ফের বড় মাপের পতন হল টাকার দামে। সোমবার ডলারের সাপেক্ষে টাকা এক ধাক্কায় পড়ে গেল ৩০ পয়সা। ফলে এ দিন বিদেশি মুদ্রার বাজার বন্ধের সময় প্রতি ডলারের দাম এসে দাঁড়ায় ৬৭.৯৪ টাকায়।
সপ্তাহের প্রথম দিন তীব্র অনিশ্চয়তার প্রমাণ দিয়েছে শেয়ার বাজারও। গত সপ্তাহের শেষ দুই দিন টানা ওঠার পর এ দিন সেনসেক্স পড়ে গিয়েছে ৩২৯.৫৫ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময় সূচক এসে থিতু হয় ২৪,২৮৭.৪২ অঙ্কে।
এর আগের দু’দিনে সূচকটি উঠেছিল প্রায় ৩৯৪ পয়েন্ট। সোমবারের পতনের ফলে যার বেশির ভাগটাই মুছে গেল। শেয়ার বাজার মহলের দাবি, এক দিকে মুনাফার টাকা তুলে নেওয়ার জন্য শেয়ার বিক্রির হিড়িক এবং অন্য দিকে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে সংশয়, এই দুইয়ের জেরেই পড়েছে সূচক।
বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য বলছেন, অনিশ্চিত বাজারে এটাই স্বাভাবিক। শেয়ার বাজারে যখন স্থিতিশীলতার অভাব থাকে, তখন লগ্নিকারীরা বেশি দিন শেয়ার হাতে ধরে রাখতে ভরসা পান না। এই সময়ে দীর্ঘ মেয়াদে লগ্নির জন্য শেয়ার কেনার লোক প্রায় পাওয়াই যায় না। বরং লগ্নি করার পর সামান্য কিছু মুনাফা করার মতো অবস্থায় এলেই শেয়ার বিক্রি করার প্রবণতা তাঁদের মধ্যে বাড়ে। আর এই কারণেই অনিশ্চিত বাজারে সূচক দ্রুত ওঠানামা করে থাকে।
এ দিনও সেটাই ঘটেছে বলে বাজার সূত্রের খবর। যদিও লেনদেনের শুরুতে সূচক উঠছিল। তার পর বেশ কিছুটা সময় ধরে মোটামুটি একই জায়গায় তাকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। কিন্তু লেনদেনের শেষের দিকে মুনাফার টাকা তুলে নেওয়ার জন্য শেয়ার বিক্রির বহর বেড়ে যায় লগ্নিকারীদের মধ্যে। ফলে দ্রুত নেমে আসে সূচকের পারা। লেনদেনের পুরো সময়টা জুড়ে সেনসেক্স ওঠানামা করেছে ৪৪০.৫৭ পয়েন্ট।
সোমবার বাজার বন্ধের পরই চলতি আর্থিক বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকের আর্থিক বৃদ্ধির হার প্রকাশিত হয়েছে। সরকারি ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আগের অর্থাৎ দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের থেকে তৃতীয়টিতে বৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৭.৩ শতাংশে। যদিও এই পরিসংখ্যান বেরিয়েছে বাজার বন্ধের পর, কিন্তু তার হার নিয়ে দিনভর লগ্নিকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা গিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তচাপ বাড়ার সেই প্রতিফলন এ়ড়াতে পারেনি সূচক। তবে উদ্বেগ যে মিথ্যে নয় সেটাও শেষ পর্যন্ত প্রমাণ হয়েছে। ফলে শেয়ার বাজার মহলের আশঙ্কা, এ বার বাস্তবের সেই ছাপ বাজারকে কতটা ধাক্কা দেয়, সেটা বোঝা যাবে মঙ্গলবার।