সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের দ্বারস্থ হল রেল মন্ত্রক। এ জন্য ৩২ হাজার কোটি টাকা চেয়ে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠি পাঠিয়েছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। এর সঙ্গেই রেলের বর্তমান আর্থিক অবস্থা, খরচ কমানো, ধাপে ধাপে বাড়ানোর পথে হাঁটা-সহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বিস্তৃত ভাবে চিঠিতে জানিয়েছেন তিনি।
প্রভুর দাবি, বেতন কমিশনের প্রস্তাব কার্যকর করতে হলে আগামী ৩-৪ বছরে রেলের ঘাড়ে আরও প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকার বোঝা চাপবে। এর সঙ্গেই রয়েছে রেলের স্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন খরচও। যে কারণে এই আবেদন বলে জানিয়েছেন তিনি। সে ক্ষেত্রে সরাসরি ওই অর্থ রেলকে দেওয়ার অথবা ২০১৩-’১৪ সালে হওয়া লোকসান পোষানোর প্রস্তাবও রেখেছেন রেলমন্ত্রী। বর্তমানে রেলের মোট আয়ের প্রায় ৫১.৫ শতাংশই খরচ হয় কর্মীদের বেতন ও পেনশন খাতে। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ মানলে ২০১৬-’১৭ সালে তা গিয়ে দাঁড়াবে ৬৮ শতাংশে। এই খরচ সামাল দিতে ওই বছরে রেলের ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি প্রয়োজন। কিন্তু তা কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছেন প্রভু। কারণ, গত অক্টোবর পর্যন্ত রেলের বৃদ্ধির হার মাত্র ৮.৪ শতাংশ।
প্রভুর আশা, আগামী ৩-৪ বছরে ধাপে ধাপে ভাড়া বাড়িয়ে এবং ব্যয় সঙ্কোচের অন্যান্য পথে হেঁটে এই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে সক্ষম হবে রেল। কিন্তু ঘাটতি মেটাতে এখন পণ্য পরিবহণ মাসুল বাড়ানোর বিরোধিতাও শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। এর ফলে দেশের আর্থিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে প্রভুর আশঙ্কা। সে ক্ষেত্রে বিশেষত কঠিন সময়ের মুখে পড়বে কয়লা, সিমেন্ট, খাদ্যশস্যের মতো ক্ষেত্রগুলি। পাশাপাশি তাঁর মতে, পণ্য পরিবহণের বিষয়টি একাধারে চাহিদার উপর নির্ভর করে। এই অবস্থায় ভাড়া বাড়িয়ে প্রতিযোগিতার বাজারে রেলকে পিছনে ঠেলতে নারাজ মন্ত্রক।
চিঠিতে আগামী দিনে ব্যয় সঙ্কোচের একটা দিশাও দেখিয়েছেন রেলমন্ত্রী। জ্বালানি খাতে খরচ এবং কর্মী নিয়োগ কমানোর মাধ্যমে ইতিমধ্যেই মন্ত্রক সেই পথে হেঁটেছে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত, রেলের মোট ব্যয়ের অধিকাংশই হয় কর্মী, বিভিন্ন লিজ এবং স্থাবর সম্পত্তি রক্ষাণাবেক্ষণের পিছনে।