সেনসেক্স ৩৪ থেকে ৩৫ হাজারে পৌঁছতে সময় নিয়েছিল ১৭ দিন। কিন্তু সূচক এর পরে আরও হাজার পয়েন্টের রাস্তা পেরিয়ে গেল মাত্র চার দিনেই। মঙ্গলবার তা ৩৪১.৯৭ পয়েন্ট এগিয়ে ঢুকে পড়ল ৩৬ হাজারের ঘরে। দিনের শেষে এই প্রথম দাঁড়াল ৩৬,১৩৯.৯৮ অঙ্কে। ১১৭.৫০ পয়েন্ট এগিয়ে নিফ্টি-ও পা রেখেছে ১১,০৮৩.৭০ অঙ্কের নতুন শিখরে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজার তেজী হওয়ার অন্যতম কারণ আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের পূর্বাভাস। সোমবার বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে প্রকাশ করা এক সমীক্ষায় তাদের পূর্বাভাস, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধি ৭.৪ শতাংশই থাকবে। আর ২০১৯ সালে তা হবে ৭.৮%। আর সেটা হলে, আর্থিক উন্নতির নিরিখে বিশ্বের দ্রুততম দেশ হওয়ার শিরোপা উঠবে তার মাথায়।
শেয়ার বাজারমহলের দাবি, এমনিতেই মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নির দৌলতে বাজারে এখন রমরমিয়ে বিরাজ করছে ‘বুল’রা। এই অবস্থায় অর্থনীতির এ হেন দ্রুত উন্নতির আশা লগ্নিতে আরও উৎসাহী করেছে লগ্নিকারীদেরও। এমনকী, বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও ঢেলে লগ্নি করতে নেমেছে ভারতে। শুধু এ দিনই তারা শেয়ার কিনেছে ১,২২৯.৩৫ কোটি টাকার। গত তিন দিনে যার অঙ্ক মোট ৩,৭৮৫.১১ কোটি।
বেশ কিছু দিন ধরেই বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলে আসছেন, অর্থনীতির মৌলিক উপাদানগুলির উপর ভিত্তি করে ভারতের বাজার বাড়ছে না। বরং এতে জ্বালানির কাজ করছে মিউচুয়াল ফান্ডের মতো দেশীয় লগ্নিকারী সংস্থার বিনিয়োগ। কিন্তু সূচকের বর্তমান দৌড়ের জন্য অর্থনীতির জমি পোক্ত হওয়াই মূল কারণ বলে দাবি করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকে ইতিমধ্যেই মনে করতে শুরু করেছেন, ভারতের বাজারের আর পিছন ফিরে তাকানোর সম্ভবনা কম। আইডিএফসি মিউচুয়াল ফান্ডের সিইও বিশাল কপূরের যেমন অভিমত, আগামী দিনে বাজার ক্রমশ আরও চাঙ্গা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘বাজার খারাপ থাকার
সময়েও টেলিকম, ওষুধ, ভোগ্যপণ্য-সহ কিছু সংস্থার শেয়ার দর স্থিতিশীল ছিল। কমতে দেখা গিয়েছিল ব্যাঙ্ক, ইস্পাত, সিমেন্ট, ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থাগুলির শেয়ার। গত ১০ বছরে প্রথম তালিকায় থাকা ওই সব স্থিতিশীল সংস্থার দর বেড়েছে ১৬%। কিন্তু দ্বিতীয় তালিকায় থাকা সংস্থাগুলির দর বেড়েছে মাত্র ২%। এ বার এই দ্বিতীয় তালিকার শেয়ারের দামও বাড়তে শুরু করেছে। তার পাশাপাশি বাড়ছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির বিনিয়োগও।’’
সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের বছর হওয়ায় এ বার বাজেটে লগ্নিকারীদের খুশি করার মতো রসদ থাকবে। যা বাজারকে আরও ঠেলে তুলবে। তবে ব্যাঙ্ক অব আমেরিকা মেরিল লিঞ্চের মতো উপদেষ্টা সংস্থার আবার মত, বাজেটে শেয়ারে দীর্ঘ মেয়াদি মূলধনী লাভ কর ফের চালু হলে, ডিসেম্বরে সেনসেক্স বেশ কিছুটা নামতে পারে।