ফাঁকি ধরেই কিস্তিমাত জিএসটি আদায়ে

তেলঙ্গনা, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, গুজরাতের মতো রাজ্যকে এ বিষয়ে হারিয়ে দেওয়ার ঘটনা নিছক কাকতালীয় নয় বলেই দাবি করেছেন নবান্নের শীর্ষ কর্তারা। বরং কৃতিত্ব কর ফাঁকি ধরারই।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ১৯:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত আর্থিক বছরের শেষ মাসে জিএসটি আদায়ে সাফল্য পকেটে পুরেছে পশ্চিমবঙ্গ। তাকে স্বীকৃতি দিয়ে নবান্নে চিঠিও পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব হাসমুখ আঢিয়া। তেলঙ্গনা, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, গুজরাতের মতো রাজ্যকে এ বিষয়ে হারিয়ে দেওয়ার ঘটনা নিছক কাকতালীয় নয় বলেই দাবি করেছেন নবান্নের শীর্ষ কর্তারা। বরং কৃতিত্ব কর ফাঁকি ধরারই।

Advertisement

কর্তাদের একাংশের মতে, ‘‘আরও বেশি ব্যবসায়ীকে কর আদায়ে বাধ্য করে এবং কর ফাঁকি ঠেকিয়েই মার্চ পর্যন্ত হওয়া হিসেবে জিএসটি আদায় ১৭% বেড়েছে। ১৪ শতাংশের কম বৃদ্ধি হলে কেন্দ্র ক্ষতিপূরণ দেয়। বাড়তি আদায় হওয়ার ক্ষতিপূরণের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।’’

২০১৮-১৯ সালেও এই ধারা বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান অর্থ দফতরের কর্তারা। এক বাণিজ্য-কর কর্তার দাবি, জুলাইয়ে জিএসটি চালু হয়েছে। সে সময়ে প্রায় দেড় কোটি নতুন ব্যবসায়ী জিএসটি নেটওয়ার্কে নথিভুক্ত হন। ভ্যাটের জমানায় রাজ্যে আড়াই কোটি ব্যবসায়ী নথিভূক্ত হলেও ৬০-৬৫ শতাংশের বেশি কর দিতেন না। ২০১৭-১৮ সালের শেষে সেই করদাতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে নথিভুক্ত ব্যবসায়ীদের ৭৫ শতাংশের বেশি। যা অন্য রাজ্যের চেয়ে অনেকটাই বেশি। বাড়তি কর আদায় হওয়ার এটাই অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন দফতরের কর্তারা।

Advertisement

তবে করদাতাদের স্বেচ্ছা ঘোষণার উপর সব কিছু ছেড়ে দেওয়া হয়নি বলেও জানা গিয়েছে। অর্থ দফতর সূত্রের খবর, জুলাইয়ে জিএসটি চালু হলেও এই জানুয়ারিতে কেন্দ্র করদাতাদের তথ্য রাজ্যকে দেয়। সেই তথ্যপঞ্জি যাচাই করে কর ফাঁকি দিচ্ছেন এমন ব্যবসায়ীদের উপর নজরদারি বাড়ায় রাজ্য। এক কর্তার কথায়, ‘‘পরিষেবা ক্ষেত্রের একটি বড় সংস্থা যে পরিমাণ জিএসটি আদায় করছিল, তা জমা দিচ্ছিল না। ওই সংস্থার থেকেই প্রায় ৩০০ কোটি আদায় হয়েছে।’’ জোরকদমে নজরদারি শুরুর খবর ব্যবসায়ী মহলে ছড়িয়ে পড়তেই বছরের শেষ তিন মাসে কর দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে বলে দাবি কর্তাদের। এক কর্তা জানান, বহু ব্যবসায়ী ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট দাবি করে কর ফাঁকি দিচ্ছিলেন। সেই কৌশল ধরা পড়ার পরে কোষাগারে বাড়তি অর্থ এসেছে। ২০১৭-১৮ সালে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা কর আদায় হয়েছে। এর মধ্যে গত ন’মাসে জিএসটি থেকে এসেছে সাড়ে ১২ হাজার কোটি। একই সময়ে ভ্যাট আদায়ের চেয়ে ১৭% বেশি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন