একটু স্বস্তি মিলল গত সপ্তাহের শেষে। বৃহস্পতি ও শুক্র, টানা দু’দিন বাজার খানিকটা বাড়ায়। যদিও তেল ও ডলারের দাম বাড়ার আতঙ্ক এখনও চেপে বসে লগ্নিকারীদের উপর। অনিশ্চয়তা তাই বহাল। বিশেষত কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডের (ইপিএফ) মতো ক্ষেত্রের সুদ যেখানে আরও কমেছে।
ওই দু’দিন সেনসেক্স বেড়েছে যথাক্রমে ৩১৮ ও ২৬২ পয়েন্ট। পৌঁছেছে ৩৪,৯২৫ অঙ্কে। অনেক দিন পর মাথা তুলেছে মাঝারি (মিডক্যাপ) ও ছোট (স্মলক্যাপ) মাপের সংস্থার সূচক। সব ক্ষেত্রের শেয়ার কিছুটা গা ঝাড়া দিয়ে ওঠায় বেড়েছে বাজারের শেয়ার মূলধনও (মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন)। এর জন্য শক্তি জুগিয়েছে মূলত বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দামের ৭৭ ডলারে নেমে আসা। অনেকখানি পড়ার পরে সপ্তাহ শেষে দাম বেড়েছে টাকারও। এক ডলার কিছুটা নেমে দাঁড়িয়েছে ৬৭.৭৬ টাকায়। তবে অনিশ্চয়তা বহাল থাকার অন্যতম কারণ হল—
• ডিজেলের দামে নজির গড়া। পেট্রল চার বছরে সব চেয়ে বেশি হওয়া। ফলে জিনিসপত্রের দাম চড়ার আশঙ্কা।
• বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর এতটা উপরে ওঠায় ভারতের তেল কেনার খরচ বাড়া।
• মে মাসে এখনও এ দেশ থেকে বিদেশি লগ্নিকারীদের প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ সরানো।
• ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে স্টেট ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের খারাপ ফল প্রকাশের ধারা বহাল থাকা।
ফলে সূচক বাড়লেও সুদিন ফিরছে, এ কথা বলা যাবে না।
ইপিএফে সুদ কমার কথা ঘোষণায় চিন্তা বেড়েছে চাকরিজীবীদের। ৮.৬৫% থেকে তা নেমেছে ৮.৫৫ শতাংশে। ৫ বছরে যা সব চেয়ে কম। পণ্যমূল্য পরিস্থিতি ও সরকারি বন্ডে এখন যা ইল্ড, তার নিরিখে এটা ইপিএফে সুদ কমানোর আদর্শ সময় ছিল না। বছরের গোড়ায় ইপিএফ-ও ৩,৭০০ কোটি টাকার শেয়ার বেচে ঘরে তুলেছিল ১,১০০ কোটি নিট লাভ। ফলে ভাবা হয়েছিল, এ বার হয়তো সুদ কমবে না। যদিও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু কার্যকর হয়নি কর্নাটকের ভোটের জন্য। ফলে তা মিটতেই ঘোষণা হল তড়িঘড়ি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ৬ কোটি প্রভিডেন্ট ফান্ড গ্রাহক।
এ দিকে, গত অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে স্টেট ব্যাঙ্ক লোকসান গুনেছে ৭,৭১৮ কোটি। খারাপ ফলের জেরে কমেছে টাটা মোটরস ও জেট এয়ারের দর। ইন্ডিয়ান অয়েলের নিট মুনাফা প্রায় ১,৫০০ কোটি টাকা বাড়লেও, লাভ কমেছে হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের। দেশে তেলের দাম কম রাখতে ভর্তুকি দিতে হতে পারে, এই আশঙ্কায় কমেছে ওএনজিসি-সহ তেল বিপণন সংস্থাগুলির শেয়ার দর। সরকারি বিমা সংস্থা জিআইসি ২৭০% ডিভিডেন্ড ছাড়াও ঘোষণা করেছে ১:১ অনুপাতে বোনাস শেয়ার ইস্যুর খবর। গত অর্থবর্ষে তাদের নিট লাভ ছিল ৩,২৩৪ কোটি।