুন মে থেকে জুন) লাফিয়ে লাফিয়ে কমেছে বাড়ি ও ফ্ল্যাটের বিক্রি। কলকাতা-সহ সাতটি মেট্রো শহরে আবাসন কেনার সূচক এক লাফে নেমে গিয়েছে ২০ শতাংশ। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নামী সমীক্ষক সংস্থা। তাদের দাবি, অবস্থার উন্নতি না হলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে।
সম্প্রতি, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাড়ি ও ফ্ল্যাট বিক্রি সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে সমীক্ষক সংস্থা ‘অ্যানারক রিসার্চ’। সেখানে বলা হয়েছে, এ বছরের মে থেকে জুনের মধ্যে দেশের সাতটি শহরে ৯৬ হাজার ২৮৫টি আবাসন ইউনিট বিক্রি হয়েছে। গত বছর একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার ৩৩৫ ইউনিট। গত এপ্রিল-মে মাস জুড়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলা সংঘাতকে এর জন্য মূলত দায়ী করেছে ওই সমীক্ষক সংস্থা।
‘অ্যানারক রিসার্চ’ রিপোর্ট অনুযায়ী, গত মে থেকে জুনের মধ্যে কলকাতায় ফ্ল্যাট ও বাড়ি বিক্রি হয়েছে ৩,৫২৫ ইউনিট। কিন্তু, ২০২৪ সালের একই সময়ে বিক্রির গ্রাফ ১০ শতাংশ ঊর্ধ্বমুখী ছিল। মেট্রো শহরগুলির মধ্যে বাড়ি ও ফ্ল্যাট বিক্রির পরিমাণ চেন্নাইয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে তামিলনাড়ুর রাজধানীতে আবাসন ইউনিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫,৬৬০। অর্থাৎ, দক্ষিণী ওই শহরে বিক্রির সূচক ত্রৈমাসিক থেকে ত্রৈমাসিকের হিসাবে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ছাড়া চলতি বছরের মে থেকে জুনের মধ্যে বাড়ি ও ফ্ল্যাটের দাম এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে শীর্ষ সাতটি শহরের আবাসন শিল্পের ক্ষেত্রে বার্ষিক মূল্যবৃদ্ধির অঙ্ক ১১ শতাংশ। গত এক বছরে বাড়ি ও ফ্ল্যাটের দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে দিল্লি-এনসিআরে (ন্যাশনাল ক্যাপিটল রিজিয়ন)। সেখানে দাম বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু। দক্ষিণী শহরে নতুন বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনতে গত বছরের তুলনায় দিতে হচ্ছে ১২ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা।
বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন ‘অ্যানারক রিসার্চ’-এর অনুজ পুরী। তাঁর কথায়, ‘‘অপারেশন সিঁদুর এবং ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধের প্রভাব আবাসন শিল্পের উপর ভয়ঙ্কর ভাবে পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভূ-রাজনৈতিক সংঘাত তীব্র হওয়ায় অনেকেই নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনতে ভয় পাচ্ছেন। তবে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) রেপো রেট হ্রাস করায় সস্তা হয়েছে গৃহঋণ। আর তাই সূচক ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।’’ আগামী ত্রৈমাসিকে বাড়ি ও ফ্ল্যাট বিক্রির পরিমাণ তিন শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।