ফেব্রুয়ারিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হবে। —প্রতীকী চিত্র।
ব্রিটেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিতে আজ সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। কিন্তু আমেরিকার আলোচনার গতিমুখ পাঁচ দফা বৈঠকের পরেও স্পষ্ট নয়। এ বার এক সরকারি সূত্র জানাল, ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত সময়সীমা, অর্থাৎ ১ অগস্টের আগে অন্তর্বর্তী চুক্তির সম্ভাবনা কার্যত নেই। ঠিক যে আশঙ্কা করছিল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল। অগস্টের দ্বিতীয়ার্ধে আমেরিকার প্রতিনিধি দল ভারতে আসতে পারে। তার আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর পূর্ব ঘোষণা মতো আমদানি শুল্ক কার্যকর করে দেবেন কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় ওয়াশিংটনও।
এই আবহে ভারতীয় রফতানি শিল্পের উপর নতুন করে চেপে বসেছে আশঙ্কা। রফতানি সংস্থাগুলির সংগঠন ফিয়ো-র ডিরেক্টর জেনারেল অজয় সহায়ের সতর্কবার্তা, আমেরিকা আগের প্রস্তাব মতো ভারতের উপরে ২৬% শুল্ক কার্যকর করে দিলে বাণিজ্য ধাক্কা খাবে। রত্ন এবং গয়নার মতো ক্ষেত্র সবচেয়ে সমস্যায় পড়বে।
গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের উপরে আমদানি শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। ভারতীয় পণ্যে সেই হার ছিল ২৬%। তবে তা চালু করার সময় দু’বার পিছিয়ে ১ অগস্ট করেছেন তিনি। এরই মধ্যে দিল্লি এবং ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, আমেরিকা দাবি করলেও ভারত কৃষি এবং দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার খুলতে রাজি নয়। আবার ভারত ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং গাড়ির শুল্ক কমানোর ব্যাপারে জোর দিলেও রাজি নয় আমেরিকা। দু’পক্ষই এই জায়গায় কট্টর মনোভাব দেখানোয় আটকে যাচ্ছে আলোচনা।
ওই সূত্রটির কথায়, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ১ অগস্টের আগে অন্তর্বর্তী চুক্তি হওয়া কঠিন। আমেরিকার সঙ্গে কথা অবশ্য অব্যাহত রয়েছে।’’ প্রায় ২০টি দেশকে ইতিমধ্যেই শুল্কের চিঠি পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ভারত সেই তালিকায় নেই। সে কথা উল্লেখ করে দ্বিতীয় একটি সরকারি সূত্রের বক্তব্য, ‘‘যে সমস্ত জায়গায় একমত হওয়া যাচ্ছে না সেগুলিকে বাদ রেখে অন্তর্বর্তী চুক্তি করা যায় কি না, সেই চেষ্টা চলছে। অবশিষ্ট ক্ষেত্রগুলিকে নিয়ে পরে আলোচনা করা যেতে পারে।’’ অন্য একটি অংশ কিছুটা বেশি আশাবাদী। তাঁদের বক্তব্য, ফেব্রুয়ারিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হবে। সেই বৈঠক হয়েছিল আমদানি শুল্ক নিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কড়া পদক্ষেপের আগে। ফলে ভারতের ক্ষেত্রে আগের ঘোষিত অবস্থান বজায় থাকবে বলেই মনে করছেন তাঁরা। কারণ, নয়াদিল্লি সবচেয়ে আগে ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তি করতে উদ্যোগী হয়েছিল।
তবে প্রশ্ন উঠছে, খোদ ট্রাম্প এখন কী ভাবছেন? তিনি কি শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা আবারও পিছোবেন? সে ব্যাপারে নিশ্চিত নন খোদ আমেরিকার রাজস্বসচিব স্কট বেসেন্ট। তিনি জানান, সেটা পুরোপুরি প্রেসিডেন্টের উপরেই নির্ভর করছে। তবে বোঝাপড়া চূড়ান্ত করার জন্য ১ অগস্টের মধ্যের এই সময় যে খুবই কম, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বেসেন্ট। সময়সীমা পিছিয়ে ১২ অগস্ট করা যায় কি না, সে ব্যাপারে তিনি চিনের বাণিজ্য প্রতিনিধির সঙ্গে কথাও বলবেন।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে