আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত ইউরোপে বেশ কিছু দিন ধরেই শিবরাত্রির সলতে হয়ে জ্বলছে জার্মানি। ওই মহাদেশের বৃহত্তম অর্থনীতি। কিছুটা সঙ্গত জুগিয়েছে ফ্রান্স। কিন্তু চিনে বৃদ্ধি ঝিমিয়ে পড়ার উদ্বেগ এ বার চিড় ধরাল সেই জার্মান আস্থাতেও।
জার্মানিতে ব্যবসা ও অর্থনীতির হাল কেমন ও আগামী ক’মাসে কেমন থাকবে, তা নিয়ে সমীক্ষা করেছিল ওই দেশের অর্থনীতি সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা ইফো ইনস্টিটিউট। সেই অনুযায়ী, সেখানে ব্যবসা ও অর্থনীতির হাল সম্পর্কে জার্মান সংস্থাগুলির আস্থা জানুয়ারিতে নেমে এসেছে গত ১১ মাসের মধ্যে সব থেকে নীচে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান হান্স ওয়ের্নার সিনের মতে, জার্মান অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আস্থা সামান্য টোল খেয়েছে। কিন্তু তারপরেও তা রয়েছে ভাল জায়গায়। সমস্যা বেশি বরং আগামী দিন নিয়ে। কারণ, পরের ছ’মাসে অবস্থা কী দাঁড়াবে, তা খুঁজে দেখতে তৈরি আস্থা-সূচকই নেমেছে হুড়মুড়িয়ে। যদিও অনেকের মতে, জার্মান অর্থনীতির ভিত যথেষ্ট মজবুত। ফলে শুধু সমীক্ষার ভিত্তিতে তা নিয়ে অযথা উদ্বিগ্ন না-হওয়াই ভাল।
তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, উদ্বেগ ও আশঙ্কার ঠিক ছবিই দেখিয়েছে সমীক্ষা। এই মুহূর্তে অর্থনীতির হাল মন্দ নয়। নিয়োগের চাহিদা আছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে। চড়া নয় সুদও। তাই অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা নিয়ে জার্মান সংস্থাগুলির আস্থা সে ভাবে ধাক্কা খায়নি। কিন্তু সম্প্রতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে শিল্প বৃদ্ধির হার। রফতানি-বাজারে চাহিদা বাড়ার লক্ষণ নেই। তার উপর উদ্বেগের ছায়া ফেলছে ঝিমিয়ে পড়া চিনা অর্থনীতি। তাই আগামী ছ’মাসের পরিস্থিতি নিয়ে অনিশ্চয়তায় জার্মান শিল্পমহল।
দর নামা ইউয়ান কিংবা টালমাটাল শেয়ার বাজারে ভরসা না-রেখে লগ্নির জন্য তুলে রাখা মোটা অর্থ চিন থেকে পাড়ি দিচ্ছে অন্য দেশে। যা চলতে থাকলে সে দেশে বৃদ্ধি আরও মুষড়ে পড়ার সম্ভাবনা। অনেকের মতে, ফলে এই মুহূর্তে পোক্ত দেখানো জার্মান অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে সেখানকার শিল্পমহলের আস্থা টাল খেয়েছে।