ঘুরে দাঁড়াতে কেন্দ্রের কাছে পরিকল্পনা পেশ স্পাইসজেটের

ইঙ্গিত ছিল গতকালই। সেই অনুযায়ী, শুক্রবার কেন্দ্রের কাছে পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা পেশ করল স্পাইসজেট। এ দিন নয়াদিল্লিতে বিমান পরিবহণ সচিব ভি সোমসুন্দরনের সঙ্গে দেখা করেন স্পাইসজেটের চিফ অপারেটিং অফিসার সঞ্জীব কপূর। সঙ্গে ছিলেন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন কর্ণধার অজয় সিংহও। বর্তমানে মার্কিন আর্থিক বহুজাতিক জে পি মর্গ্যান চেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ধুঁকতে থাকা স্পাইসজেটকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন যিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০১
Share:

ইঙ্গিত ছিল গতকালই। সেই অনুযায়ী, শুক্রবার কেন্দ্রের কাছে পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা পেশ করল স্পাইসজেট।

Advertisement

এ দিন নয়াদিল্লিতে বিমান পরিবহণ সচিব ভি সোমসুন্দরনের সঙ্গে দেখা করেন স্পাইসজেটের চিফ অপারেটিং অফিসার সঞ্জীব কপূর। সঙ্গে ছিলেন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাক্তন কর্ণধার অজয় সিংহও। বর্তমানে মার্কিন আর্থিক বহুজাতিক জে পি মর্গ্যান চেজের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ধুঁকতে থাকা স্পাইসজেটকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন যিনি।

বেশ কিছু দিন ধরেই খবর যে, নগদের অভাব আর দেনার দায়ে ধুঁকতে থাকা স্পাইসজেটকে ফের চাঙ্গা করতে প্রথমে জে পি মর্গ্যান চেজের একটি ফান্ডের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ২০ কোটি ডলার (অন্তত ১,২০০ কোটি টাকা) লগ্নি করবেন সিংহ। ওই টাকায় সংস্থার বর্তমান মালিক কলানিধি মারানের সান গোষ্ঠীর হাত থেকে সিংহভাগ অংশীদারি কিনে নেবেন তাঁরা। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, এ দিনের পুনরুজ্জীবন প্রকল্পও পেশ করা হয়েছে ওই প্রস্তাবের ভিত্তিতে।

Advertisement

শুধু তা-ই নয়। সরকার, লগ্নিকারী-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকেই কিছুটা স্বস্তি জুগিয়ে এ দিন বৈঠকের পর কপূর জানান, আলোচনা সফল। অজয় সিংহ-সহ স্পাইসজেটের বেশ কয়েক জন শুভানুধ্যায়ী রয়েছেন। বর্তমান সঙ্কটের জেরে স্পাইস যাতে ডানা গোটাতে বাধ্য না হয়, সে জন্য ইতিমধ্যেই ১৭ কোটি টাকা ঢেলেছেন তাঁদের অনেকে। তা দিয়ে জ্বালানির যাবতীয় বকেয়া মেটানো হয়েছে। দিয়ে দেওয়া হয়েছে নভেম্বর থেকে বাকি পড়া কর্মীদের বেতনও। এই মুহূর্তে দিনে সংস্থা ২৩০টি উড়ান চালাচ্ছে বলেও কপূরের দাবি।

এক মাসের মধ্যেই মারানের সান গোষ্ঠীর কাছ থেকে সংস্থার সিংহভাগ মালিকানা কিনতে চান সিংহ। বাজার সূত্রে খবর, স্পাইসজেটে টাকা ঢালার জন্য প্রাইভেট ইকুইটি সংস্থা ইন্ডিগো পার্টনার্স এবং টিপিজি ক্যাপিটালের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি।

তা ছাড়া, স্পাইসজেটের কিংফিশার হওয়া ঠেকাতে তাদের দিকে ইতিমধ্যেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে কেন্দ্র। যথাসম্ভব সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দয়েছেন বিমান পরিবহণ মন্ত্রী অশোক গজপতি রাজু। তবে সরাসরি টাকা ঢেলে সংস্থাকে সাহায্য করার কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহে ফের কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন স্পাইসজেট কর্তারা। সেখানে পুনরুজ্জীবন পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত কথা হতে পারে। উঠতে পারে সংস্থা পরিচালনার বিষয়টিও।

অনেকে মনে করছেন, স্পাইসজেটের মালিকানা হাতে নিতে সিংহের তাড়াহুড়োর কারণ সংস্থা নিয়ে সান গোষ্ঠীর বর্তমান অবস্থান। স্পাইসজেটকে চাঙ্গা করতে নতুন করে টাকা ঢালা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে সান। অথচ ২০১০ সালে সিংহের কাছ থেকে বিমান পরিষেবা সংস্থাটি তাদের হাতে যাওয়ার পরে লোকসানের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ২,৪০০ কোটি টাকা। পাওনাদারদের কাছে বকেয়া পৌঁছেছিল ১,২৩০ কোটি টাকায়।

স্পাইসজেটের এই বেহাল দশার জন্য পরিকল্পনার অভাবকে দায়ী করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। পরিকল্পনা ছাড়া বিমান কেনা এবং সেই খাতে খরচ সামলাতে না-পারার জন্যই লোকসান হয়েছে বলে তাঁদের মত। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছিল যে, তার তুলনা দিতে গিয়ে খোদ রাজুর মুখেও উঠে এসেছিল কিংফিশারের নাম। ক্রমাগত ধুঁকতে-ধুঁকতে শেষ পর্যন্ত ২০১২ সালের অক্টোবরে উড়ান বন্ধ হয়ে যায় যে সংস্থার।

কপূর গোড়াতেই জানিয়েছিলেন, স্পাইসের এই বেহাল দশা থেকে উদ্ধারের একমাত্র উপায় বাইরে থেকে আসা বড় বিনিয়োগ। মুখ থুবড়ে পড়ার আগে এই একই কথা বলেছিল কিংফিশারও। কিন্তু তা কাজে পরিণত করতে পারেনি। এ ক্ষেত্রে অবশ্য স্পাইসের ত্রাতার ভূমিকায় এগিয়ে এসেছেন সিংহ। তবে তাঁর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত স্পাইস সত্যিই ঘুরে দাঁড়াতে পারে কি না, সে দিকেই এখন নজর সকলের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন