গাঁটছড়া স্ন্যাপডিল, অ্যামাজন ও পেপ্যালের সঙ্গে

নেটে বিক্রিতে যুক্ত ছোট সংস্থাকে কম সুদে ঋণ দেবে স্টেট ব্যাঙ্ক

দ্রুত বাড়তে থাকা ই-কমার্সের হাত ধরে নিজেদের ব্যবসা বাড়াতে চায় স্টেট ব্যাঙ্ক। তাই নেটের মাধ্যমে যারা পণ্য বেচে, এ বার তাদের ঋণ দিতে উদ্যোগী হল তারা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ী সংস্থাকেই কম সুদে এই ঋণ দেওয়া হবে। মিলবে তাদের বৈদেশিক লেনদেনে অনলাইনে দাম মেটানোর সুযোগও। পাশাপাশি, বিশেষ কিছু খাতে সরকারি কোষাগারে আসা আর্থিক সহায়তা যাতে অনলাইনে স্টেট ব্যাঙ্কের পরিষেবার মাধ্যমে আসে, তার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০৩:৩৬
Share:

মউ সই। অরুন্ধতী ভট্টাচার্য, কুণাল বহল।—নিজস্ব চিত্র।

দ্রুত বাড়তে থাকা ই-কমার্সের হাত ধরে নিজেদের ব্যবসা বাড়াতে চায় স্টেট ব্যাঙ্ক। তাই নেটের মাধ্যমে যারা পণ্য বেচে, এ বার তাদের ঋণ দিতে উদ্যোগী হল তারা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ী সংস্থাকেই কম সুদে এই ঋণ দেওয়া হবে। মিলবে তাদের বৈদেশিক লেনদেনে অনলাইনে দাম মেটানোর সুযোগও। পাশাপাশি, বিশেষ কিছু খাতে সরকারি কোষাগারে আসা আর্থিক সহায়তা যাতে অনলাইনে স্টেট ব্যাঙ্কের পরিষেবার মাধ্যমে আসে, তার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এই লক্ষ্যে তিনটি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে স্টেট ব্যাঙ্ক— পেপ্যাল, স্ন্যাপডিল এবং অ্যামাজন। পেপ্যাল এবং স্ন্যাপডিলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার কলকাতায় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অ্যামাজনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে গত বুধবার মুম্বইয়ে। প্রসঙ্গত, স্ন্যাপডিল এবং অ্যামাজন হল পণ্য বিক্রির পোর্টাল। আর পেপ্যাল পণ্যের দাম মেটানোর পোর্টাল।

স্ন্যাপডিল এবং অ্যামাজনের পোর্টালের মাধ্যমে যে-সব উৎপাদনকারী বা ব্যবসায়ী পণ্য বেচবেন, তাঁদের ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে স্টেট বাঙ্কের চেয়ারপার্সন অরুন্ধতী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আপাতত ঋণ দেওয়া হবে শুধু ভারতে বিক্রি করছে এমন সংস্থাকেই। এতে আমরা তুলনায় কম সুদ নেব। মহিলাদের সুদে ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়তি ছাড়।’’ ঋণ দ্রুত মিলবে বলেও দাবি অরুন্ধতীদেবীর। সাধারণ ভাবে সুদ নেওয়া হবে ১১.৩৫ থেকে ১৩.৩৫% হারে। এ ছাড়া, উৎপাদনকারীদের ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণে কোনও সম্পত্তি বা স্থায়ী আমানত বন্ধক রাখতে হবে না। ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে তা ২৫ লক্ষ টাকা। স্ন্যাপডিলের সিইও কুণাল বহল বলেন, ‘‘এখন আমাদের দেড় লক্ষ সদস্য। ৩ বছরে তা ১০ লক্ষে নিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য। স্টেট ব্যাঙ্কের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে চাই।’’

Advertisement

পাশাপাশি, পেপ্যালের সঙ্গে চুক্তির মূল উদ্দেশ্য বিদেশ থেকে পণ্য কেনার পর এটির মাধ্যমে অনলাইনে দাম মেটানোর সুযোগ করে দেওয়া। যা নিতে পারবে ৯ লক্ষ ক্ষুদ্র-মাঝারি সংস্থা, যারা স্টেট ব্যাঙ্কের গ্রাহক। ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে বা সরাসরি গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকেই তা করা যাবে। এ প্রসঙ্গে স্টেট ব্যাঙ্কের এমডি বি শ্রীরাম বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে পেপ্যাল পরিষেবা ব্যবহার করে আমরা ই-গভর্ন্যান্সে যুক্ত হব। প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভারত, নমামি গঙ্গে ইত্যাদি প্রকল্পে বিদেশ থেকে অনেক টাকা ভারতে দান বা সহায়তা হিসেবে আসবে। তা পেপ্যাল পরিষেবার মাধমে করানো আমাদের লক্ষ্য। ই-ভিসার খরচও যাতে পেপ্যালের মাধ্যমে মেটানো যায়, সে ব্যপারে উদ্যোগী হব আমরা।’’

স্টেট ব্যাঙ্কের ডেপুটি এমডি সুনীল শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘পেপ্যালের সঙ্গে চুক্তিতে রফতানি বা আমদানি করেন এমন ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোগপতিরা উপকৃত হবেন। এখন বৈদেশিক লেনদেনে এই পরিষেবা মিলবে। তবে শীঘ্রই দেশের মধ্যেও তা চালু হবে। যা খতিয়ে দেখতে বিশেষ কমিটি গড়া হয়েছে।’’

চুক্তি সইয়ের পর ভারতে পেপ্যালের কান্ট্রি হেড বিক্রম নারায়ণের দাবি, ‘‘আমরা বিশ্বের ২০৩টি দেশে ব্যবসা করছি। ওই সব দেশ থেকে পণ্য আমদানি বা রফতানি করে দাম মেটানো বা দাম পাওয়ার সুবিধা পাবেন ভারতের গ্রাহকরা। দাম মেটানোর প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত সুরক্ষার ব্যবস্থাও করেছি। নিশ্চিত করব পণ্যের মান ও পরিমাপ ঠিক রাখার বিষয়টিও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন