Price of Veg Thali

খাবারের থালির খরচ কমলেও সুরাহা দূর অস্ত্‌

খাদ্যপণ্যের দামের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রকাশিত হয় ক্রিসিল মার্কেট ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড অ্যানালিটিক্সের ‘রোটি রাইস রেট’ (ভাত-রুটির হার) রিপোর্ট।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

গত জুলাইয়ে দেশে নিরামিষ থালি তৈরির খরচ জুনের তুলনায় ২৮% বেড়েছিল। সমীক্ষক সংস্থা বলেছিল, এর জন্য দায়ী মূলত টোম্যাটোর আগুন দাম। অন্যান্য আনাজের দামও তখন থেকেই চড়ছে। যে কারণে অগস্টের খরচ এক বছর আগের তুলনায় ছিল ২৪% বেশি। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সেপ্টেম্বরের সমীক্ষা-রিপোর্টে দেখা গেল, থালি কিছুটা সস্তা হয়েছে। নিরামিষ রান্নার খরচ অগস্টের থেকে ১৭% কমেছে। আমিষ রান্নার ক্ষেত্রে ৯%। তবে বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা, এতে নিশ্চিন্ত হওয়ার কারণ নেই। বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম স্বস্তি দেওয়ার জায়গায় তো নামেইনি। উল্টে পুজোর মাসে দাঁড়িয়ে ফের চড়তে শুরু করেছে মূলত বৃষ্টির কারণে। আগামী দিনে কৃষির ফলন ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কাও মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। ফলে সুরাহা বহু দূরে বলেই ধারণা তাঁদের।

Advertisement

খাদ্যপণ্যের দামের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রকাশিত হয় ক্রিসিল মার্কেট ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড অ্যানালিটিক্সের ‘রোটি রাইস রেট’ (ভাত-রুটির হার) রিপোর্ট। সেখানেই দাবি, মুম্বইয়ে টোম্যাটোর দাম অগস্টের কেজিতে ১০২ টাকা থেকে কমে ৩৯ টাকা হয়েছে। লঙ্কা কমেছে ৩১%। যা রান্নার খরচ কমায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। আর একটি কারণ, গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের দাম সম্প্রতি ২০০ টাকা কমা। তবে আমজনতার পকেট যে এখনও পুড়ছে, তার ইঙ্গিত রয়েছে রিপোর্টেই। যেমন, নিরামিষ হোক বা আমিষ— আগের বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় রান্নার খরচ বিশেষ কমেনি। যে সময় খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৭.৫%। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ৯% ছুঁইছুঁই।

শুধু তা-ই নয়, রিপোর্ট বলছে, থালির খরচ গত বছরের থেকে বেশি না কমার অন্যতম কারণ গম ও পাম তেলের চড়া দাম। পেঁয়াজের খরচ গত মাসে অগস্টের চেয়ে ১২% বেড়েছে। খরিফ শস্যের ফলনে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা রয়েছে। তাই তা চড়াই থাকতে পারে। অন্য দিকে আমিষ থালি রান্নার খরচ তুলনায় কম কমেছে মুরগির মাংসের দাম প্রায় ২%-৩% বাড়ায়।

Advertisement

কলকাতার বাজারে আনাজের দাম ফের চড়েছে। বৃহস্পতিবার টোম্যাটোর কেজি ছিল ৪০ টাকা, আলু (চন্দ্রমুখী) ২৫- ৩০ টাকা, পেঁয়াজ (নাসিক) ৫০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, পটল ৫০-৬০, ভেন্ডি ৬০, লঙ্কা ১০০- ১২০ টাকা। মুরগীর মাংস (কাটা) বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকায়। পাম তেল ৯০ টাকায়।

রাজ্যে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশনের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলের দাবি, আনাজের দাম আবার চড়েছে। তা আরও বাড়তে পারে। তাঁর মতে, পুজোর মাসে দাম চড়া থাকে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে লাগাতার বৃষ্টি, পেট্রল-ডিজ়েলের দাম না কমা। ফলে নিশ্চিন্ত হওয়ার জায়গা নেই। সুরাহা এখনও অনেক দূরে।

দামে স্বস্তির দেখা মেলেনি এখনও, বলছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তও। তাঁর মতে, ‘‘প্রথমে প্রয়োজনের তুলনায় কম হয়েছিল বৃষ্টি। এখন বেশি
হচ্ছে। শীতে ফলন বাড়ার কথা। তবে
এ বছর হবে কি না, সন্দেহ. তাই দাম
কমার বিষয়টি অনিশ্চিত। তা না কমলে
দুর্ভোগ আরও বাড়বে স্বল্প আয়ের মানুষদের।’’ কেন্দ্রের অবশ্য আশ্বাস, শীতে খাদ্যপণ্যের জোগান বাড়বে। ডিসেম্বরেই মাথা নামাবে মূল্যবৃদ্ধি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন