টাটাদের ব্যবসাকে বাঁচিয়ে রেখে ব্রিটেনের ইস্পাত শিল্পকে ঘুরে দাঁড়ানোর রসদ জোগাতে তৎপর ডেভিড ক্যামেরনের সরকার। কিন্তু এ বার তাদের ভয় ধরেছে যে, এর ফলে ব্রিটেনবাসীরা সরকারের থেকে অনেক বেশি আশা করে বসতে পারেন। যে-কারণে বুধবারই পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, শত চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁরা দেশের ইস্পাত শিল্পকে চাঙ্গা করতে যে সফল হবেনই, এমন নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না।
একই সঙ্গে টাটা স্টিলের ব্যবসা বিক্রি ও কর্মী ছাঁটাই রোখার চেষ্টা নিয়েও খানিকটা সতর্ক তিনি। তাঁর মুখপাত্র এ দিন বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বিষয়টিতে বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই এগোতে চাইছেন। কারণ গোটা প্রক্রিয়াটি বেশ কঠিন। তবে আমাদের পক্ষে যা যা করা সম্ভব, তার সব কিছুই করছি।’’
ব্রিটেনে টাটা স্টিলের ব্যবসা যাতে বন্ধ না-হয়, সে জন্য উপযুক্ত ক্রেতা খুঁজতে সরকার সাধ্য মতো চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন ক্যামেরন। বলেছেন, ভারতীয় ইস্পাত বহুজাতিক দেশ ছাড়লেও কারখানা খোলা থাকার ব্যবস্থা করে বহু লোকের বেকার হওয়া আটকাতে দায়বদ্ধ তাঁরা। মঙ্গলবার ব্রিটেনের বৃহত্তম ইস্পাত কারখানা, টাটাদের পোর্ট ট্যালবটে এসেছিলেন তিনি। লক্ষ্য ছিল, সমস্যা সরেজমিনে বুঝে নেওয়া ও কারখানা চালু রাখা নিয়ে টাটার পদস্থ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলা।
তবে বুধবার ক্যামেরনের দাবি, ব্রিটেন জুড়ে এক ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছে ইস্পাত শিল্প। চিন থেকে আসা সস্তার পণ্যে দেশ ছেয়েছে। উপচে পড়ছে জোগান। অথচ চাহিদা নেই। ফলে চূড়ান্ত মার খেয়ে পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে ব্যবসায়ীদের। ঠিক যে-কারণ দর্শিয়ে ব্রিটেনে ব্যবসা গোটানোর কথা জানিয়েছে টাটা স্টিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে ইস্পাত শিল্পকে চাঙ্গা করতে সরকার চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না। কিন্তু সাফল্য যে মিলবেই তার নিশ্চয়তা নেই।’’
ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে না-বেরিয়ে যাবে, তা নিয়ে জুনেই গণভোট। তাই লোকসানে পর্যুদস্ত টাটারা ব্যবসা গোটালেও, সংস্থার কারখানাগুলিতে যাতে তালা না-ঝোলে তা নিশ্চিত করতে চাইছে ক্যামেরন সরকার। যা সম্ভব হলে ব্রিটেনের ইস্পাত শিল্প অন্তত কিছুটা অক্সিজেন পাবে। আর গণভোটের আগে কিছুটা মুখ রক্ষা হবে সরকারেরও।