ভারতেও ফোক্সভাগেন গোষ্ঠীর কিছু গাড়িকে ঘিরে সংশয়ের ছায়া। অটোমোবাইল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (এআরএআই) রিপোর্ট বলছে, জার্মান বহুজাতিকটির কিছু ডিজেল গাড়িতে দূষণের নির্ধারিত মাপকাঠি থেকে ‘উল্লেখযোগ্য বিচ্যুতি’ ধরা পড়েছে। এ জন্য সংস্থাকে নোটিস পাঠিয়ে ব্যাখ্যা তলব করছে কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রক।
বুধবার এই খবর ছড়ানোর পরে অবশ্য ফোক্সভাগেন গোষ্ঠী প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, তারা এমন কোনও ‘শো-কজ’ নোটিস পায়নি। এমনকী কেন্দ্রের কাছে পাঠানো এআরএআইয়ের রিপোর্টের বিষয়টি তাদের অজানা। পাশাপাশি, তাদের নিজস্ব তদন্ত এখনও শেষ না-হওয়ায় গাড়ি ফেরানোর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
আমেরিকায় ফোক্সভাগেনের দূষণ কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে গোটা বিশ্বেই আলোড়ন পড়েছে। এ দেশেও ফোক্সভাগেনের গাড়িতে দূষণ নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্যই এআরএআই-কে নির্দেশ দিয়েছিল ভারী শিল্প মন্ত্রক। সম্প্রতি এআরএআই সেই রিপোর্ট দিয়েছে।
মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব অম্বুজ শর্মা এবং এআরএআইয়ের ডিরেক্টর রশ্মি ঊর্ধ্বরেশে এ দিন জানান, রাস্তায় চলা ফোক্সভাগেন গোষ্ঠীর কিছু ডিজেলচালিত গাড়ির ধোঁয়া নির্গমন ব্যবস্থা পরীক্ষায় মাপকাঠি থেকে বিচ্যুতি ধরতে পেরেছে এআরএআই। গাড়িগুলি হল ফোক্সভাগেন ব্র্যান্ডের জেট্টা ও ভেন্টো, স্কোডার অক্টাভিয়া, অডি এ-৪ ও এ-৬। শর্মা বলেন, ‘‘প্রযুক্তিগত তথ্য তলব করে ব্যাখ্যা চেয়ে সংস্থাকে নোটিস পাঠাচ্ছি। তাদের ১৫-২১ দিন সময় দেওয়া হবে। মাসের শেষে জার্মানির সদর দফতর থেকে সব তথ্য মিলবে বলেই আশা করছি।’’ প্রসঙ্গত, তদন্তে এ দেশেও আইন ভাঙার প্রমাণ পেলে সংস্থার বিরুদ্ধে ‘মোটর ভেহিক্লস’ আইন অনুযায়ী জরিমানা করার পাশাপাশি ফৌজদারি আইনেও ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন শর্মা। অন্য দিকে, ঊর্ধ্বরেশে জানান, ফোক্সভাগেনের জবাব পাওয়ার পরেই তাঁরা ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা স্থির করবেন।
উল্লেখ্য, ভারতে এই গোষ্ঠী তাদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত শেষের আগে মুখ খুলতে না-চাইলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আমেরিকায় যে-ডিজেল ইঞ্জিনচালিত (ইএ-১৮৯) গাড়ির ক্ষেত্রে অভিযোগ উঠেছে, ভারতেও ফোক্সভাগেন, স্কোডা, অডি-র কিছু গাড়িতে ওই ইঞ্জিনই ব্যবহৃত হয়। এক প্রশ্নের জবাবে এ দেশে ফোক্সভাগেনের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁদের অভ্যন্তরীণ তদন্ত শেষ হয়নি। এ মাসের শেষে তা সম্পূর্ণ হতে পারে। সে কথা তাঁরা সম্প্রতি ভারী শিল্প মন্ত্রকের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকেও জানিয়েছেন।
তবে সম্প্রতি ফোক্সভাগেন জানায়, নির্দিষ্ট সময়ে তৈরি হওয়া কিছু গাড়িতে যান্ত্রিক ত্রুটি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে ভারতে ছোট গাড়ি পোলো-র বিক্রি আপাতত স্থগিত থাকছে। তাদের দাবি ছিল, এটি দূষণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত নয়। এর পরই ত্রুটিপূর্ণ হ্যান্ডব্রেকের কারণে দেশে ৩৮৯টি পোলো গাড়ি ফেরানোর কথা ঘোষণা করে তারা।