দেশের বৃহত্তম নতুন ইস্যু ঘিরে অনিয়মের অভিযোগ সেবি-র

ডিএলএফের উপর নিষেধাজ্ঞা

ভারতের অন্যতম বৃহৎ আবাসন নির্মাতা সংস্থা ডিএলএফের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল বাজার নিয়ন্ত্রক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি)। ২০০৭ সালে নতুন ইস্যুর সময়ে তথ্য জানানোয় অনিয়মের অভিযোগেই সোমবার এই সিদ্ধান্ত সেবি-র। সেটি ছিল ভারতের শেয়ার বাজারে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পাবলিক ইস্যু।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪ ০১:৪৭
Share:

ভারতের অন্যতম বৃহৎ আবাসন নির্মাতা সংস্থা ডিএলএফের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল বাজার নিয়ন্ত্রক সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি)।

Advertisement

২০০৭ সালে নতুন ইস্যুর সময়ে তথ্য জানানোয় অনিয়মের অভিযোগেই সোমবার এই সিদ্ধান্ত সেবি-র। সেটি ছিল ভারতের শেয়ার বাজারে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় পাবলিক ইস্যু। সেবি-র নির্দেশের জেরে আগামী তিন বছর মূলধনী বাজারে লেনদেন করতে পারবে না ডিএলএফ। এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে সংস্থার কর্ণধার কুশল পাল সিংহ, তাঁর পুত্র-কন্যা রাজীব সিংহ (ভাইস চেয়ারম্যান) ও পিয়া সিংহকেও (পূর্ণ সময়ের ডিরেক্টর)। এ ছাড়া এই তালিকায় রয়েছেন সংস্থা পরিচালনায় প্রথম সারিতে থাকা তিন কর্তা। এঁরা হলেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর টি সি গয়াল, কামেশ্বর স্বরূপ ও রমেশ শঙ্ক।

ডিএলএফ বেশি রাতে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, সংস্থা আইন ভাঙেনি। তাদের আইন বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি সংস্থার পূর্ণ আস্থা আছে। তাই নিজেদের দাবি প্রমাণ করা নিয়েও আশাবাদী ডিএলএফ।

Advertisement

২০০৭-এ বাজারে প্রথম বার শেয়ার ছেড়ে ৯,১৮৭ কোটি টাকা সংগ্রহ করে ডিএলএফ। সেবি-র পূর্ণ সময়ের সদস্য রাজীব অগ্রবাল তাঁর ৪৩ পৃষ্ঠার রায়ে এ দিন বলেন, “এই নতুন ইস্যুর সময়ে ‘ইচ্ছাকৃত’ ও ‘সক্রিয়’ ভাবে তথ্য না-জানিয়ে লগ্নিকারীদের বিভ্রান্ত ও প্রতারণা করেছে ডিএলএফ। আমি নিশ্চিত, মূলধনী বাজারের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে এ ধরনের অনিয়ম গুরুতর এবং তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী।” রায়ে আরও জানানো হয়েছে, সেবি-র তথ্য দাখিল এবং লগ্নিকারী সুরক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশিকা এবং অবৈধ লেনদেন প্রতিরোধ বিধি ভেঙেছে ডিএলএফ। এই কারণেই সংস্থা ও তার কর্তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মনে করছে সেবি।

কী তথ্য গোপন করেছিল ডিএলএফ? সেবি তার রায়ে জানিয়েছে, শেয়ার ছাড়ার জন্য সেবি-র কাছে ২০০৭-এর জানুয়ারিতে পাঠানো নথিতে ডিএলএফ তার সব ক’টি শাখা সংস্থা এবং সেগুলির বিরুদ্ধে চলা মামলা সম্পর্কে তথ্য দেয়নি। ওই নথির ভিত্তিতেই নতুন ইস্যু ছাড়ার ব্যাপারে সংস্থাকে সায় দেয় সেবি। কিন্তু মূলত ৩টি শাখা সংস্থা ফেলিসিট, শালিকা ও সুদীপ্তি সম্পর্কে তথ্য দেয়নি তারা। এগুলি যে ডিএলএফের শাখা, তা কার্যত এড়িয়েই গিয়েছিল তারা।

ডিএলএফের প্রতি অভিযোগের আঙুল ওঠে ওই বছরেই জনৈক কিংশুক কৃষ্ণ সিংহের সেবি-র কাছে আনা অভিযোগের পরে। অভিযোগ ছিল, জমি কেনা নিয়ে সুদীপ্তি এস্টেটস প্রাইভেট লিমিটেড ও সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি তাঁকে ঠকিয়ে ৩৪ কোটি টাকা আদায় করেছে। এ নিয়ে তিনি এফআইআর-ও করেন। কিংশুকবাবু জানান, সুদীপ্তির মাত্র দু’টি শেয়ারহোল্ডার: ডিএলএফ হোম ডেভেলপার্স এবং ডিএলএফ এস্টেট ডেভেলপার্স, যার মধ্যে সুদীপ্তি ও এই দুই সংস্থা ডিএলএফ গোষ্ঠীরই অংশ। কিন্তু ডিএলএফ কিংশুকবাবুকে পাঠানো জবাবে সুদীপ্তির সঙ্গে তার যোগাযোগের কথা অস্বীকার করে। ডিএলএফের থেকে সুরাহার আশা না-দেখে তিনি এর পর দিল্লি হাইকোর্টে যান। আদালতই এ নিয়ে সেবি-কে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেয়। সেই মতো ২০১১-এ অনুসন্ধান শুরু করে সেবি, যার রায়ে সংস্থাটির বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন