কারখানা বন্ধ হওয়ার পরে বছর ঘুরলেও সেই তিমিরেই উত্তরপাড়ার হিন্দুস্তান মোটরস। বুধবার শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের ডাকা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক নিষ্ফলাই থাকল। সংস্থা কর্তৃপক্ষ এ দিনও জানিয়েছেন, কারখানা খোলার মতো টাকা তাঁদের নেই। ইউনিয়নগুলির পাল্টা দাবি, এক বছরেরও বেশি কারখানা বন্ধ থাকলে ১৫০০ টাকা করে যে-বিশেষ ভাতা রাজ্য দেয়, তা চালু করা হোক। শ্রমিক নেতারা জানান, শ্রমমন্ত্রী তা নীতিগত ভাবে মেনে নিয়ে ইউনিয়নগুলিকে এ ব্যাপারে আবেদন জানাতে বলেছেন।
গত বছর ২৪ মে তালা পড়ে দেশের প্রাচীনতম যাত্রী গাড়ি কারখানায়। বার কয়েক ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হলেও মেলেনি সমাধানসূত্র। ইতিমধ্যেই হাজার খানেক কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ, ছাঁটাই করা হয়েছে প্রায় আড়াইশো ম্যানেজমেন্ট কর্মীকেও।
এ দিন শ্রমমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে কর্তৃপক্ষের পক্ষে মলয় চৌধুরী ও অসীম বসু এবং ছ’টি শ্রমিক ইউনিয়ন— আই এন টি টি ইউ সি, সিটু, আইএনটিইউসি, এসএসইউ, এসএসকেইউ এবং আইএফটিইউ-র প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ঘণ্টা-খানেকের বৈঠক শেষে প্রতিনিধিদের অভিযোগ, সংস্থার চেয়ারম্যানকে উপস্থিত থাকতে শ্রমমন্ত্রী চিঠি পাঠালেও, তিনি আসেননি। অন্য দুই কর্তাও পুরনো কথাই জানিয়েছেন। ফলে কারখানা খোলার ব্যাপারে কোনও আশার আলো দেখা যায়নি।
শ্রমমন্ত্রী অবশ্য বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে দেখা না-করলেও পরে স্পষ্টই বলেন, ‘‘কারখানা খোলার মতো টাকা সংস্থার হাতে নেই।’’ এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবেও সম্প্রতি সংস্থা জানিয়েছিল, গত কয়েক বছর ধরে তারা ভীষণ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
ইতিমধ্যেই কারখানা চাঙ্গা করার বিষয়টি বিআইএফআরে গিয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুনানিতে সংস্থার প্রতিনিধি উপস্থিত না-থাকায় তা পিছিয়ে গিয়েছে বলেই অভিযোগ ইউনিয়নগুলির। তবে মলয়বাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমরা সেখানে ছিলাম। কিন্তু বিআইএফআরের সদস্য উপস্থিত না-থাকায় শুনানি হয়নি।’’ সিটু সমর্থিত হিন্দমোটর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মণীন্দ্র চক্রবর্তীর অবশ্য অভিযোগ, রাজ্য, আইএনটিটিইউসি এবং আইএনটিইউসি-র প্রতিনিধিরাও যাননি। এই অভিযোগ অস্বীকার করেন আইএনটিটিইউসি-র উত্তম চক্রবর্তী এবং আইএনটিইউসি-র কামাখ্যা সিংহ।