সঞ্চয়ের জায়গা হিসেবে জাতীয় পেনশন প্রকল্পকে (ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম বা এনপিএস) আকর্ষণীয় করতে সেখানে করছাড়ের সুবিধা বাড়াচ্ছে কেন্দ্র।
এমনিতে অবসরের পরে এই প্রকল্প থেকে অ্যানুইটি কিনতে বাধ্যতামূলক ভাবে ঢালা ৪০ শতাংশের উপর করছাড় মেলে। বাকি ৬০ শতাংশে পাওয়া যায় না। কিন্তু বাজেটে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, এ বার থেকে অবসরের পরে কোনও গ্রহীতা নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে তোলা টাকার ২৫ শতাংশের উপরেও করছাড়ের সুবিধা পাবেন।
তা ছাড়া, এত দিন চাকরিজীবী এবং স্বনিযুক্তদের মধ্যে করছাড়ের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা বৈষম্য ছিল। যা মেটানোরও চেষ্টা হয়েছে বাজেটে।
এই পেনশন প্রকল্পে চাকরিজীবীরা তাঁদের বেতনের ১০% পর্যন্ত কাটাতে পারেন। তেমনই নিয়োগকারী দিতে পারেন আরও ১০%। ফলে মোট রোজগারের ২০% পর্যন্ত এই প্রকল্পে কাটানোর সুবিধা আছে। কিন্তু স্বনিযুক্তরা এর জন্য জমা করতে পারতেন নিজেদের মোট রোজগারের ১০% পর্যন্ত। ফলে অবসরের জন্য সঞ্চয়ের এই প্রকল্পে টাকা জমিয়ে কর বাঁচানোর সুবিধা তুলনায় কিছুটা কম পেতেন তাঁরা। সেই বৈষম্য দূর করতে এ বার বাজেটে জেটলি ঘোষণা করেছেন, যাঁরা চাকরিজীবী নন, এই প্রকল্পে এখন থেকে নিজেদের মোট রোজগারের ২০% পর্যন্ত জমা দিতে পারবেন তাঁরা।
জাতীয় পেনশন প্রকল্পে লগ্নি করতে পারেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী, রাজ্য সরকারি কর্মী, বেসরকারি সংস্থার কর্মী-সহ প্রায় সকলে। এতে দু’ধরনের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করা যেতে পারে। টিয়ার-১ এবং টিয়ার-২ অ্যাকাউন্ট। এর মধ্যে দ্বিতীয়টি মূলত টাকা জমানোর সেভিংস অ্যাকাউন্ট। এখান থেকে যখন খুশি টাকা তোলা যায়। করছাড়ের সুবিধাও এখানে নেই। কিন্তু টিয়ার-১ অ্যাকাউন্ট থেকে পুরো টাকা তোলা যায় অবসর, চাকরি ছাড়া কিংবা গ্রহীতার মৃত্যুর ক্ষেত্রে। জাতীয় পেনশন প্রকল্পে টাকা রাখা বলতে আমরা মূলত এই অ্যাকাউন্টকেই বুঝি।
এনপিএসে যোগ দেওয়ার বয়স ১৮ থেকে ৫৫। বছরে ন্যূনতম জমা ১,০০০ টাকা। টাকা খাটে মূলত শেয়ার, সরকারি ঋণপত্র, কর্পোরেট বন্ড ইত্যাদিতে।
গ্রহীতার মৃত্যু হলে, পুরো টাকাই একলপ্তে তাঁর নমিনির হাতে আসে। চাকরি ছাড়লে, ২০% টাকা থোক হাতে পাওয়া যায়। অ্যানুইটি কিনতে হয় বাকি ৮০% দিয়ে। আর অবসরের পরে তহবিলের অন্তত ৪০% টাকা দিয়ে অ্যানুইটি কিনতে হয়। বাকি ৬০% পাওয়া যায় হাতে। প্রতি ক্ষেত্রেই পেনশন মেলে ওই অ্যানুইটি থেকে।