পড়ল ইস্পাত, বিদ্যুৎ সংস্থার শেয়ার

খনি বণ্টন বাতিলের বিরূপ প্রভাব বাজারে

সুপ্রিম কোর্ট কয়লা ব্লক বণ্টন বাতিল করার বিরূপ প্রভাব বুধবার পড়ল শেয়ার বাজারে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে যে ২১৮টি সংস্থা কয়লা ব্লক পেয়েছিল, তার ২১৪টিই বুধবারের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। যদিও বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স আগের দিনের থেকে মাত্র ৩১ পয়েন্ট নীচে থিতু হয়, কিন্তু এক সময়ে তা মঙ্গলবারের তুলনায় ২১৫ পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:২৯
Share:

সুপ্রিম কোর্ট কয়লা ব্লক বণ্টন বাতিল করার বিরূপ প্রভাব বুধবার পড়ল শেয়ার বাজারে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে যে ২১৮টি সংস্থা কয়লা ব্লক পেয়েছিল, তার ২১৪টিই বুধবারের রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। যদিও বাজার বন্ধের সময়ে সেনসেক্স আগের দিনের থেকে মাত্র ৩১ পয়েন্ট নীচে থিতু হয়, কিন্তু এক সময়ে তা মঙ্গলবারের তুলনায় ২১৫ পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল। দিনের শেষে সেনসেক্স ছিল ২৬৭৪৪.৬৯ অঙ্কে।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষিত হওয়ার ঠিক পরেই এ দিন বেশ কিছু ইস্পাত এবং বিদ্যুৎ সংস্থার শেয়ার দর পড়ে যায়। যেমন, জিন্দল স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার, টাটা স্টিল, ভূষণ স্টিল ইত্যাদি। এই ধরনের ইস্পাত বা বিদ্যুৎ সংস্থাকে যে-সব ব্যাঙ্ক ঋণ দিয়েছিল, এ দিন আতঙ্কের জেরে পড়ে যায় সেগুলির দরও। আসলে, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরূপ প্রভাব সার্বিক ভাবে বিভিন্ন সংস্থার দরেই পড়েছে বলে বাজার সূত্রের খবর। যে- কারণে খনি বাতিল না-হলেও এ দিন পড়েছে সেলের শেয়ার দর। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নিদের্শ মতো যে-সব সংস্থার খনি বণ্টন বাতিল হয়নি, সেগুলির মধ্যে রয়েছে এনটিপিসি, সেল, রিলায়্যান্স পাওয়ার।

অবশ্য বিশ্ব বাজারেও বেশ কিছু সূচক এ দিন পড়েছে, যার প্রভাবও ভারতে আসে বলে শেয়ার বাজার সূত্রের খবর।

Advertisement

তবে এ দিন প্রথম দিকে বাজার পড়লেও পরের দিকে তা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। তার প্রধান কারণ, আজ বৃহস্পতিবার আগাম লেনদেনের শেয়ার হস্তান্তর বা সেট্লমেন্টের দিন। যে-সব লগ্নিকারী হাতে শেয়ার না-থাকা সত্ত্বেও তা বেচে রেখেছেন, তাঁরা হস্তান্তরের জন্য প্রস্তুত হতে লেনদেনের শেষের দিকে শেয়ার কিনতে শুরু করেন। যার জেরে দ্রুত উপরে উঠতে থাকে সূচকের পারা।

তবে ভারতে বাজার পড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে কাজ করেছে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রি। ওই সব সংস্থা দীর্ঘ দিন ধরে টানা লগ্নি করে গিয়েছে। এ বার তারা মুনাফার টাকা তুলতে শেয়ার বিক্রি শুরু করেছে বলে বাজার সূত্রের খবর। এই সব সংস্থা বিদেশে বিভিন্ন লগ্নিকারীর কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ভারতের বাজারে বিনিয়োগ করে। সাধারণত ওই সব বিদেশি লগ্নিকারী বছরের শেষে টাকা ফেরত চান। বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি ভারতে শেয়ার বিক্রি করেই সেই টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করে থাকে। এর ফলে সাধারণত প্রতি বছরেই ভারতে বছরের শেষের দিকে এই সব সংস্থার শেয়ার বিক্রির বহর বেড়ে যায়। যার নিট ফল বাজারের পতন। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবারই ওই সব সংস্থা ভারতে ১১৮৫.১৭ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।

বাজারের এই পতন অবশ্য বেশি দিন স্থায়ী হবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা মনে করেন, এটা সাময়িক। এর কারণ, ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার এখনও বিশ্বের অধিকাংশ দেশের থেকে বেশি। তাই ভারতের শেয়ার বাজারে লগ্নি করা ছাড়া এই মুহূর্তে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির কাছে অন্য কোনও বিকল্প নেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন