চলতি বছর হয়তো তেমন ভাল যাবে না স্মার্ট ফোনের

চলতি বছরে কঠিন সময়ের মুখে পড়তে চলেছে ফোন নির্মাতা সংস্থাগুলি। সম্প্রতি এক রিপোর্টে তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সংস্থা গার্টনার জানিয়েছে, এই সময়ে সংখ্যার বিচারে হয়তো অনেক বেশি স্মার্ট ফোন বিক্রি হবে, কিন্তু তার বেশির ভাগটাই হবে কম দামি। উল্টো দিকে কমবে দামি বা প্রিমিয়াম স্মার্ট ফোনের বিক্রি। আর এর জেরে টান পড়বে সংস্থাগুলির আয়ে। তাদের দাবি, এই কারণে মুনাফা বাড়াতে উদ্ভাবনের উপর আরও বেশি করে জোর দিতে হবে বিভিন্ন স্মার্ট ফোন নির্মাতাকে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং ও ফ্রাঙ্কফুর্ট শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৪ ০১:৫২
Share:

চলতি বছরে কঠিন সময়ের মুখে পড়তে চলেছে ফোন নির্মাতা সংস্থাগুলি। সম্প্রতি এক রিপোর্টে তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সংস্থা গার্টনার জানিয়েছে, এই সময়ে সংখ্যার বিচারে হয়তো অনেক বেশি স্মার্ট ফোন বিক্রি হবে, কিন্তু তার বেশির ভাগটাই হবে কম দামি। উল্টো দিকে কমবে দামি বা প্রিমিয়াম স্মার্ট ফোনের বিক্রি। আর এর জেরে টান পড়বে সংস্থাগুলির আয়ে। তাদের দাবি, এই কারণে মুনাফা বাড়াতে উদ্ভাবনের উপর আরও বেশি করে জোর দিতে হবে বিভিন্ন স্মার্ট ফোন নির্মাতাকে।

Advertisement

তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ অংশুল গুপ্তের মতে, ইউরোপ এবং আমেরিকার বাজারের অধিকাংশটাই দখলে নেওয়ার পর এ বার এই সংস্থাগুলির চোখ উন্নয়নশীল দেশের দিকে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন চিনা মোবাইল নির্মাতার সঙ্গে পাল্লা দিতে তাদের এক মাত্র বাজি তুলনায় কম দামি স্মার্ট ফোন। স্যামসাং যেমন ইতিমধ্যেই কম দামি স্মার্ট ফোন এনেছে। অ্যাপলও তুলনায় কম দামে ‘৫সি’ আই ফোন বাজারে ছেড়েছে। আর সেখানেই অশনি সঙ্কেত দেখছে গার্টনার। এই দেশগুলিতে বেশি স্মার্ট ফোন বিক্রি হলেও, তাতে বেশি দামি ফোন কম থাকায় সংস্থাগুলির আয় অনেকটাই কমবে বলে মনে করছে তারা।

গত বছরই এই প্রথম সাধারণ ফোনকে বিক্রিতে ছাপিয়ে গিয়েছে স্মার্ট ফোন। পরিসংখ্যানে প্রকাশ, ওই সময়ে বিক্রি হওয়া মোট ফোনের মধ্যে ৫৩.৬ শতাংশই নয়া প্রযুক্তির স্মার্ট ফোন। ২০১৪ সালেও সংখ্যার বিচারে তা ১২০-১৩০ কোটিতে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু তার মধ্যে অ্যাপল বা স্যামসাং-এর মতো সংস্থাগুলির দামি ফোন যে তুলনায় কম থাকবে, তা গত বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই সময়ে এই দুই সংস্থারই বাজার দখল কমেছে। বরং বেড়েছে হুয়েই-এর মতো চিনা সংস্থাগুলির বাজার। কম দামে স্মার্ট ফোন এনে ইতিমধ্যেই তারা এই খাতে বিক্রি বাড়িয়েছে ৮৫%। যা কড়া প্রতিযোগিতার মুখে ফেলেছে অন্য সংস্থাগুলিকে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এর ফলে অ্যাপলের থেকেও বেশি সমস্যায় পড়বে স্যামসাং। কারণ অ্যাপলের তুলনায় তাদের কম দামি স্মার্ট ফোনের সংখ্যা অনেক বেশি। ফলে বাজার হারানোর ভয়ও বেশি।

Advertisement

এ দিকে, স্থানীয় চিনা সংস্থাগুলি প্রতিযোগিতায় এগোলেও, সেখানেই গত ত্রৈমাসিকে স্মার্ট ফোনের বিক্রি ৪.৩% কমেছে বলে ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশন (আইডিসি)-র পরিসংখানে প্রকাশ। দু’বছরেরও বেশি সময়ে এই প্রথম তা কমলো। আইডিসি-র মতে, স্মার্ট ফোনের প্রসারের সময় ক্রেতাদের চাহিদাও অনেক বেশি ছিল। কিন্তু ক্রমশ সেই সংখ্যাটা কমে আসছে। তবে ক্রেতাদের উৎসাহ বাড়াতে কিছুটা সাহায্য করতে পারে সম্প্রতি চায়না মোবাইলের সঙ্গে হওয়া অ্যাপলের গাঁটছড়া। পাশাপাশি, ওই দেশ জুড়ে ফোর-জি প্রযুক্তি চালিত মোবাইল পরিষেবা পুরোদস্তুর চালু হয়ে গেলে, উন্নত স্মার্ট ফোন কিনতে ক্রেতারা বিপণিতে ফিরবেন বলে মনে করছে আইডিসি।

এ সবের জেরে আগামী দিনে বিশ্ব জুড়ে স্মার্ট ফোনের বাজারে প্রতিযোগিতা যে আরও বাড়বে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যান্য দেশে ব্যবসা ছড়ানোর জন্য শুধুমাত্র নতুন ফোন এনে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা নয়, বরং এ বছর পুরনো ক্রেতাকে ফের বিপণিতে টেনে আনাই লক্ষ্য হবে সব সংস্থার। আর এই অবস্থায় ফোনের জগতে অনেক নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তিও দেখা যাবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন