দক্ষতার মাপকাঠিতে এগিয়ে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মূলধন বাড়াতে এ বার ন’টি ব্যাঙ্ককে বেছে নিল কেন্দ্র। এই ন’টি ব্যাঙ্কের হাতে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার মূলধন জোগাবে কেন্দ্র। যে ব্যাঙ্কের দক্ষতা বেশি, তার মূলধনের অঙ্কও বেশি হবে বলে শনিবার এক সরকারি বিবৃতিতে জানিয়েছে কেন্দ্র।
দক্ষতা স্থির করার জন্য যে-দু’টি মাপকাটি ধরা হয়েছে, সেগুলি হল: প্রথমত, সম্পদের সঠিক ব্যবহার এবং দ্বিতীয়ত, শেয়ারহোল্ডারদের তহবিল কাজে লাগানো। এ ক্ষেত্রে বাঁধাধরা নিয়ম থেকে সরে এল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। এত দিন যে-সব ব্যাঙ্ক দুর্বল আর্থিক অবস্থার জেরে অসুবিধায় পড়েছে, তারাই বাড়তি মূলধন পাওয়ার সবচেয়ে বড় দাবিদার হত। এ বার সবচেয়ে বেশি মূলধন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে দক্ষ ব্যাঙ্কগুলিই। শীর্ষে রয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, যার প্রাপ্য মূলধনের অঙ্ক ২৯৭০ কোটি টাকা। তার পরেই রয়েছে ব্যাঙ্ক অব বরোদা, ১২৬০ কোটি টাকা।
প্রথম মাপকাঠিটি স্থির করার জন্য গত তিন বছর যাবৎ সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সম্পদের সদ্ব্যবহার কতটা করেছে, বিভিন্ন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তার তার গড় বার করা হবে। ওই গড়ের চেয়ে যে-সব ব্যাঙ্ক এগিয়ে, অগ্রাধিকার পাবে তারাই। দ্বিতীয় মাপকাঠিতে শুধু গত অর্থবর্ষে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শেয়ারের উপর আয়ের গড় হিসাব করা হবে। ওই গড়ের চেয়ে এগিয়ে থাকলে মিলবে বাড়তি মূলধন। এই দু’টি একসঙ্গে প্রয়োগ করেই বাছা হয়েছে যোগ্য ব্যাঙ্ক, যাতে তারা আরও এগিয়ে যেতে পারে। ব্যাঙ্কিং শিল্পের সার্বিক সংস্কারের লক্ষ্যেই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দক্ষতা বাড়াতে কেন্দ্রের নয়া সরকার বিধি বদল করল বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
গত কেন্দ্রীয় বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে মূলধন জোগানোয় ১১,২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রথম দফায় তারই ৬৯৯০ কোটি টাকা শীঘ্রই বণ্টন করা হবে ব্যাঙ্কগুলিকে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই নির্দেশ জারি হয়ে গিয়েছে। বাকি ৪২১০ কোটি টাকা কোন কোন ব্যাঙ্ক পাবে, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র। পুরো টাকাই ৩১ মার্চের মধ্যে বণ্টন করা হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৮-র মধ্যে ব্যাঙ্কগুলির প্রয়োজন হবে ২.৪ লক্ষ কোটি টাকার ইকুইটি মূলধন।
প্রসঙ্গত, গত ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ইতিমধ্যেই ৫৮,৬০০ কোটি টাকার মূলধন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে জুগিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে তা ছিল আর্থিক দুর্বলতার ভিত্তিতে। মাপকাঠিকে ঘুরিয়ে দিয়ে এ বার বেসরকারি ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতিযোগিতার দৌড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে অনেক বেশি শক্তিশালী হিসেবেই দেখতে চায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। এই মূলধন জোগানো তারই প্রস্তুতি বলে মনে করছে শিল্পমহল।