বিক্ষোভ জারি। সোমবার মিরজাপুরে। ছবি: পিটিআই।
গয়না শিল্পে বাজেটে ঘোষিত ১% উৎপাদন শুল্ক কী ভাবে কার্যকর হবে, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্র। গয়না ব্যবসায়ীদের আশা, এর পরে ফের ধর্মঘট ডাকার মতো যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তা হয়তো মিটবে। তবে এ সব সত্ত্বেও জটিলতা এখনও পুরোপুরি কাটেনি। এ দিনই দিল্লিতে বিক্ষোভ দেখানো গয়না ব্যবসায়ীদের উপর লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। ধর্মঘট তুলে নেওয়া ঠিক হয়েছে কি না, তা নিয়েও কার্যত দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে সংশ্লিষ্ট শিল্প।
সোমবার কেন্দ্র বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এ ব্যাপারে স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, ‘‘উৎপাদন শুল্ক কার্যকর করার পদ্ধতি নিয়ে অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গে আমাদের মৌখিক চুক্তি হয়েছিল। কথা ছিল, সেই মতো কেন্দ্র বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। এ দিনের বিজ্ঞপ্তিতে প্রায় সমস্ত দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর আশা, এর পরে গয়না শিল্পে এখন ফের ধর্মঘট ডাকার সম্ভাবনা এড়ানো সম্ভব হবে।
গয়না শিল্পে ধর্মঘট তোলা নিয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশ অসন্তুষ্ট। তাঁদের দাবি, যত দিন কেন্দ্র উৎপাদন শুল্ক বসানোর প্রস্তাব তুলে না নেয়, তত দিন ধর্মঘট চলুক। যে কারণে গোল্ড অ্যান্ড জুয়েলারি ফেডারেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাছরাজ বামালুয়া বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, তাতে ফের ধর্মঘট শুরুর আশঙ্কা রয়েছে।’’
এ দিকে, এ দিনই দিল্লিতে গয়না ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ দেখাতে গেলে, পুলিশ তাঁদের উপর লাঠি চালায় বলে অভিযোগ বাবলুবাবুর। তিনি বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলনকারীদের উপর লাঠি চালানোর এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এর ফলে গয়না শিল্পে আন্দোলনের পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে
পারে। তবে যে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার।’’
উল্লেখ্য, বিজ্ঞপ্তিতে রয়েছে কী ভাবে উৎপাদন শুল্ক গয়না শিল্পে কার্যকর হবে তা বিভিন্ন ডিলার এবং গয়না ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করার জন্য একটি কমিটি তৈরি হবে। এতে ব্যবসায়ীদের তিন প্রতিনিধি ছাড়াও থাকবেন বাণিজ্য মন্ত্রকের প্রতিনিধি, আইন বিশেষজ্ঞ, উৎপাদন শুল্ক বিভাগের প্রতিনিধি প্রমুখ। ৬০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শুল্ক কার্যকর করার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া ঠিক না-হওয়া পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের দোকান, বাড়ি অথবা দফতরে শুল্ক অফিসারেরা যেতে পারবেন না। তল্লাশি বা পণ্য বাজেয়াপ্ত করা যাবে না। করা যাবে না গ্রেফতারও। শুল্কের অঙ্ক নির্ধারণে একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে ব্যবসায়ীদের। তাতে গয়নার যে মূল্য উল্লেখ করা হবে, তা মানতে হবে শুল্ক বিভাগকে। শুল্ক হিসাব করা হবে ১ মার্চ থেকে।