বাণিজ্য যুদ্ধে বেসামাল বিশ্ব বাজার, সেনসেক্সও পড়ল ৩৫৬ পয়েন্ট

এর আগে সেনসেক্স এক দিনে এত বেশি পড়েছিল (৪০৯.৭৩ পয়েন্ট) মাস চারেক আগে, গত ২৩ মার্চ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই ও ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০০:৫৯
Share:

—ফাইল চিত্র।

চিন-মার্কিন শুল্ক যুদ্ধ ঘিরে বাড়তে থাকা উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ল সারা বিশ্বের শেয়ার বাজারে। বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা ফের জোরালো হওয়ায় বৃহস্পতিবার ধাক্কা খেল ইউরোপ, এশিয়ার প্রায় সব সূচক। বাদ গেল না ভারতও। সেনসেক্স পড়ল ৩৫৬.৪৬ পয়েন্ট। দাঁড়াল ৩৭,১৬৫.১৬ অঙ্কে। নিফ্‌টি-ও ১০১.৫০ পয়েন্ট খুইয়ে থামল ১১,২৪৪.৭০-তে। এর আগে সেনসেক্স এক দিনে এত বেশি পড়েছিল (৪০৯.৭৩ পয়েন্ট) মাস চারেক আগে, গত ২৩ মার্চ।

Advertisement

শুল্ক যুদ্ধের আঁচ থেকে রেহাই পায়নি টাকাও। ডলারের সাপেক্ষে ভারতীয় মুদ্রার দাম এ দিন পড়ে গিয়েছে ২৭ পয়সা। এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬৮.৭০ টাকায়।

প্রথমে সংবাদ মাধ্যমে ইঙ্গিত মিলেছিল ২০ হাজার কোটি ডলারের চিনা পণ্যে প্রথমে ১০% শুল্ক বসানোর কথা বললেও, এখন তা বাড়িয়ে ২৫% করার কথা ভাবছে আমেরিকা। পরে মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ বাণিজ্য বিষয়ক আলোচনাকারীরা জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই শুল্ক বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছে ওয়াশিংটন। যার কারণ, চিনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের তোলা অনৈতিক বাণিজ্য চালানোর অভিযোগ। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তা বন্ধের জন্য চিনের কাছে আর্জি জানিয়েও কাজ হয়নি। নিজেদের বদলানোর পরিবর্তে মার্কিন কর্মী, কৃষক ও ব্যবসার উপর বেআইনি ভাবে আঘাত করছে তারা। তাই শুল্ক আরও বাড়ানোর উদ্যোগ।

Advertisement

গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ চিনও ইতিমধ্যেই পাল্টা জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। বেজিং বলেছে, আমেরিকা নতুন করে বাড়তি শাস্তিমূলক আমদানি শুল্ক চাপালে ছেড়ে কথা বলবে না তারাও। বিশেষত জুলাইয়েই যেখানে ৩,৪০০ কোটি ডলারের চিনা পণ্যে ২৫% কর বসিয়েছে আমেরিকা।

আর এতেই প্রমাদ গুনছেন শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীরা। চিন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের ধাক্কা যে সকলের গায়েই লাগবে, তা বিলক্ষণ বুঝছেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কারণেই ভারত-সহ বেশির ভাগ দেশেই এ দিন শেয়ার বিক্রির ঝোঁক ছিল বেশি। তবে তাঁদের একাংশের মতে, সেনসেক্স, নিফ্‌টির পতনের জন্য এ দিন দায়ী আরও কিছু বিষয়। তার মধ্যে আছে, এতটা উঁচু বাজারে লগ্নিকারীদের যত দ্রুত সম্ভব হাতের শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা ঘরে তোলার হিড়িক। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোয় গাড়ি, ব্যাঙ্ক, আবাসন সংস্থাগুলির শেয়ার দর পড়তে থাকা। যার পেছনে কাজ করেছে গাড়ি-বাড়ির কেনার ঋণে সুদ বাড়লে, সেগুলির চাহিদা কমার আশঙ্কা। ফলে সার্বিক ভাবে ব্যাঙ্ক ঋণের পরিমাণ কমার ভয়। পতনের জন্য দায়ী দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রিও।

তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, এর মধ্যেও আশা জাগিয়েছে ছোট (স্মল ক্যাপ) ও মাঝারি (মিড ক্যাপ) মাপের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়া। স্বস্তি দিয়েছে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের সুদ না বাড়ানো, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমা ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই অর্থবর্ষে দেশের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৭.৪ শতাংশে অপরিবর্তিত রাখাও। অনেকের মতে, তা না হলে হয়তো আরও বেশি পড়ত বাজার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন