সিরিয়ার মাটিতে আছড়ে পড়া মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র শুক্রবার কাঁপন ধরাল বিশ্ব বাজারের বুকে।
দুনিয়া জুড়ে শেয়ার বাজারে এ দিন ধস নামেনি ঠিকই। কিন্তু আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার অনেক বাজারের মুখই ছিল নীচের দিকে। অন্তত ভারতীয় সময় অনুযায়ী সন্ধ্যেবেলা পর্যন্ত। যার অন্যতম কারণ বিশ্ব রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার উপর আঘাত হানতেই বিশ্ব বাজারে মাথাচাড়া দিয়েছে অশোধিত তেলের দামও।
যুদ্ধের আঁচ এ দিন ২২০.৭৩ পয়েন্ট টেনে নামিয়েছে সেনসেক্সকে। বুধবার যা ৩০ হাজারের মাইলফলক ছুঁয়েছিল। বাজার বন্ধের সময় তা দাঁড়িয়েছে ২৯,৭০৬.৬১ অঙ্কে। সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিনে ৬৩.৬৫ পয়েন্ট খুইয়ে ৯,১৯৮.৩০ অঙ্কে থিতু হয়েছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্টিও।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সিরিয়ায় মার্কিন হানা শুরু এ দিন অন্তত এ দেশের বাজারে পতনের একমাত্র কারণ নয়। সূচককে টেনে নামিয়েছে চড়া বাজারে লাভের কড়ি ঘরে তুলতে শেয়ার বেচার হিড়িকও।
আশঙ্কা
•
সেনসেক্স ২২০.৭৩
(ভারত)
•
নিফ্টি ৬৩.৬৫
(ভারত)
•
ডাও জোন্স ২৬.৮৮
(আমেরিকা)
•
ন্যাসডাক ১৩.২১
(আমেরিকা)
•
এনওয়াইএসই ১৬.৬০
(আমেরিকা)
•
এফটিএসই ১০০ ৩০.৩২
(লন্ডন)
•
ড্যাক্স ৪০.৫৫
(জার্মানি)
•
নিক্কেই ৬৭.৫৭
(জাপান)
•
হ্যাংসেং ৬.৪২
(হংকং)
•
কসপি ১.০২
(দক্ষিণ কোরিয়া)
•
সাংহাই কম্পোজিট ৬.০২
(চিন)
তথ্যসূত্র: রয়টার্স
৩০ হাজারের শৃঙ্গ থেকে সেনসেক্স বেশ কিছুটা পিছলে গেলেও বাড়ার দৌড় অব্যাহত রেখেছে টাকার দর। শুক্রবার ডলারের সাপেক্ষে তার দাম বেড়েছে ২৪ পয়সা। দিনের শেষে ডলার দাঁড়িয়েছে ৬৪.২৮ টাকায়। গত ২০ মাসের মধ্যে টাকার এই বিনিময়মূল্যই সবচেয়ে বেশি।
সূচকের পতনে ইন্ধন জুগিয়েছে ‘হেভিওয়েট’ রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দরের পতনও। গতকালই মুকেশ অম্বানীর টেলি পরিষেবা সংস্থা জিও-কে তিন মাসের নিখরচার পরিষেবা বন্ধ করতে বলেছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক ট্রাই। মূলত তার জেরে এ দিন রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের দর পড়েছে প্রায় ২ শতাংশ। যার প্রভাব পড়েছে সেনসেক্স ও নিফ্টির উপর।
তা ছাড়া, সম্ভাবনা কম থাকলেও অনেকের ক্ষীণ আশা ছিল, সুদ কমাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই আশা পূরণ না হওয়াতেও অখুশি ছিল বাজার।
আরও পড়ুন:হঠাৎই বিপরীত হাওয়া, সিরিয়ায় ‘মুখোমুখি সমরে’ আমেরিকা আর রাশিয়া
রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার-সহ নানা কারণে অনেক দিন ধরেই সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তেতো হয়ে রয়েছে আমেরিকার। তার উপর ট্রাম্প হানার হুমকি দিচ্ছিলেনই। তাই এই ক্ষেপণাস্ত্র হানা একেবারে আচমকা নয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, তা সত্ত্বেও এর দরুন বিশ্ব রাজনীতি ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠার সম্ভাবনা শঙ্কিত করেছে দুনিয়াকে। বাজারকে ভাবিয়েছে তেলের দর আবার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ইঙ্গিতও। তার প্রভাবই এ দিন বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারের উপর দেখা গিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।