চটের বস্তা কিনতে বছরে প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা খরচ করে কেন্দ্র।
পাটচাষিদের পাশে দাঁড়াতে এ বছর প্রায় ৮ কোটি চটের বস্তা কিনবে রাজ্যের খাদ্য দফতর। রাজ্যের সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ অত্যাবশকীয় পণ্য নিগম এই বস্তা কিনে চালকলগুলিকে দেবে। খরিফ মরসুমের (১ অক্টোবর থেকে) চাল ভরার জন্য ওই বস্তা কাজে লাগাবে কলগুলি। বিভিন্ন জেলায় বস্তা রাখার জন্য ২৩টি গুদামঘরও তৈরি করছে নিগম। গত বছর প্রথম বার বস্তা কিনেছিল রাজ্য।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘গত বছর সাড়ে ৩ কোটির মতো চটের বস্তা কেনা হয়েছিল। এই মরসুমে তা আরও বাড়ানো হচ্ছে। রাজ্যের পাটচাষি ও চটকলগুলির স্বার্থের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই সিদ্ধান্ত।’’
ঘটনা হল, চটের বস্তা কিনতে বছরে প্রায় ৬,০০০ কোটি টাকা খরচ করে কেন্দ্র। চাল, চিনি রাখতে বছরে ২৫-৩০ লক্ষ বেল (১৮০ কেজিতে ১ বেল) বস্তা কেনা হয়। জুট কমিশনারের মাধ্যমে যার ৯০% জোগান দেয় রাজ্যের চটকলগুলি।
পাটচাষিদের স্বার্থে
• ৮ কোটি বস্তা কিনবে রাজ্য।
• গত বছর কিনেছিল ৩.৫ কোটি।
• প্রতিটি বস্তার দাম ৪৯ টাকা।
• কেন্দ্র বস্তা পিছু দেয় ৪৫ টাকা।
• ৪ টাকা ভর্তুকি দেয় রাজ্য।
• ভর্তুকি প্রায় ৩০ কোটি টাকা।
সূত্রের খবর, এর মধ্যে পঞ্জাব ও হরিয়ানা ৩,০০০ কোটি টাকার মতো বস্তা কেনে। এই রাজ্যগুলির দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, তাদের চাপ দিয়ে বস্তা কিনতে বাধ্য করা হলেও পশ্চিমবঙ্গ তা মানে না। শেষ পর্যন্ত গত বছর থেকে পশ্চিমবঙ্গ বস্তা কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কেন্দ্রের কর্তারা আপাতত খানিকটা স্বস্তিতে।
তবে কেন্দ্র চাইছে, শুধু চাল নয়, পাটচাষিদের স্বার্থে রাজ্যে আনাজ ও আলুর জন্যও চটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক হোক। এ বিষয়ে বস্ত্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার রাজ্যকে চিঠিও লেখা হয়েছে। কারণ মন্ত্রক মনে করছে, চালের সঙ্গে অন্যান্য খাদ্যপণ্য রাখার জন্য চটের বস্তার ব্যবহার বাড়লে পশ্চিমবঙ্গের পাটচাষিরা আর্থিক ভাবে আরও বেশি সুরক্ষিত হবেন। বাড়বে পাটের চাহিদা। মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ যে পরিমাণ চটের বস্তা কিনছে, তা বাড়ানো উচিত।
এই প্রেক্ষিতে জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলছেন, চটের বস্তা কিনতে এ বছর বাড়তি ৩০ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। কারণ, চটকলগুলি থেকে ৪৯ টাকা দরে বস্তা কিনতে হবে রাজ্যকে। কিন্তু কেন্দ্র দেয় ৪৫ টাকা করে। বাকি ৪ টাকা ভর্তুকি দিতে হয় রাজ্যকে।