বৈঠকে হোগান, গয়াল ও বল (বাঁ দিক থেকে)। ছবি: পিটিআই
তিন বছরের মধ্যে ফের মুনাফার মুখ দেখতে চায় গত ছ’সাত বছর লাগাতার লোকসানে চলা জেট এয়ারওয়েজ। এ জন্য ঋণ ঢেলে সাজতে ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছে তারা। খরচ ছাঁটতে ভাবনা-চিন্তা করছে বিমান সংখ্যা কমানোর। জোর দিচ্ছে আন্তর্জাতিক উড়ানের সংখ্যা আরও বাড়ানোর উপরেও। সব মিলিয়ে, ২০১৬-’১৭ আর্থিক বছরে লাভের মুখ দেখাকেই এখন পাখির চোখ করছে নরেশ গয়ালের সংস্থা। উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৬-’০৭ সালে শেষ বার কোনও অর্থবর্ষে মুনাফা করেছিল তারা।
দীর্ঘ আইনি জটিলতার পরে সম্প্রতি জেটের ২৪% অংশীদারি কেনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে আবু ধাবি-র বিমান পরিবহণ সংস্থা এতিহাদ। তারপর আর্থিক ফল প্রকাশের জন্য বুধবারই প্রথম যৌথ ভাবে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হয়েছিলেন দুই সংস্থার কর্তারা জেটের কর্ণধার নরেশ গয়াল এবং এতিহাদের প্রেসিডেন্ট ও সিইও জেমস হোগান। ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছরেও ৪,১৩০ কোটি টাকা লোকসান করেছে জেট। কিন্তু তা সামলে আগামী তিন বছরে জেটকে মুনাফামুখী করতে কী ধরনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, এ দিন সে কথাই তুলে ধরেছেন তাঁরা।
যেমন, গয়াল বলেন, “ব্যালান্স শিট ঢেলে সাজছি আমরা। কথা বলছি ব্যাঙ্কের সঙ্গে। মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঋণদাতাদের টাকাও।” একই সঙ্গে তিনি জানান, “বাড়তি বিমান বিক্রি করা হতে পারে। ফেরানো হতে পারে লিজ নেওয়া বিমানও। সব থেকে কম খরচে সর্বোচ্চ মানের পরিষেবা কী ভাবে দেওয়া সম্ভব, তা-ই খুঁজে বার করার চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা।”
নতুন সিইও এবং সিওও হিসেবে যথাক্রমে ক্র্যামার বল এবং সুবোধ কার্নিকের নাম ঘোষণা করেছে জেট। এ দিন সেই ক্র্যামারেরই ইঙ্গিত, এখন থেকে আন্তর্জাতিক উড়ানে আগের থেকে অনেক বেশি জোর দেবে জেট।
ভারতের আকাশ দখলে গলাকাটা প্রতিযোগিতা চলছে বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলির মধ্যে। এক দিকে, বাড়তে থাকা খরচ। অন্য দিকে, যাত্রী টানতে কম দামের টিকিট বিক্রির বাধ্যবাধকতা। মূলত এই সাঁড়াশি চাপে গত অর্থবর্ষে এ দেশের বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলি মোট ৭,৮০০ কোটি টাকা লোকসান করেছে বলে অনুমান এক উপদেষ্টা সংস্থার। ফলে এই পরিস্থিতিতে মুনাফার মুখ দেখতে আরও বেশি সংখ্যায় আন্তর্জাতিক উড়ান চালুর উপর জোর দিচ্ছে জেট।
সংস্থার দাবি, ইউরোপ, চিন, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন শহরে নতুন উড়ান শীঘ্রই চালু করবে তারা। পরিষেবা বাড়াবে ইতিমধ্যেই চালু রুটগুলিতেও। জেট জানিয়েছে, তাদের আন্তর্জাতিক পরিষেবা এখনই লাভজনক। কিন্তু তা মোট ব্যবসার ৪৫%। ২০১৬ সালের মধ্যে ব্যবসার অন্তত ৬৩% আন্তর্জাতিক উড়ান থেকে আনতে চায় তারা। ঘুরে দাঁড়াতে এই পরিকল্পনা ঘোষণার দরুন এ দিন জেটের শেয়ার দরও বেড়েছে ৩.৫%।