এ বার অ্যাপেই ভরসা চা পর্ষদের

আবহাওয়ার হাল-হকিকৎ সম্পর্কে আগাম জানানো হোক বা সরকারি প্রকল্পে সুযোগ-সুবিধার খোঁজ খবর কিংবা চা গাছ রক্ষার পরামর্শ। এই সমস্ত কাজে এ বার মোবাইল অ্যাপের উপরেই ভরসা করতে চায় টি বোর্ড।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০১:২২
Share:

আবহাওয়ার হাল-হকিকৎ সম্পর্কে আগাম জানানো হোক বা সরকারি প্রকল্পে সুযোগ-সুবিধার খোঁজ খবর কিংবা চা গাছ রক্ষার পরামর্শ। এই সমস্ত কাজে এ বার মোবাইল অ্যাপের উপরেই ভরসা করতে চায় টি বোর্ড। লক্ষ্য, চা শিল্পের উন্নয়নে আরও জোরদার গতি আনা। আর প্রযুক্তির হাত ধরে সেই পথকে আরও কিছুটা সহজ ও দ্রুত করে তোলা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কাছে। ঠিক যে পথে এখন হাঁটতে চাইছে প্রায় সব শিল্পই।

Advertisement

ওই অ্যাপ তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই দরপত্র আহ্বান করেছে বোর্ড। তাদের দাবি, ওই অ্যাপের মাধ্যমে চা শিল্পের জন্য আনা নানা ধরনের প্রকল্পের তথ্য পৌঁছে দেওয়া যাবে বাগানগুলিতে। পাশাপাশি বাগানের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য প্রয়োজন মতো নজরদারিও চালাতে পারবে তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বোর্ডের মাধ্যমে সরকারি নানা প্রকল্পের সুবিধাগুলি সব সময় ঠিক মতো চা চাষি-সহ সব স্তরে পৌঁছয় না। অনেকেই এ জন্য প্রশাসনিক দক্ষতার অভাবের অভিযোগ তোলেন। চা শিল্পের বিরুদ্ধেও উদাসীনতার পাল্টা অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি বাগানে সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত তা বোর্ডের সামনে তুলে ধরতে পারে না অনেক বাগান। বিশেষ করে সমস্যা হয় ক্ষুদ্র

Advertisement

চাষিদের। অভিযোগ ওঠে, কোন কীটনাশক নিষিদ্ধ হয়েছে তা জানা না থাকায়, তা অনেকেই তাঁদের বাগানে ছড়ান। ফলে আখেরে চায়ের গুণগত মানের ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

এ বার অ্যাপ (অ্যান্ড্রয়েড ফোন ভিত্তিক) দিয়েই সব কিছুকে এক ছাতার তলায় এনে সমস্যা সমাধানের কৌশল ছকেছে বোর্ড। ইতিমধ্যেই সরেজমিনে বাগানের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ‘জিপিএস’ ভিত্তিক সমীক্ষা চালু করেছে তারা।

বস্তুত, টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনও আলাদা করে এই ধরনের অ্যাপ চালু করেছে। সম্প্রতি কফি চাষের উন্নতির লক্ষ্যে দু’টি অ্যাপ চালু করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। সেই পথেরই শরিক হতে চায় টি বোর্ড।

সূত্রের খবর, বাগানে কীটপতঙ্গ হানা দিলে বা চা গাছে কোনও রোগ হলে, বাগান কর্তৃপক্ষ বা ক্ষুদ্র চা চাষি প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে সেই ছবি তুলে ওই অ্যাপ মারফত যাতে বোর্ডের কাছে পাঠাতে পারেন তার ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে দরপত্রে। আবার আবহাওয়ার মতো চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জরুরি তথ্যের খুঁটিনাটিও দ্রুত অ্যাপের মাধ্যমে বাগান ও ক্ষুদ্র চাষিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। বিশেষ করে বিশ্ব জুড়েই যেখানে উষ্ণায়নের জন্য দ্রুত বদলাচ্ছে আবহাওয়া। অনেকেই বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের তথ্য দ্রুত না পেলে চাষের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। উৎপাদন মার খায়। সাইট বা সরকারি বিজ্ঞপ্তির চেয়ে অ্যাপে মুহূর্তের মধ্যেই সেই তথ্য বাগানে পৌঁছনো যাবে বলে মনে করছে বোর্ড।

স্বাভাবিক ভাবেই বোর্ডের এই উদ্যোগে খুশি ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠন সিস্টা। তাদের প্রেসিডেন্ট বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এটি চালু হলে ক্ষুদ্র চাষিরা উপকৃত হবেন।’’

বড় বাগানগুলি সাধারণত অনেক বেশি খবর রাখে। কিন্তু মোবাইল অ্যাপ চালু হলে তাঁদেরও আরও সুবিধা হবে, বলছেন ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়শনের সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন