নোট বাতিলের পরে বেকারত্বের মাথা চাড়া দেওয়ার রিপোর্ট আগেই ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। এ বার সেই কর্মসংস্থান, আর্থিক বৃদ্ধি ও আয় সংক্রান্ত সংসদীয় এস্টিমেটস কমিটির রিপোর্টও বিজেপি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠল। তিন মাসে কমিটির বৈঠক ডাকা হয়নি।
নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের জমানায় কোণঠাসা, বিজেপির মার্গদর্শক মণ্ডলীর সদস্য মুরলী মনোহর জোশীর নেতৃত্বে এস্টিমেটস কমিটি ‘আর্থিক বৃদ্ধি, চাকরির সংখ্যা, আয়ের পরিমাপ’ নিয়ে রিপোর্ট তৈরির কাজ করছিল। সূত্রের খবর, খসড়া রিপোর্ট মোদী সরকারের পক্ষে সুখকর ছিল না। রিপোর্ট যাতে চূড়ান্ত হতে না পারে, তার জন্য বিজেপি সাংসদেরা গত অক্টোবরে এস্টিমেটস কমিটিতে আপত্তি তুলেছিলেন। ঠিক হয়েছিল, কয়েকদিনের মধ্যে ফের বৈঠক ডেকে রিপোর্ট চূড়ান্ত হবে। কিন্তু তার পরে তিন মাস কেটে গেলেও এক বারও কমিটির বৈঠক ডাকা হয়নি। আজ কমিটির সদস্য, সিপিএমের সাংসদ মহম্মদ সেলিম এ নিয়ে জোশীকে চিঠি লিখেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সরকারের তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্য পূরণ করতে গিয়ে সংসদীয় ব্যবস্থায় ধাক্কা লাগছে।’’ প্রতিষ্ঠানের রক্ষায় জোশীও নিজের ভূমিকা পালন করতে পারেননি বলে সেলিম তাঁকে চিঠিতে জানিয়েছেন।
কিছুদিন আগেই বেকারত্বের হার নিয়ে জাতীয় নমুনা সমীক্ষা সংস্থার রিপোর্ট ফাঁস হয়ে গিয়েছে। যাতে দেখা গিয়েছে, মোদীর নোট বাতিলের পরে বেকারত্বের হার তুঙ্গে উঠেছে। জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশনের অনুমোদন সত্ত্বেও সেই রিপোর্ট প্রকাশ করেনি পরিসংখ্যান মন্ত্রক। নরেন্দ্র মোদী বলছেন, দেশে চাকরি হচ্ছে। কিন্তু তার হিসেব নেই। কেন হিসেব নেই, এস্টিমেটস কমিটির রিপোর্টে তার জন্য সরকারের দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে। খসড়া রিপোর্টে বলা হয়, চাকরি বা আয় নিয়ে ২০১৭-১৮-তে সরকারের নীতি তৈরি হচ্ছে ২০১১-১২-র হিসেবের ভিত্তিতে। রুটি-রোজগার নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলে সরকারের নীতি তৈরি হচ্ছে কী ভাবে? সরকার কীসের ভিত্তিতে সাফল্যের দাবি করছে? বিরোধীদের অভিযোগ, অর্থ মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটি, নারদ-তদন্তে এথিক্স কমিটির কাজেও একই ভাবে বাধা তৈরি করা হয়েছে।
এর আগে বৃদ্ধি নিয়েও হিসেবের পদ্ধতি বদলে অর্থনীতির বহর ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে।