বিজ্ঞান গবেষণার তাৎপর্য এ যুগে নতুন করে বলা অর্থহীন। ইণ্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স, বেঙ্গালুরুর পরিচালন সমিতির অধ্যক্ষ, প্রখ্যাত অধ্যাপক পদ্মবিভূষণ পি রামা রাও এস.আর.এম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দিবস উপলক্ষে এক বক্তৃতায় “ম্যানহাটন প্রজেক্ট” এর উদাহরণ দিয়ে বলেন, “উন্নত প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক চিন্তা কোনও বড় পুঁজি বা সরকারের থেকে আসে না, আসে মেধার থেকে।”
অধ্যাপক রাও আরও জানান, এস আর এম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য যখন তাঁর সঙ্গে গবেষণা ও গবেষণাপত্র প্রকাশ বিষয়ে কথা বলেন তিনি চমৎকৃত বোধ করেন। কারণ, অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের গবেষণা দিবস বিরল। সেই দিক দিয়ে এই উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। তিনি জানান, এরকম আরও গবেষক এলে ভারতবর্ষ বিশ্বের গবেষণায় আরও এগিয়ে আসবে। আমেরিকার গবেষণার উন্নতির পিছনে অন্যতম কারণ উন্নত মানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা।
এই অনুষ্ঠানে আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, ডেভিস এর কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের প্রথিতযশা অধ্যাপক বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, উচ্চশিক্ষার তিনটি দিক হল, নেতৃত্বদানের ক্ষমতা, পরমতসহিষ্ণুতা এবং পাঠক্রমের বাইরেও নানা সমস্যাকে অতিক্রম করার ক্ষমতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও আচার্য টি আর পারিবেন্দর জানান, এই গবেষণা দিবস তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনন্য দিন, কারণ আর সমস্ত অনুষ্ঠান অন্যত্র দেখা গেলেও এটি যায় না। গবেষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও উঁচুতে তুলে ধরার কথা জানান তিনি। এই দিনটির উদযাপন ভারতে ও বিদেশে বহুল প্রশংসিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আর পি সত্যনারায়ণ জানান, এই দিনটির উদ্দেশ্য মূলত ছাত্রছাত্রীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে এই দিন ছাত্রছাত্রীরা তাদের কাজকর্ম ও গবেষণায় আগ্রহ দেখানোর সুযোগ পেয়ে থাকেন। তার সঙ্গে তাঁরা জানতে পারেন তাঁদের বিষয়ের বাইরেও কী কী গবেষণা চলছে।
এই গবেষণা দিবস উদযাপন শুরু হয় ২০১২ সালে এবং প্রথম বছর উদ্বোধন করেন ভারত সরকারের মুখ্য বিজ্ঞান উপদেষ্টা আর চিদম্বরম, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১২ তে। ইণ্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়ান্স অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ কিষণ লাল ছিলেন ১ মার্চ ২০১৩য় দ্বিতীয় বার্ষিকীর মুখ্য অতিথি। ইসরোর সভাধ্যক্ষ কে রাধাকৃষ্ণণ ছিলেন ২৭ এ ফেব্রুয়ারি ২০১৪য় হওয়া তৃতীয় বার্ষিকীর মুখ্য অতিথি এবং ভারত সরকারের সায়েন্স অ্যাণ্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ বোর্ডের প্রধান টি কে চন্দ্রশেখর ছিলেন ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৫য় অনুষ্ঠিত গবেষণা দিবসের পঞ্চম বার্ষিকীর মুখ্য অতিথি।
প্রতি বছর প্রায় ৫০০টি গবেষণাপত্রের খসড়া এই গবেষণা দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সমাজ বিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান মিলিয়ে ৪০টি বিভাগের ছাত্রছাত্রী ও গবেষকরা উপস্থাপন করে থাকেন। এই বছর ৫১২টি গবেষণাপত্র উপস্থাপিত হয় এবং সেরা ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারীদের স্বর্ণ ও রৌপ্যপদকে ভূষিত করা হয়।