ঘুষের দায়ে ধৃত সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক কর্তা

ঘুষ নেওয়ার দায়ে বেঙ্গালুরুতে সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়লেন সিন্ডিকেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুধীর কুমার জৈন। শনিবার এই ঘুষ কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন আরও ৫ জন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন জৈনের দুই শ্যালক বিনীত গোধা ও পুণিত গোধা। এই আত্মীয়দের সঙ্গে যোগসাজশে আইন ভেঙে কয়েকটি সংস্থাকে অনুমোদিত সীমার উপরন্তু ঋণ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগেই আজ তাঁদের গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তব্যুরো বা সিবিআই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৪ ০১:৪৩
Share:

সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারের পর তাঁর দুই শ্যালক বিনীত ও পুণিত গোধা এবং আর এক অভিযুক্ত বিজয় পাহুজা (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই

ঘুষ নেওয়ার দায়ে বেঙ্গালুরুতে সিবিআইয়ের জালে ধরা পড়লেন সিন্ডিকেট ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুধীর কুমার জৈন। শনিবার এই ঘুষ কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন আরও ৫ জন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন জৈনের দুই শ্যালক বিনীত গোধা ও পুণিত গোধা। এই আত্মীয়দের সঙ্গে যোগসাজশে আইন ভেঙে কয়েকটি সংস্থাকে অনুমোদিত সীমার উপরন্তু ঋণ পাইয়ে দেওয়ার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগেই আজ তাঁদের গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তব্যুরো বা সিবিআই। ওই সংস্থাগুলি কয়লা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত বলে সিবিআই সূত্রের দাবি, যেগুলির অন্যতম ভূষণ স্টিল।

Advertisement

সিবিআই-এর ডিরেক্টর রণজিৎ সিংহের নির্দেশে গত ছ’মাস ধরেই এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটির কর্তা জৈনের কর্যকলাপের উপর নজর রাখছিল কেন্দ্রীয় এই তদন্তব্যুরো। নিজস্ব গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া সন্দেহজনক তথ্যের ভিত্তিতেই তাঁর উপর নজরদারি করছিলেন সিবিআই অফিসারেরা। সিংহ এ দিন বলেন, “উচ্চ পদে থাকা অফিসারদের ঘুষ নেওয়া বন্ধ করতে আমরা যে বদ্ধপরিকর, এ দিনের ঘটনা তারই নজির।” উল্লেখ্য, এত দিন ধরে সিংহ নিজেই বিষয়টি নিয়ে

সিএমডি সুধীর কুমার জৈন।

Advertisement

অনুসন্ধান তদারকি করছিলেন। শনিবার ভোর থেকে তল্লাসি চালানো হয় দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, ভোপাল সমেত ২০টি স্থানে। আর, তাতেই ফল মেলে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, অবশেষে তাঁর দুই আত্মীয় বিনীত ও পুণিত গোধা এবং সিমেন্ট ব্যবসায়ী বিজয় পাহুজাকে ওই সব কয়লা সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছ থেকে নগদে ঘুষ নেওয়ার সময়ে ভোপালে আজ ভোরে হাতেনাতে ধরে ফেলে সিবিআই। প্রসঙ্গত, পাহুজা গোধাদেরই বাণিজ্য সহযোগী। বিনীত এক সময়ে ছিলেন মধ্যপ্রদেশ রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র। এই তিন জনকেই আজ ভোপালে বিশেষ অতিরিক্ত দায়রা বিচারপতি বি বি শুক্লের আদালতে হাজির করা হয়। তাঁদের নয়াদিল্লির আদালতে হাজিরা দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতে নিজেদের হেফাজতে রাখার আর্জি জানায় সিবিআই। আগামী ৪ অগস্ট পর্যন্ত ওই হেফাজতে তাঁদের রাখা যাবে বলে এ দিন রায় দিয়েছে আদালত।

সিবিআই জৈনের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের করেছে। একটি হল, অপরের সঙ্গে যোগসাজশে (এ ক্ষেত্রে ২ শ্যালক) ৫০ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়া। অন্য মামলাটি হল নিজের সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইন ভেঙে কয়েকটি সংস্থাকে বাড়তি ঋণ পাইয়ে দেওয়া। সরকারি সূত্রের দাবি, গোধা ভাইদের সঙ্গে যোগসাজশে নগদে ঘুষ কাণ্ডে যুক্ত হন জৈন। ভোপালের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পবন বনশল কয়লা সংস্থাগুলির সঙ্গে চূড়ান্ত লেনদেন পর্ব সেরে ফেলতেন। বড়সড় কর্পোরেট সংস্থায় ঋণ দেওয়ার ব্যবসা করার জন্য তিনি খুলেছিলেন নিজস্ব সংস্থা। পাশাপাশি, সিন্ডিকেট ব্যাঙ্ক-কর্তাকে ঘুষ দেওয়ার জন্য অন্যতম অভিযুক্ত সংস্থা ভূষণ স্টিল জনৈক পুরুষোত্তম টোটলানির সহায়তা নিত। টোটলানি ওই অর্থ তুলে দিত জৈনের আত্মীয় ও সহায়ক বিনীতের হাতে।

সিবিআই তার এফ আই আরে যে-সব ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন: ভূষণ স্টিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর নীরজ সিংগল, প্রকাশ ইন্ডাস্ট্রিজ-এর চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর বেদ প্রকাশ অগ্রবাল, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট পবন বনশল, জৈনের দুই আত্মীয় বিনীত ও পুণিত গোধা, সিমেন্ট ব্যবসায়ী বিজয় পাহুজা, পুরুষোত্তম টোটলানি এবং পঙ্কজ বনশল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন