প্রতীকী ছবি।
দার্জিলিং বাদে উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলিতে ২৩-২৫ জুলাই প্রস্তাবিত ধর্মঘট প্রত্যাহারের আশ্বাস কর্মী ইউনিয়নগুলির তরফে মেলেনি। কিন্তু রাজ্যের দাবি, বাগানে ন্যূনতম মজুরি নিয়ে জট কাটছে। ৩০ জুলাই সংশ্লিষ্ট কমিটির বৈঠকে তা ঘোষণা করা হতে পারে। তার আগে ১৭ জুলাই শিলিগুড়িতে জানানো হবে ন্যূনতম মজুরির কাঠামো। শ্রমিকরাও জানাচ্ছেন, আগে কাঠামো দেখে তবে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ভাবনা।
শুক্রবার কলকাতায় ন্যূনতম মজুরি সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে রাজ্যের শ্রম কমিশনার জাভেদ আখতার জানান, ন্যূনতম মজুরির বিন্যাস ও কাঠামো কেমন হবে, কোন কোন বিষয় থাকবে, তা স্থির হয়েছে। ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষ বক্তব্য জানিয়েছে। সব খতিয়ে দেখে ৩০ তারিখ কমিটির পরের বৈঠকে ওই কাঠামোর ভিত্তিতে হিসেব করে ন্যূনতম মজুরি সুপারিশ করা হবে।
তবে তার আগে বেতন ছাড়াও চা বাগানের অন্যান্য বিষয় নিয়ে ১৭ তারিখ শিলিগুড়িতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে। সেখানেই ন্যূনতম মজুরির ওই কাঠামো প্রকাশ করা হবে বলে জানান শ্রম কমিশনার।
শ্রমিক ইউনিয়নগুলির পক্ষে জিয়া উল আলম, মণিকুমার দার্নাল, গোপাল প্রধান প্রমুখের দাবি, দীর্ঘ টালবাহানার পরে শ্রমিকদের আন্দোলনের হুঁশিয়ারির ফলেই বিষয়টি এ বার কিছুটা এগোল।
মালিকপক্ষের সংগঠন সিসিপিএ-র অরিজিৎ রাহা বলেন, ‘‘বক্তব্য জানিয়েছি। কর্ম সংস্কৃতির সমস্যায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি সমাধানের দাবি জানিয়েছি।’’ শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক ও শ্রম কমিশনার ইউনিয়নের কাছে ধর্মঘট প্রত্যাহারের আর্জি জানান। তবে সাড়া দেয়নি জয়েন্ট ফোরাম। জিয়া ও মণিকুমারের বক্তব্য, আপাতত ১৭ তারিখের দিকে তাকিয়ে
রয়েছেন তাঁরা।
রাজ্যের দাবি
• শুক্রবারের বৈঠক ইতিবাচক। কোন কোন খাতে টাকা ন্যূনতম মজুরিতে থাকবে, তার খসড়া কাঠামোও মোটের উপর তৈরি।
• শিলিগুড়িতে ১৭ জুলাই ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। সেখানেই এ বিষয়ে জানানো হবে।
• ৩০ জুলাই ওই কাঠামোর ভিত্তিতে হিসেব কষে ঘোষণা করা হবে ন্যূনতম মজুরি।
• এখন দৈনিক মজুরি ১৫৯ টাকা।
ঘটনার শিকড়
• ২০১৩ সালের ১৫ মে বাগিচা শিল্পের (চা, কফি ও মশলা) জন্য প্রথম ন্যূনতম মজুরি
চালু করার সিদ্ধান্ত।
• দেখা গিয়েছিল, কেরল, কর্নাটক, তামিলনাড়ুতে তা দেওয়া হলেও পশ্চিমবঙ্গ ও অসমে হয় না।
• নগদ মজুরি ছাড়াও বাগানে শ্রমিকদের রেশন, জ্বালানি এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ চা দেন মালিকপক্ষ।
• চালু নিয়মে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে তিন বছরের জন্য মজুরি সংশোধন হয়ে থাকে।
• ২০১৪ সালের মার্চে সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। ডিসেম্বরে ঠিক হয়, ন্যূনতম মজুরি চালু না হওয়া পর্যন্ত মজুরি ৩৭.৫০ টাকা বাড়বে।