প্রতীকী ছবি।
অনুৎপাদক সম্পদের বিপুল বোঝায় জেরবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে অক্সিজেন জোগাতে ২.১১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার মূলধন ঢালার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। যার মধ্যে ১.৩৫ লক্ষ কোটিই আসার কথা বন্ড ছেড়ে। সেই পরিকল্পনা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তো আছেই। সেই সঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু জলের মতো টাকা ঢেলে লাভ হবে না। বরং দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাঙ্কিংয়ে সমস্যা মেটাতে হাঁটতে হবে সংস্কারের পথে। নিশ্চিত করতে হবে ঋণ খেলাপ যাতে আর মাত্রাছাড়া না হয়, সেই বিষয়টিও।
বিশেষজ্ঞদের যুক্তি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের স্বাস্থ্য ফেরাতে চাই পরিচালন ব্যবস্থার সংস্কার। নইলে এই মূলধন থেকে ফের অলাভজনক প্রকল্পেই ঋণ দেওয়া হবে। ফের মাথাচাড়া দেবে অনুৎপাদক সম্পদ। তাই শীর্ষকর্তাদের বাড়তি ক্ষমতা দিতে হবে। পাশাপাশি ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণের পথেও হাঁটতে হবে। দিল্লির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফিনান্সের অর্থনীতিবিদ ইলা পট্টনায়কের মতে, স্বাধীনতা ও দায়বদ্ধতা দু’টিই দরকার।
ঋণ মাফ কিংবা এককালীন বন্দোবস্তে আসার সিদ্ধান্ত নিতে ব্যাঙ্কের শীর্ষ কর্তাদের কতটা ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে, তা দেখা জরুরি।
দীপক পারেখ, কর্ণধার, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক
পরিচালন ব্যবস্থায় এমন সংস্কার প্রয়োজন, যাতে অনুৎপাদক সম্পদ ফের মাথাচাড়া না দেয়।
বিমল জালান, প্রাক্তন গভর্নর, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নজরদার প্রতিষ্ঠান। নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ব্যর্থ হলে, তারও সংস্কার জরুরি।
ইলা পট্টনায়ক, অর্থনীতিবিদ
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ১০ লক্ষ কোটির অনুৎপাদক সম্পদের তুলনায় ২.১১ লক্ষ কোটির শেয়ার মূলধন সামান্য।
কে সি চক্রবর্তী, প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
কাজের সাফল্যের নিরিখেই মূলধন ভাগাভাগি হবে। কোন ব্যাঙ্ক কোথায় কাজ করে, কতখানি ক্ষমতা, সংযুক্তিকরণে সব দেখা হবে।
রাজীব কুমার, ব্যাঙ্ক পরিষেবা সচিব
ওয়াই ভি রেড্ডি, বিমল জালানের মতো রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর থেকে শুরু করে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান দীপক পারেখ— কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, সকলেই বলছেন সংস্কারের কথা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর কে সি চক্রবর্তী আবার সওয়াল করছেন ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের পক্ষে।
অর্থ মন্ত্রক সূত্র বলছে, সমস্যা হল রাজনীতিকরাই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে নিয়ন্ত্রণ বহাল রাখতে চান। তাঁদের পছন্দের শিল্পপতিকে ঋণ পাইয়ে দিতে গিয়ে ঋণ খেলাপের সমস্যা মাথাচাড়া দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই রেওয়াজ বন্ধ হওয়া জরুরি।