ছোটকে ঋণের অনুপাত কম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেই

বৃহস্পতিবার সিডবি ও সিবিলের যৌথ রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত বছর ডিসেম্বরের হিসেব অনুযায়ী, ছোট সংস্থাগুলি যে ঋণ পেয়েছে তার ৩৯% এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি থেকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা 

মুম্বই শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫৭
Share:

ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে ঋণে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা অনেক দিন ধরেই বলছে কেন্দ্র। তাদের জন্যই ঢাকঢোল পিটিয়ে চালু হয়েছে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে ৫৯ মিনিটের মধ্যে প্রাথমিক সম্মতির প্রকল্প। গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। কিন্তু সিডবি এবং ট্রান্সইউনিয়ন সিবিলের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এত কিছুর পরেও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি থেকে ছোট সংস্থাগুলির ঋণের জোগানের বিশেষ উন্নতি হয়নি। বরং গত পাঁচ বছরে ছোট ব্যবসাকে দেওয়া ঋণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অনুপাত কমেছে। মন্দের ভাল বেসরকারি ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি (এনবিএফসি)। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ায় কেন্দ্র কিছুটা অস্বস্তিতে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সিডবি ও সিবিলের যৌথ রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত বছর ডিসেম্বরের হিসেব অনুযায়ী, ছোট সংস্থাগুলি যে ঋণ পেয়েছে তার ৩৯% এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি থেকে। অথচ ঠিক পাঁচ বছর আগেও তা ছিল ৫৮%। এই সুযোগে বাজার কিছুটা বাড়িয়েছে বাড়িয়েছে বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি। পাঁচ বছরে ওই ক্ষেত্রে তাদের ঋণের ভাগ ২২% থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৩%। সুযোগ কাজে লাগিয়েছে এনবিএফসি। তাদের ঋণের ভাগ ১৩% থেকে বেড়ে হয়েছে ২১%। রিপোর্টে অবশ্য ঋণের আর্থিক হিসেব বলা হয়নি।

নোটবন্দি এবং তার পরে তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর ফলে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে ছোট ও মাঝারি ব্যবসা। জোড়া ধাক্কায় ওই ক্ষেত্রের বড় অংশ যে ক্ষুব্ধ, তা ভালই বুঝেছিল মোদী সরকার। তার উপরে এই ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হয়। ফলে তাদের ক্ষোভে জল ঢালতে তৎপর হয়েছিল কেন্দ্র। ছোট ব্যবসাকে বেশি করে ঋণ জোগাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। ব্যবসা শুরু করার জন্য ঋণ দিতে চালু হয়েছিল মুদ্রা যোজনা। কিন্তু তাতেও যে ঋণে জোয়ার আসেনি, রিপোর্টে তা স্পষ্ট।

Advertisement

কিন্তু ছোট সংস্থাগুলিকে পুঁজি জোগাতে সমস্যা কোথায়?

রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে অনাদায়ি ঋণের বোঝা ক্রমাগত ভারী হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি ব্যাঙ্কের উপরে কড়াকড়িও (প্রম্পট কারেকটিভ অ্যাকশন) চাপিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সব মিলিয়ে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ছোট সংস্থার ঋণের উপরেও। তবে অদূর ভবিষ্যতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি ছোট ব্যবসাকে ঋণ দেওয়া বাড়াতে পারবে বলে আশাপ্রকাশ করা হয়েছে রিপোর্টে।

টাকার অঙ্কের হিসেবে এমনিতে গত পাঁচ বছরে বার্ষিক ১৯.৩% করে বেড়েছে ছোট সংস্থাগুলির ঋণ। তবে অনুৎপাদক সম্পদের এখন যা পরিস্থিতি, তাতে এই ঋণের উপরেও সতর্ক নজর রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন সিবিলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সতীশ পিল্লাই।

ঋণ বৃদ্ধি: গত ২৯ মার্চ পর্যন্ত ১৫ দিনে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির দেওয়া ঋণের অঙ্ক ৯৭.৬৭ লক্ষ কোটি টাকা। যা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ১৩.২৪% বেশি। একই সময়ে আমানত জমা পড়েছে ১২৫.৭২ লক্ষ কোটি টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন