ফাইল চিত্র।
করোনা বিদায় না-নিলেও প্রতিষেধক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করছে সরকার। কিন্তু বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজকর্ম শুরু হলেও, ভারতে বিদেশি পর্যটনের দরজা খোলেনি। এ বার সেই তোড়জোড়ই শুরু হল। প্রাথমিক প্রস্তুতির জন্য সম্প্রতি পর্যটন মন্ত্রকের কর্তারা বৈঠক করলেন শিল্পমহলের সঙ্গে। বিদেশিরা বেড়াতে এলে কী কী বিধি মেনে চলতে হবে তার খসড়া তৈরি। জোর দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের নির্দিষ্ট সফরসূচি মেনে ভ্রমণে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের ইঙ্গিত, যে সব দেশ ভারতীয়দের জন্য দরজা খুলেছে, আপাতত শুধু সেখানকার নাগরিকদের পর্যটনে অনুমতি দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র।
পর্যটন শিল্পের দাবি, করোনা মানুষকে ঘরবন্দি করায় প্রথম ধাক্কা খেয়েছিল তারাই। মাস দশেক পেরিয়ে এসে সম্প্রতি স্থানীয় ভাবে কিছুটা খুলেছে পর্যটন। তবে নিজের গাড়িতে কাছেপিঠে ঘোরার ঝোঁক বেশি। ফলে পর্যটন বা গাড়ি সংস্থা ব্যবসা পাচ্ছে না। আর বিদেশি পর্যটন তো বন্ধই।
সংশ্লিষ্ট মহলের আক্ষেপ, এতদিন ধরে আয় বন্ধ থাকার মাসুল গুনতে বহু মানুষকে। তাই পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় আগামী দিনে বাজার ধরার জন্য কেন্দ্রের কাছে দ্রুত প্রস্তুতি পর্ব শুরুর আর্জি জানিয়েছিল বিদেশি পর্যটনে যুক্ত ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব টুর অপারেটর্স (আইএটিও)। তাতেই সাড়া দিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। পর্যটন মন্ত্রকের কর্তারা শিল্পমহলকে জানান, ফের বিদেশি পর্যটন চালুর জন্য স্বরাষ্ট্র এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক কিছু বিধি মেনে চলার সুপারিশ করেছে। তার ভিত্তিতে মত দিতে হবে পর্যটন শিল্পকে।
আইএটিও-র প্রেসিডেন্ট প্রণব সরকার বলেন, ‘‘শিল্প মতামত দিয়ে দিয়েছে। আশা করছি, এ বার দ্রুত তা খুলবে।’’
খসড়া প্রস্তাব
• ফের বিদেশি পর্যটকের ভারত ভ্রমণ চালু।
• তার আগে এ জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশিকা তৈরি করা।
• স্বাস্থ্য মন্ত্রকের জারি করা এবং অন্যান্য সরকারি নির্দেশিকাও মানতে হবে।
• পর্যটককে ভারতের স্বীকৃত পর্যটন সংস্থার মাধ্যমে আসতে হবে।
• তিনি কবে, কোথায়, কী ভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, সব কিছুরই নির্দিষ্ট সফরসূচি আগাম তৈরি করে সেই অনুযায়ীই ঘুরতে হবে। দিতে হবে ‘সেল্ফ ডিক্লারেশন ফর্ম’।
• ভারতে আসার আগে প্রতিষেধক নেওয়ার কিংবা করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে। তবে
দেশে আসার পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাইলে ফের পরীক্ষা করতে পারেন।
• হোটেলে দূরত্ব বিধি মানতে ঘরেই খাওয়া।
• মাস্ক পরা-সহ সমস্ত বিধি বাধ্যতামূলক ভাবে মানা।
• সফরকালে কারও করোনার কোনও উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজরে আনা।
পশ্চিমবঙ্গে আইএটিও-র চেয়ারম্যান দেবজিৎ দত্তের বক্তব্য, কিছু দিন আগেও ভারত ভ্রমণ নিয়ে বিদেশি পর্যটকদের একাংশের মধ্যে কিছুটা সংশয় ছিল। কিন্তু পরে তাঁরা বুঝেছেন, এ দেশ দক্ষ হাতে করোনাকে সামলেছে।
ভারতে বিদেশি পর্যটক
• সাধারত অক্টোবর-মার্চে আসেন।
• ২০১৯ সালে এসেছিলেন ১.১ কোটি জন।
• করোনা ধাক্কায় গত বছর থেকে সফর বন্ধ।
• ব্যবসার পুনরুজ্জীবনের জন্য দ্রুত পর্যটন ভিসা চালুর দাবি এই শিল্পের।
সূত্র পর্যটন মন্ত্রক ও শিল্প
এ বার বিদেশি পর্যটন শুরু হলে এ রাজ্যের ব্যবসা পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কারণ প্রায় সব পর্যটকেরাই এখন প্রাকৃতিক ও নিরিবিলি পরিবেশ চাইছেন। পশ্চিমবঙ্গে যে সুযোগ অঢেল। আগে সাংস্কৃতিক বিষয় প্রাধান্য পেত।
সব মিলিয়ে নতুন বছরে চাকা ঘোরার অপেক্ষায় পর্যটন শিল্প।