কোনও জমি বা বাড়ি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে ব্যবহার করা হলে, এ বার রাজ্যের আগাম অনুমতি সাপেক্ষে সম্পত্তি করের ৫০% পর্যন্ত ছাড় দিতে পারবে পুরসভাগুলি। এ জন্য আগামী সোমবার বিধানসভায় একটি সংশোধনী বিল আনছে পুর দফতর।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে নির্মাণ ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। তবে একই সঙ্গে তাদের একাংশের প্রশ্ন, শুধু কর ছাড় দিয়েই বড় লগ্নি আনা আদৌ কতটা সম্ভব? এমনিতেই আবাসনে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি। পড়ে আছে তৈরি ‘অফিস স্পেস’। এ অবস্থায় বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কাছে এই ছাড় তেমন আকষর্ণীয় না-ও হতে পারে বলে মত অনেকের।
এই ছাড়ের সুবিধা পেতে অবশ্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। সে ক্ষেত্রে যে বাড়ি বা জমি পুর আইনের ১১১ ধারা অনুযায়ী এফএআরে (ফ্লোর এরিয়া রেশিও) বিশেষ ছাড় পেয়েছে, সেগুলির ৮০ শতাংশই তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প বা সংশ্লিষ্ট পরিষেবায় ব্যবহার করতে হবে। আর যেগুলি ওই ছাড় পায়নি, সেগুলির ব্যবহার হতে হবে ৫০%।
রাজ্যের শিল্প শহরগুলিতে জমির বার্ষিক মূল্যায়নে এখন থেকে ইউনিট এলাকা ভিত্তিক কর নির্ধারণের ব্যবস্থাও চালু করছে রাজ্য। সংশোধনী বিলে থাকবে সেই বিষয়টিও।
ফোরাম, গোদরেজ, ধনসারি-র মতো যে সব নির্মাণ সংস্থা তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পরিকাঠামো তৈরি করে, সম্পত্তি কর ছাড়ের এই প্রস্তাবে খুশি তারা। তাদের মতে, কর ছাড় পেলে পরিকাঠামো গড়তে উৎসাহ পাবে নির্মাণ শিল্পমহল। আবাসন শিল্পের উপদেষ্টা সংস্থা কুশম্যান অ্যান্ড ওয়েকফিল্ড-এর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান অভিজিৎ দাস জানান, আবাসন শিল্পে এখন কিছুটা মন্দা। তাই যে কোনও কর ছাড়েরই আলাদা আকর্ষণ রয়েছে।
তবে আবাসন ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের একাংশের প্রশ্ন, চাহিদা না-থাকায় বহু পরিকাঠামো এখনও খালি। সে ক্ষেত্রে নতুন করে কর ছাড় মিললেও, সেই খালি জায়গা না-ভরা পর্যন্ত নতুন পরিকাঠামোর জোগান দিতে কে এগিয়ে আসবে? এ ছাড়া, এই ছাড়ের কারণে ভাড়া বা অফিসের জন্য জমি কেনার দাম খুব বেশি কমবে বলেও মনে করছে না তারা। তাতে ছোট তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার হয়তো কিছুটা সুবিধা হবে, কিন্তু বড় সংস্থার হিসেব-নিকেশে তা খুব একটা প্রভাব না-ও ফেলতে পারে। বরং বিশেষ আর্থিক অঞ্চলের (সেজ) মতো প্রকল্প, যেখানে সুবিধা অনেক বেশি, সেটাই তাদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হবে।
এ প্রসঙ্গে অনেকে তুলে আনছেন রাজ্যে বাড়ির রঙ নীল-সাদা করলে কর ছাড় দেওয়ার কথা। কলকাতা পুরসভা ওই প্রস্তাব দিলেও তা নাগরিকদের মধ্যে তেমন সাড়া ফেলেনি। এ বার সম্পত্তি করে ছাড়ের প্রস্তাবেরও সেই একই নিয়তি হয় কিনা সেটাই দেখার।