নগদ তোলায় উৎসে কর, ছাড় চায় চা শিল্প 

ব্যাঙ্ক থেকে বিপুল নগদ তোলায় রাশ টানার লক্ষ্যেই উৎসে করের এই প্রস্তাব। কিন্তু আইটিএ-র সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহার দাবি, নানা প্রয়োজন মেটাতে বাগান কর্তৃপক্ষ বিপুল অর্থ ব্যাঙ্ক থেকে আগেভাগে নগদে তুলে রাখতে বাধ্য হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০২:২১
Share:

সদ্য পেশ হওয়া বাজেটে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে বছরে ১ কোটি টাকার বেশি নগদে তুললে ২% উৎসে কর (টিডিএস) কাটার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে চা শিল্প। তাদের দাবি, বহু বাগান এলাকায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা তেমন পোক্ত না হওয়ায়, শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার মতো হাজারো প্রয়োজন মেটাতে ১ কোটির অনেক বেশি টাকা ব্যাঙ্ক থেকে নগদে তুলে রাখতে হয়। ফলে এই নতুন নিয়ম বাগানগুলির ঘাড়ে বাড়তি বোঝা চাপাবে। বিশেষত অনেকেই যেখানে এখন আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে চলেছে। যে কারণে তড়িঘড়ি বিষয়টিতে ছাড় চেয়ে কেন্দ্রীয় অর্থ সচিবের কাছে চিঠিও দিয়েছে ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (আইটিএ)। তাদের দাবি, ছাড় না পেলে আর্থিক সমস্যায় পড়তে পারে শিল্প। নির্মলা অবশ্য কিছু ব্যবসায় বিপুল নগদের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ছাড় দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

Advertisement

ব্যাঙ্ক থেকে বিপুল নগদ তোলায় রাশ টানার লক্ষ্যেই উৎসে করের এই প্রস্তাব। কিন্তু আইটিএ-র সেক্রেটারি জেনারেল অরিজিৎ রাহার দাবি, নানা প্রয়োজন মেটাতে বাগান কর্তৃপক্ষ বিপুল অর্থ ব্যাঙ্ক থেকে আগেভাগে নগদে তুলে রাখতে বাধ্য হন। কারণ, অধিকাংশ বাগানের আশেপাশেই ব্যাঙ্ক নেই। নেই এটিএম-ও। আবার নির্দিষ্ট দিনে কর্মী ও শ্রমিকদের মজুরিও দিতে হয়। যা এই মুহূর্তে নগদে মেটানো ছাড়া উপায় নেই। পরিসংখ্যান বলছে, উত্তরবঙ্গ ও অসম মিলিয়ে এ ভাবে বছরে প্রায় ৮,০০০ কোটি টাকা তুলতে হয় চা শিল্প মহলকে।

কিন্তু নোট বাতিলের পরে তো সমস্ত চা কর্মী ও শ্রমিকের জন্য অ্যাকাউন্ট খোলার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার, মনে করাচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল। তা মানছে আইটিএ-ও। কিন্তু তাদের দাবি, অনেক জায়গাতেই দুর্বল ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য এটিএম চালু হয়নি। ফলে শ্রমিকেরা তাতে উৎসাহী হন না। এ ছাড়া, গ্রাম থেকে আসা বহু অস্থায়ী শ্রমিকও বাগানে কাজ করেন। তাঁরা এখনও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আওতার বাইরে থাকায় নগদেই মজুরি নিতে চান।

Advertisement

এ দিকে, বাজেটে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য বরাদ্দ প্রায় ২১% বাড়ানো হলেও, চা শিল্পের জন্য তেমন কিছু নেই বলে ক্ষুব্ধ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বণিক সংগঠন ফাইনার। তাদের দাবি, এই শিল্প অত্যন্ত খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বড় মাপের বহু চা সংস্থা অসম থেকে পাততাড়ি গুটোচ্ছে। মানুষ কাজ হারাচ্ছেন। এই অবস্থায় চা শিল্পে কেন্দ্রীয় সাহায্য অনেক বেশি প্রয়োজন ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন