ঘরের ছেলেদের ঘরে ফেরার ডাক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে লগ্নি টানার দৌড় শুরু করল রাজস্থান।
নভেম্বরে জয়পুরে ‘রিসার্জেন্ট রাজস্থান পার্টনারশিপ সামিট’ শিল্প সম্মেলনের আয়োজন করছে রাজস্থান সরকার। যা সফল করতে দেশে ও বিদেশে রোড-শো করছে তারা। বণিকসভা সিআইআইকে সঙ্গী করে তাই কলকাতাতেও ‘রোড-শো’ করতে হাজির হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। মঙ্গলবার থেকে দু’দিন ধরে এ রাজ্যের শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তাঁর। তালিকায় আছেন সঞ্জীব গোয়েন্কা, হর্ষ নেওটিয়া, ময়াঙ্ক জালান, উমেশ চৌধুরী, আর এস অগ্রবাল, আর এস গোয়েন্কা প্রমুখ।
মঙ্গলবার প্রথম দফার বৈঠকে প্রাধান্য পেয়েছে শিকড়ে ফেরার আবেগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, উপস্থিত শিল্পপতিরা যেহেতু মূলত রাজস্থান থেকে, তাই তাঁদের ঘরে ফেরার ডাক দিয়েছেন বসুন্ধরা। এ রাজ্যের ‘ধুলোকে যাঁরা সোনা করেছেন’, তাঁদের নিজেদের মাটি, রাজস্থানেও লগ্নির আহ্বান জানান তিনি। দেশ-বিদেশ থেকে লগ্নি টানতে এই আবেগে ভরসা রাখছে রাজস্থান।
তবে শুধুই আবেগ নয়। শিল্প তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্যের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরতে কর্পোরেট মহলের সামনে ‘পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন’ করেছেন বসুন্ধরার প্রতিনিধিদল। উচ্চশিক্ষামন্ত্রী কালিচরণ সরাফ, পূর্ত ও পরিবহণমন্ত্রী ইউনুস খান ছাড়াও এই দলে রয়েছেন ক্ষুদ্র শিল্প সচিব রাজীব স্বরূপ। লগ্নির গন্তব্য হিসেবে প্রথমেই আসে সহজে জমি মেলার কথা। যে-জমি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও স্পর্শকাতর। মুখ্যমন্ত্রী লগ্নি টানার দৌড়ে উৎপাদন শিল্পকেই পাখির চোখ করেছেন।
আবেগ এবং সহজলভ্য কাঁচামাল ও জমির দৌলতে এ দিন লগ্নি টেনেও নিয়েছে রাজস্থান। ইমামি গোষ্ঠী ৪২০০ কোটি টাকা ঢালার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৩০ লক্ষ টন সিমেন্ট কারখানা গড়তে ৩০০০ কোটি, সৌর বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ১২০০ কোটি।
লগ্নি টানার দৌড়ে প্রতিবেশি গুজরাতের দেখানো পথেই হাঁটছে রাজস্থান। প্রতিযোগিতার বাজারে এটাই স্বাভাবিক বলে দাবি অনেকের। বণিকসভা ফিকি-র পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান গৌরব স্বরূপ বলেন, ‘‘বিপণনের উপর নির্ভর করে লগ্নি টানতে প্রতিযোগিতায় নামছে সব রাজ্যই।’’ বৈঠকের পরে শ্রী সিমেন্টসের এইচ এম বাঙুর একই সুরে বলেন,‘‘রাজস্থানে প্রথম কারখানা গড়ি। ওখানে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল প্রচুর। পরে সেখানে আরও ৫টি কারখানা করেছি কারণ রাজস্থানে ব্যবসা করার অভিজ্ঞতা খুব ভাল।’’ সিআইআই-এর পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান এ কে বর্মারও দাবি, রাজস্থানের নীতি বিনিয়োগ-সহায়ক।