Loan

রাজ্যের ঋণের সুযোগ বাড়াতে সংশোধন আসছে আইনে

পরিষদীয় সূত্রের খবর, চলতি অধিবেশনেই পেশ হবে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিসক্যাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট (সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২২’।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:০২
Share:

এ বার রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) ৪% পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে সরকার। প্রতীকী ছবি

ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা আরও বাড়াতে আইন সংশোধন করছে রাজ্য সরকার। বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই আসছে আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ (এফআরবিএম) আইনের সংশোধনী বিল। ফলে এ বার রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) ৪% পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে সরকার। তাদের যুক্তি, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ এবং তার পরে কেন্দ্রের আরও একটি অনুমোদনের দৌলতে ঋণের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো যাচ্ছে এবং সেই লক্ষ্যেই আনা হচ্ছে বিল। বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, ধারের ভারে ইতিমধ্যেই কাহিল রাজ্য এর ফলে আরও আর্থিক বিশৃঙ্খলার দিকে এগোবে।

Advertisement

পরিষদীয় সূত্রের খবর, চলতি অধিবেশনেই পেশ হবে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিসক্যাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট (সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২২’। বিধানসভায় ২০ সেপ্টেম্বর সেটি নিয়ে দু’ঘণ্টা আলোচনার পরিকল্পনা। যদিও বিধায়কদের মধ্যে রীতিমাফিক এখনও তা বিলি হয়নি। বিলে বলা হয়েছে, ২০১০ সালের এফআরবিএম আইনে জিএসডিপি-র ৩% পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যেত এত দিন। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষের (২০২২-২৩) জন্য ওই সীমা বেড়ে হয়েছে ৩.৫%। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের ব্যয় বিভাগের কাছে দরবার করে গত অর্থবর্ষে (২০২১-২২) বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে কাজের সুবাদে রাজ্য আরও ০.৫% বাড়তি ঋণ নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে। সব মিলিয়ে ঋণের অনুপাত রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৪%। এর আইনি সংস্থানের জন্যই এফআরবিএম আইন সংশোধিত হচ্ছে। তবে তা আপাতত চলতি অর্থবর্ষের জন্যই।

রাজ্যের অর্থ দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, ‘‘অর্থ কমিশনের সুপারিশ ছিল। বাজেটে বিষয়টা উল্লেখ করেছিলাম। তার পরেও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদন আছে। সব মিলিয়েই ঋণের অনুপাত ৪% করতে বিল আনা হচ্ছে।’’ প্রধান বিরোধী দল বিজেপির অভিযোগ, আগে ঋণ নিয়ে বেহিসেবি খরচ করছে রাজ্য। বাড়তি পেলে তার অন্যথা হবে না। তবে অর্থ কমিশন ও কেন্দ্রের অনুমোদনের যুক্তি রাজ্যের হাতে থাকায় বিজেপির পক্ষে সরাসরি সংঘাতে যাওয়ার বিড়ম্বনা আছে। দলের অর্থনীতিবিদ-বিধায়ক অশোক লাহিড়ীর পরামর্শ নিয়ে বিষয়টিতে তাদের অবস্থান চূড়ান্ত হবে।

Advertisement

অর্থ দফতরের প্রাক্তন সচিব ও কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক সুখবিলাস বর্মার মতে, রাজ্যের ‌ধার ৫ লক্ষ কোটি টাকা পেরিয়ে গিয়েছে। উৎপাদন শিল্প বা গঠনমূলক কিছু হয়নি। মেলা-খেলা-খয়রাতিতে টাকা খরচ হয়েছে। বাড়তি ঋণের যে টাকা হাতে আসবে, তাতে একই জিনিসের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থাকছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ‘‘ঋণের বোঝা এমনিতেই বিপুল। খরচ মানে সব বেহিসেবি। বিল এনে হয়তো ঋণের আইনি সংস্থান পাওয়া যাবে। কিন্তু বিষয়টি এগোবে আর্থিক বিশৃঙ্খলার দিকেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন