মাইক্রোসফট-টাটা মোটরস জোট

গাড়িতে চেপে গন্তব্যে যাওয়ার সময়ে রাস্তার অবস্থা কেমন, তার আগাম তথ্য জেনে নেওয়া। কিংবা খুঁটিনাটি তথ্য বিশ্লেষণ করে গাড়ির স্বাস্থ্যের হাল হকিকত বোঝা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৯
Share:

বুশেক ও মাহেশ্বরী। ছবি: পিটিআই।

গাড়িতে চেপে গন্তব্যে যাওয়ার সময়ে রাস্তার অবস্থা কেমন, তার আগাম তথ্য জেনে নেওয়া। কিংবা খুঁটিনাটি তথ্য বিশ্লেষণ করে গাড়ির স্বাস্থ্যের হাল হকিকত বোঝা। এককথায়, তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরে গাড়ির সঙ্গে ব্যক্তির সংযোগ আরও জোরদার করা। সার্বিক ভাবে গাড়িতে এ ধরনের নানা পরিষেবার মেলবন্ধনের লক্ষ্যে মাইক্রোসফট-এর সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধল টাটা মোটরস। সেই সুযোগ-সুবিধা সমেত প্রথম গাড়িটি তারা প্রথম প্রদর্শন করবে জেনিভায় আসন্ন আন্তর্জাতিক গাড়ি প্রদর্শনীতে।

Advertisement

ক’বছর আগেও এ দেশে গাড়ি বলতে বোঝাত দ্রুত যাতায়াতের মাধ্যম। বিদেশের গাড়ি অবশ্য সেই গণ্ডি আগেই ছাড়িয়েছে। ভারতেও দামি গাড়ির বাজারে আসছে সেই সব ধারণা। যেখানে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই বদলাচ্ছে চাহিদাও। যেমন গাড়ির অবস্থান, গতিবিধি, আলো নিয়ন্ত্রণ, ব্যাটারি, জ্বালানি বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার তথ্য জানতে ২০১৩-র পরে তৈরি হওয়া গাড়িতে ‘অন বোর্ড ডায়াগনস্টিক পোর্ট’ (ওবিডি পোর্ট) থাকে। মূলত ‘ইন্টারনেট অব থিংগ্‌স’-এর উপর ভর করে বিভিন্ন সফটওয়্যার সংস্থা সেই তথ্য বিশ্লেষণ সংক্রান্ত পরিষেবার ব্যবসা করে। তবে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাড়ি সংস্থার কোনও যোগ নেই।

Advertisement

বস্তুত, গাড়ি বিক্রির সময়েই আগামী দিনে এ ধরনের সার্বিক পরিষেবা দিতে সেই পরিসরে পা রাখতে চায় টাটা মোটরস। সেই কারণেই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে অন্যতম পুরোধা মাইক্রোসফট-এর হাত ধরা। টাটা মোটরস-এর এমডি গুন্টার বুশেকের কথা থেকেও তা স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সংযোগের একটা সার্বিক পরিবেশ ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে চাই। তাই মাইক্রোসফট-এর ‘অ্যাজিওর ক্লাউড’ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাইছি।’’ মাইক্রোসফট-ইন্ডিয়া-র প্রেসিডেন্ট অনন্ত মাহেশ্বরী বলেন, ‘‘আমরা ভারত তথা বিশ্বের গাড়ি চালানোয় নিরাপত্তা ও আনন্দের অনুভূতি পৌঁছে দিতে চাই।’’

সম্প্রতি টাটা মোটরস একটি আলাদা ব্র্যান্ড টামো বাজারে আনার কথা জানিয়েছে। এই নতুন প্রযুক্তি ও পরিষেবা-যুক্ত গাড়ি গোড়ায় সেই ব্র্যান্ডের আওতাতেই তৈরি হবে। ২০১৯-এ টামো বাজারে আসার কথা। তার আগে আগামী ৭ মার্চ, জেনিভা-র মোটর-শো-তে এ ধরনের একটি গাড়ি প্রদর্শন করবে তারা।

তাদের দাবি, মাইক্রোসফট-এর ‘অ্যাজিওর ক্লাউড’ প্রযুক্তি নানা সুবিধার দরজা খুলে দিতে পারে গাড়ির মালিকের কাছে। যেমন গাড়ির স্বাস্থ্যের খবর আগাম খবর পৌঁছবে তাঁর কাছে। তিনি সেই বিশ্লেষণ অনুযায়ী হয় আগাম গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণে জোর দেবেন বা গাড়ির চলার পথেই প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন। গাড়ির মালিকদের ‘প্রোফাইল’ ও অবস্থানের তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁদের পছন্দের বিষয় বা কেনাকাটা এবং রাস্তায় গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে সহায়তার আগাম বার্তা পৌঁছে দেওয়া হবে। তেমনই চলার সময়ে রাস্তার তথ্য বিশ্লেষণ করে বার্তা দেওয়ায় চালক ইচ্ছে করলে পথ অবরোধ বা খারাপ রাস্তা এড়াতে পারবেন।

টাটা সন্স এবং টাটা গোষ্ঠী থেকে অপসারণের পরে সাইরাস মিস্ত্রি প্রশ্ন তুলেছিলেন টাটা মোটরস-এর অবস্থা নিয়ে। কাকতালীয় হলেও নতুন গাড়ি, ব্র্যান্ড, প্রযুক্তি এনে হারানো বাজারে ঘুরে দাঁড়াতে সচেষ্ট টাটা মোটরস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন